সফররত ইউরোপীয় পার্লামেন্টারি প্রতিনিধিদল বলেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে সক্ষম বাংলাদেশ সরকার। এ কারণে এ নির্বাচনে ইইউ পার্লামেন্ট কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না।
গতকাল রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের রক্ষণশীল সদস্য রুপার্ট ম্যাথুস বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে যতটুকু জেনেছি তাতে আমি আস্থাশীল, এই দেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।’ তিনি বলেন, আসন্ন এই নির্বাচনে ইইউ পার্লামেন্ট কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না কারণ, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট বিশ্বাস করে বাংলাদেশ নিজের মতো করেই নির্বাচনী পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভালোভাবেই প্রস্তুত।
বাজেট বরাদ্দ না থাকায় ইইউ পার্লামেন্ট পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে না, এ ধারণা নাকচ করে ম্যাথুস বলেন, ইইউ পার্লামেন্ট পর্যবেক্ষক পাঠাতে চাইলে এ বিষয়ে তারা বাজেট বরাদ্দ দিত। তিনি বলেন, ‘ইইউ পার্লামেন্ট মনে করে বাংলাদেশ নিজস্ব আইনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সক্ষম। তাই আমরা পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রয়োজন মনে করছি না।’
বিশ্বব্যাপী নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন ইইউ পার্লামেন্ট ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের কথা উল্লেখ করে ম্যাথুস বলেন, তাঁদের মতামত অনুযায়ী বাংলাদেশ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে। তিনি বলেন, তাঁর দল সরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, সাধারণ জনগণসহ বাংলাদেশের অনেক লোকের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।
ম্যাথুস আরও বলেন, ‘নির্বাচন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, সামাজিক, নারীর ক্ষমতায়ন, সংখ্যালঘুসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে আমরা এখানে এসেছি।’
পর্তুগালের পার্লামেন্টের সদস্য জোয়াও পেদ্রো গুইমারেস বলেন, তাঁর দেশ ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু বাংলাদেশ সম্পর্কে তাঁদের কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। সফরটি বাংলাদেশ সম্পর্কে এই ভুল ভেঙে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি এ দেশ সত্যিই চমৎকার।’ বিশ্বের কাছে সত্যিকারের বাংলাদেশের চিত্র তুলে ধরার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘শিল্পক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি ভালো উদাহরণ। বাংলাদেশ এমন একটি চমৎকার দেশ যেখানে মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয় এবং শিল্প ও এর শ্রমিকদের অবস্থান বিশ্বমানের।’
প্রতিনিধিদলে আরও আছেন ইতালির ইইউ পার্লামেন্ট সদস্য ফ্লুভিও মার্টুসিয়েলো এবং আলবার্তে সিরিও, পর্তুগিজ পার্লামেন্টের সদস্য সান্দ্রা ক্রিস্টিনা ডি সিকিওরোস পিরিয়ারা এবং যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিটির সদস্য মাদি শর্মা। তাঁরা বলেন, আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য রোলমডেলে পরিণত হয়েছে। একটি জনবহুল দেশ কীভাবে গণতান্ত্রিক চেতনা অক্ষুণ্ন রেখে স্বল্প সময়ে এগিয়ে যেতে পারে, বাংলাদেশ সত্যিই বিশ্বকে তা শিখিয়েছে।