জাবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ।

Loading

সাঈদ বিন ইসলাম জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদিপ্ত শাহীনের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায় সহযোগিতা, মাদক সেবন, ছিনতাই, রিক্সাচালক ও বহিরাগত মারধর সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ উঠেছে। একাধিক ব্যক্তিকে মারধর, মাদক ব্যবসায় সহযোগিতা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ সত্বেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সুদীপ্ত শাহিন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে ক্যাম্পাসে মাদক ব্যবসা ও ছিনতাই বেড়েই চলছে। প্রতিনিয়ত কেউ না কেউ ছিনতাই ও মারধরের শিকার হচ্ছেন। ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আটক করে মারধরের ভিডিও ধারণ করে ফেইসবুকে প্রচার করেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র হতে আরও জানা যায়, ‘প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন মাদকাসক্ত, তিনি নিয়মিত মাদক সেবন করেন ‘।

আশুলিয়া থানার পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর মনির বলেন, ‘সুদীপ্ত শাহীন মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায়ীদের ইন্ধন দেন, তিনি সরাসরি মাদক ব্যবসা না করলেও, মাদক ব্যবসায়ীদের চক্রকে নানা ভাবে সহযোগিতা করে থাকেন’।
উল্লেখ্য, প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র হতে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছবি চত্বর থেকে বহিরাগত স্বাধীন মিয়া ও চৌরঙ্গী এলাকা থেকে সুজন মিয়াকে বান্ধবী সহ আটক করে সুদিপ্ত শাহিন। আটক করে তাদেরকে মারধর করা হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে বান্ধবী সহ তাদের চারজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্ত্বরে একটি কক্ষে আটক করে রাখা হয়। এসময় স্বাধীন মিয়া ও সুজন মিয়াকে অমানবিক শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়।

এছাড়া আটককৃতদের কাছ থেকে অর্থ দবি করা হয়েছে বলেও জানা যায়। পরবর্তীতে সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে রাত দশটায় তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।

সুজন নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, ‘নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিরাপত্তার নামে অনৈতিক কাজ করে বেড়ায়। সুযোগ বুঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথেও সে দুর্ব্যবহার করে।’ এছাড়া বহিরাগত গাড়ি, ছিনতাইকারি আটক না করে সাধারণ বহিরাগতদের হয়রানী কার হয় বলেও অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী। আটককৃতদের নিরাপত্তা অফিসে না নিয়ে গিয়ে পরিবহন চত্ত¡রের কক্ষে আটকে রাখার কারণ জানতে চাইলে নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন কোনো সদুত্তর দিতে পারে নি।

ক্যাম্পাসে প্রেমিক যুগল আটক ও মারধরের বিষয়ে সুদীপ্ত শাহীন বলেন, ‘ক্যাম্পাসের পরিবেশ ভালো রাখতে বহিরাগতদের ধরা হয়। আর যারা বেয়দবি না করলে কাউকে মারধর করা হয় না।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আকলিমা আক্তার জানান, ‘ক্যাম্পাসে বহিরাগত আটক করা নিরাপত্তা কর্মকর্তার কাজ নয়। এছাড়া কাউকে মারধরের অনুমতি তাকে কেউ দেয়নি।’

নিরাপত্তা অফিস সূত্রে জানা যায়, ‘তাকে (সুদীপ্ত শাহীন) মারধর বন্ধ করতে বললে তখন ক্যাম্পাসে ছিনতাই বেড়ে যায়। আবার তাকে সক্রিয় হতে বললে দিলে ক্যাম্পাসে অরাজকতা করে বেড়ায়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ জানান, ‘সুদিপ্ত শাহিনের বিরুদ্ধে কর্মচারী মারধরের অভিযোগে একটি তদন্ত চলছে। শিগগিরই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন ক্যাম্পাসে ছিনতাই ও মাদকের সাথে জড়িত থাকার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাসে এক কর্মচারীর স্ত্রীর সাথে পরকীয়া, গার্ডকে মারধর, গভীর রাতে এক ছাত্রীকে হেনস্থা করা সহ তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে।