কুমিল্লায় নবজাতক শিশুকে হাসপাতালে রেখে বাবা-মা উধাও চিকিৎসা দায় ভার নেন জেলা পুলিশ সুপার

Loading

এ আর আহমেদ হোসাইন,কুমিল্লা উত্তর জেলা প্রতিনিধি :কুমিল্লায় টাকার অভাবে নবজাতক শিশুকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে উধাও বাবা ও মা। ওই শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম।

হাসপাতালের চিকিৎসা বাবদ টাকার অভাবে নবজাতক শিশুকে ফেলে বাবা- মা পালিয়ে গেছেন এমন সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি পুলিশ সুপার সৈয়দ নজরুল ইসলাম’র নজরে পড়লে রোববার বিকালে নগরীর ঝাউতলা এলাকায় অবস্থিত মা ও শিশু স্পেশালাইজড হাসপাতালে গিয়ে ওই নবজাতকের চিকিৎসার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন সফল পুলিশ সুপার সৈয়দ নজরুল ইসলাম।

রবিবার (১২ জুলাই) বিকালে নগরীর ঝাউতলা এলাকার ‘কুমিল্লা মা ও শিশু স্পেশালাইজড হাসপাতাল’ কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য জানান।

জানা যায়, গত ৫ জুলাই দুপুরে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জেলার আদর্শ সদর উপজেলার আড়াইওরা গ্রামের হতদরিদ্র মিজানুর রহমান ও শিরীন আক্তার দম্পতির ঘরে জমজ দুটি শিশুর জন্ম হয়। জন্মের পর-পরই একটি শিশু মারা যায় এবং অপর মেয়ে শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসক ওই শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এদিকে শিশুর মা কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

কুমিল্লা মা ও শিশু স্পেশালাইজড্ হাসপাতালের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক বদিউল আলম চৌধুরী বলেন, ‘শিশুর বাবা মিজানুর রহমান ৫ জুলাই রাতে শিশুটিকে এই হাসপাতালে এনে ভর্তি করান। এরপর থেকে তিনি উধাও হয়ে যান। হাসপাতালে ভর্তির সময় একটি মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়ে ছিল। কিন্তু ওই নম্বরটি কখনো বন্ধ থাকে, আবার কখনো খোলা থাকলেও কেউ রিসিভ করে না। পরে শিশুর বাবাকে খুঁজে না পেলেও মায়ের সন্ধান পেয়ে শিশুর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানাই।
পরে ৮ জুলাই শিশুর মা হাসপাতালে আসেন। কিন্তু শিশুটিকে নেওয়ার মতো আর্থিক অবস্থা নেই বলে তিনি জানান।
৭ দিনে এ শিশুর চিকিৎসার ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা।পরে জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নজরুল ইসলাম ওই শিশুর দায়িত্ব নিয়ে তিনি মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান জন্মের সময় শিশুটির ওজন ছিল সাড়ে ৭শ গ্রাম।
এদিকে খরচ বহনের খবর পেয়ে শিশুর বাবা-মা ও স্বজনরা রবিবার (১২ জুলাই) দুপুরে হাসপাতালে ছুটে আসেন। নবজাতকের বাবা মিজানুর রহমান জানান, ‘আমি গরীব মানুষ। তাই টাকা না থাকায় শিশুটিকে নেওয়ার জন্য হাসপাতালে আসিনি, লজ্জায় পালিয়ে ছিলাম। এসপি স্যার খরচের দায়িত্ব নেওয়ায় আমরা আনন্দিত। স্যারের জন্য আমরা দোয়া করি।’
জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত উদার হয়ে শিশুর চিকিৎসা দিয়েছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। মানুষ হিসেবে মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে আমি শিশুটির দায়িত্ব নিয়েছি।