বিএনপি সরকারের আমলেই ক্যাসিনো অপসংষ্কৃতির শুরু-তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

Loading

মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদ সিনিয়র তথ্য অফিসারঃতথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি সরকারের আমলেই ক্যাসিনো অপসংষ্কৃতির শুরু। আর সেসময় এ দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন।’
মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী সার্কিট হাউজে সমসাময়িক প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদক-অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছেন। এখানে কে কোন দলের, মতের বা পথের তা দেখা হচ্ছে না। অন্যদিকে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন শীর্ষপর্যায় থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি করা হয়েছে। হাওয়া ভবন তৈরি করে প্রত্যেক ব্যবসায় ১০ পার্সেন্ট কমিশন নেয়া হতো। তারেক রহমানের ১০ বছরের সাজা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এফবিআই এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে।’

ড. হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ‘এই ক্যাসিনোর অপসংষ্কৃতি বিএনপি’র আমলেই শুরু করা হয়েছে। তখন ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায় এগুলোর সঙ্গে যুক্ত ছিলো। তাই কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এখন কে কোন দলের বা মতের তা না দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সেখানে যাদেরই সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে তদন্ত সাপেক্ষে সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

‘এতোদিন ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি কেন’- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ব্যবস্থা যে আগেও নেয়া হয়নি তা নয়। ব্যবস্থা আগেও নেয়া হয়েছে। এখন একেবারে সাঁড়াশি অভিযান চলছে।’

তিনি বলেন, ‘কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে নিউজ এসেছে, জি কে শামিম প্রতিমাসে এক কোটি টাকা করে তারেক রহমানকে দিতেন। বিএনপির অনেক নেতাকেও তিনি পয়সা দিতেন। অর্থাৎ এই যে ক্যাসিনো কালচার যারা শুরু করেছিলেন, তারাও নিয়মিত মাসোহারা পেতেন। আমরা কে কোন দলের বা মতের সেটি না দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের ঘটনাকে অনিভিপ্রেত উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, ‘এই ঘটনার পেছনে ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা দরকার।’

সাংবাদিকদের অপর প্রশ্নের জবাবে ক্যাবল নেটওয়র্কে দেশি টিভি চ্যানেলগুলোকে সবার আগে তাদের সম্প্রচারের ক্রমানুসারে না রাখা হলে এবং ক্যাবল অপারেটররা বেআইনিভাবে নেটওয়র্কে বিজ্ঞাপন বা অনুষ্ঠান প্রচার করলে বিধিমোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা ও প্রয়োজনে আবার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে, জানান তথ্যমন্ত্রী।

এসময় উপস্থিত প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম বলেন, ‘চলমান এই অভিযান আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নয়। আওয়ামী লীগ স্বচ্ছ-পরিচ্ছন্ন একটি দল। আমরা সব সময় পরিচ্ছন্ন রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের প্রায় সবাই অনুপ্রবেশকারী। স্বস্তির বিষয় হচ্ছে এই দানবগুলোকে এখন ধরা গেছে।’

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ২০১৪ সাল থেকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকার বিষয়টি অবহিত করা হলে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বিষয়টি প্রথম শুনলাম। অন্য কোথাও এমন নিষেধাজ্ঞা আছে কি না আমি জানি না। আমি এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। নিশ্চয় কারণটা জানতে পারব। তখন এ বিষয়টির সমাধান হবে।’

এরপরই রাজশাহী শিল্পকলা একাডেমিতে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির ধারাবাহিক আয়োজন ‘তারুণ্যের ভাবনায় আওয়ামী লীগ’ উন্মুক্ত মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেন মন্ত্রী। তরুণ প্রজন্মের সাথে আওয়ামী লীগ নেতাদের সরাসরি মতবিনিময়ের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির সভাপতি এইচটি ইমাম।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটি সদস্য ব্যারস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, রাজশাহী সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ও আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মেরিনা জাহান তরুণদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুই শতাধিক তরুণ-তরুণী এতে অংশ নেয়।