মাগুরার শ্রীপুরে শহীদ মুকুল দিবস উপলক্ষে স্মরণ সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান ।

Loading

আশরাফ হোসেন পল্টু,মাগুরা প্রতিনিধি ঃ মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স মিলনায়তনে গতকাল মঙ্গলবার শহীদ মুকুল দিবস উপলক্ষে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭১ সালের ১০ অক্টোবর জেলার মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুরে রাজাকার ও পাকহানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে শ্রীপুর বাহিনীর সাহসী যোদ্ধা জহুরুল আলম মুকুল ঘটনাস্থলেই শহীদ হন। দিবসটি উপলক্ষে সকাল ১১ টায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আয়োজনে আলোচনা সভায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার ইকরাম আলী বিশ্বাাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইয়াছিন কবীর। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন শ্রীপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মসিয়ার রহমান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের সাবেক সাংগঠনিক কমান্ডার মিঞা শাহাদাত হোসেন, শহীদ মুকুলের সহযোদ্ধা শফিউদ্দিন জোয়ার্দার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মিয়া গোলাম মোস্তফা, মিয়া নজরুল ইসলাম রাজু, শহীদ পরিবারের সদস্য কামরুল আলম হাবলু, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের আহবায়ক খন্দকার আবু আনছার নাজাত আশা প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মিয়া নজরুল ইসলাম। শহীদ মুকুলের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তার সহযোদ্ধারা বলেন, ১৯৭১ সালের ৫ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা ‘শ্রীপুর বাহিনী’র অধিনায়ক আকবর হোসেন মিয়ার নির্দেশে বাহিনীর ৬০ থেকে ৬৫ জন সাহসী যোদ্ধারা মাগুরা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে বিনোদপুর হাইস্কুলে অবস্থানরত রাজাকার ও পাকহানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে আক্রমণের জন্য পায়ে হেটে রওনা দেন। ৭ অক্টোবর দিবাগত রাত ৩ টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার ক্যাম্পে আক্রমণ শুরু করেন। দু’পক্ষের মুহুর মুহুর গোলাগুলির এক পর্যায়ে জহুরুল আলম মুকুল ক্রলিং করে সামনের দিকে ২০ ফুটের মত অগ্রসর হতে না হতেই শত্রæপক্ষের গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি শহীদ হন। এ সময় শ্রীপুর বাহিনীর সদস্যরা পাকবাহিনীর আক্রমণের মুখে শহীদ মুকুলের মরদেহ আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

প্রতিবছর শ্রীপুর বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা এই দিনে শহীদ মুকুলের স্মরণে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে থাকেন। মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ মুকুলের স্মৃতি রক্ষার্থে তার নামে শ্রীপুর বটতলা থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত পাকা সড়কটি ‘শহীদ মুকুল সড়ক’ নামে নামকরণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের নিকট দাবি জানান।