নওগাঁর মান্দা উপজেলার বনকুড়া গ্রামের বেশ কিছু বাড়ির নলকূপ দিয়ে বের হচ্ছে গ্যাস। অনেকেই সেই গ্যাস দিয়ে রান্নার কাজও করছেন। এলাকাবাসীর ধারণা- এখানে গ্যাসের খনির সন্ধান মিলতে পারে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ আগে গ্রামের ময়েজ উদ্দিনের বাড়িতে স্থাপন করা নলকূপ মেরামত করতে গিয়ে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। তাতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। গ্যাসের সেই আগুনে রান্নার কাজও করে দেখেছেন তারা। আগুনের লেলিহান শিখা ও উত্তাপ দেখে তারা হতবাক। এ দৃশ্যটি এক নজর দেখতে প্রতিদিন সববয়সী নারী-পুরুষ ভিড় করছেন ময়েজ উদ্দিনের বাড়িতে। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মুশফিকুর রহমান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম হাবিবুল হাসান।
পর্যায়ক্রমে গ্রামের মোজাম্মেল হকের বাড়ি, আব্দুল জব্বারের বাড়িসহ অনেকের নলকূপে গ্যাসের অস্তিত্ব মিলেছে। গ্রামের অন্য নলকূপগুলোতেও পানির পরিবর্তে বের হচ্ছে গ্যাস। গ্যাস বের হওয়ায় কৃষি জমিতে সেচ দেয়ার জন্য স্থাপিত একটি গভীর নলকূপ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয়রা।
বাড়ির মালিক ময়েজ উদ্দিন প্রামাণিক বলেন, আমার বাড়ির ভেতরে স্থাপনকৃত নলকূপে কয়েকদিন ধরে পানি উঠছিল না। নলকূপটি মেরামতের জন্য মিস্ত্রি নিয়ে আসি। নলকূপের পাইপ তুলে জোড়া খোলার জন্য আগুন ধরিয়ে দিলে পাইপের মুখে আগুন ধরে যায়। আগুন দেখে মনে হচ্ছে সেখানে গ্যাসের সন্ধান মিলতে পারে।
বনকুড়া গ্রামের মোজাম্মেল হক, ইয়াকুব আলী, তয়েজ উদ্দিনসহ আরও অনেকেই বলেন, গ্রামের ময়েজ উদ্দিনের বাড়ির পর একে একে অনেকের বাড়ির নলকূপ দিয়ে গ্যাস বের হতে শুরু করেছে। পরীক্ষার মাধ্যমে অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীদের আশ্বস্থ করার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা।
মান্দা উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দাকার মুশফিকুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। দুর্ঘটনা এড়াতে নলকূপের পাইপের গ্যাসে আগুন না জ্বালানোর জন্য গ্রামের লোকজনকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর ও বাপেক্স কর্তৃপক্ষকে লিখিত আকারে জানানো হবে।
নওগাঁ সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, বিভিন্ন কারণে ভূ-অভ্যন্তরের অগভীরে কয়লা ও মিথেন গ্যাসের অস্তিত্ব থাকতে পারে। সঠিক পরীক্ষার মাধ্যমে মান্দার বনকুড়া গ্রামের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।