নওগাঁর মান্দায় নদী দখল করে অর্ধশতাধিক মৎস্য ঘের, প্রশাসন নিরব

Loading

আপেল মাহমুদ,নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মান্দায় অবৈধভাবে আত্রাই নদী দখল করে অর্ধশতাধিক মৎস্য ঘের তৈরি করা হয়েছে। মৎস্য ঘেরের নামে গাছের কাটা ডালপালা নামিয়ে ও বাঁশের বেড়া দিয়ে নদীতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে কিছু অসাধু ব্যক্তি। সম্প্রতি উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় এসব অবৈধ ঘের উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। আইন-শৃঙ্খলা সভার পর এসব ঘের থেকে গাছের ডালপালা ও বাঁশের বেড়া সরিয়ে নেয়ার জন্য নদী এলাকায় মাইকিং করে উপজেলা মৎস্য দপ্তর। এরপরও অবৈধ ঘেরগুলো সরিয়ে নেয়া হয়নি। গত কয়েকদিন ধরে এসব ঘেরে জাল নামিয়ে মাছ শিকার করেছেন দখলদাররা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে মাছ শিকারে নেমেছেন দখলদাররা। যেসব ঘেরে জাল নামানো হয়েছে সেগুলোতে নিয়মিত যাতায়াত করছেন মৎস্য দপ্তরের লোকজন। মৎস্য দপ্তরের এহেন কর্মকান্ডে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, আত্রাই নদীর উজান অংশ বানডুবি থেকে ভাটি অংশ মিঠাপুর পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ কিলোমিটার এলাকায় অর্ধশতাধিক অবৈধ মৎস্য ঘের তৈরি করা হয়েছে। কিছু অসাধু ব্যক্তি গাছের কাটা ডালপালা নামিয়ে ও বাঁশের বেড়া দিয়ে নদীর প্রায় পুরো অংশ ঘিরে ফেলেছে। এসব ঘের দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে নদীতে। ঘেরগুলোতে কচুরিপানা দিয়ে মাছের অভয়ারন্য তৈরি করেছে ওইসকল ব্যক্তি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, এসব ঘের তৈরির কারণে নদীতে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে মাছ শিকার করতে পারছেন না। ঘেরের আশপাশের এলাকায় জাল ফেলতে বাধা দেয়া হয়। অনেক সময় তাদের হাতে লাঞ্ছিতের শিকার হয়েছেন অনেক মৎস্যজীবী। কিন্তু দখলদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় কোন প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না তারা।
সরজমিনে দেখা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে এসব ঘেরে জাল নামিয়ে মাছ শিকার করছেন অবৈধ দখলদাররা। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব দখলদারদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এসব দখলদাররা জানান, মৎস্য অফিসের অনুমতি নিয়েই ঘেরে জাল নামানো হয়েছে। কিন্তু কিভাবে অনুমতি পেলেন তা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তারা।

উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা সভার একাধিক সদস্য জানান, নদী দখলমুক্ত করতে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান আইন-শৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করেন। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নদী দখলমুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণসহ যাবতীয় ব্যবস্থা নিতে মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়। এরপরও মৎস্য কর্মকর্তা কেন এবিষয়ে পদক্ষেপ নেননি এনিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইন-শৃঙ্খলা সভার এসব সদস্যরা।

এবিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান ম্যানেজ হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, যেসব ঘেরে জাল নামানো হয়েছে সেগুলোতে গিয়ে মাছ মারতে নিষেধ করা হচ্ছে। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে পাশ কাটিয়ে যান তিনি। #