ঝালকাঠিতে অসহায় ঋষি ( মুচি) পরিবারকে ভিটা-মাটি ছাড়া করতে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

Loading

সৈয়দ রুবেল, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠি সদর উপজেলারবাউকাঠি গ্রামের এক অসহায় ঋষি ( মুচি) পরিবারকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

দীর্ঘ দিন ধরে লোলুপ দৃষ্টিতে পড়া এ পরিবারটির একটুরো মাথাগোঁজার ঠাঁই মাত্র ৩ কাঠা জমিই ইয়াবা উদ্ধারের কারণ বলে অসহায় সংখ্যালঘু পরিবারটির দাবী।

ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মো: খলিলুর রহমান জানান, ২০/০৭/২০২০ইং তারিখ সোমবার দুপুরের দিকে সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের বাউকাঠি গ্রামের রবীন দাসের বাড়িতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রবীন দাসের (৪৫) ঘরের সামনের বারান্দার আড়ায় লুকানো অবস্থায় ১১পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় রবীন দাসকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

রবীন দাসের ছোট বোন সবিতা দাস (৩০) দির্গদিন থেকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের বারান্দায় ফুটপাতে বসে মুচির কাজ করে ভাইয়ের সংসারের জীবিকায় সহায়তা করে আসছেন। তিনি ঝালকাঠি জেলার একমাত্র নারী মুচি।

সবিতা দাস বলেন, আমার ভাই পান-সিগারেটও খায় না। কসাইয়ের কাজ করে সংসার চালায়। আমাদের এই জমিটুকোই কাল। অনেক বছর ধরে এলাকার একটি কুচক্রি মহল এই জমি কিনতে চায়। তারা বিভিন্ন সময় আমাদের বাড়ি ঘর ছাড়তেও হুমকী দিয়ে আসছে। নানা অজুহাতে এলাকার কিছু লোক আমাদের ঘরেও প্রায়ই আসে। তাদের মানা করলে আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে।

ঝালকাঠির জীবন সংগ্রামী এ নারী মুচি সবিতা দাস আরও বলেন, আমরা যদি ইয়াবা বেচতাম তাহলে নারী হয়ে আমাকে ফুটপাতে অন্যের জুতা সেলাই করতে হত না। পৈত্রিক সম্পত্তির মোট ৫ কাঠা জমির ২ কাঠা খালে বিলিন হয়ে গেছে জানিয়ে সবিতা আরও বলেন, এখন তিন কাঠা জমিতে ভাঙা ঘরে আমারা থাকি। ঘরের সামনে আমাদের জমিতেই দোকান ঘর উঠিয়ে অন্যরা ভাড়া আদায় করে খায়। আমরা তাতেও বাঁধা দিতে সাহস পাইনা।

এখন শেষ সম্বল জমিটুকো গ্রাস করতে এই ইয়াবা উদ্ধারের নাটক সাজানো হয়েছে বলে দাবী করেন সবিতা।

এব্যপারে সদর থানার ওসি মো. খলিলুর রহমান বলেন, এ পরিবারটি যদি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে থাকে সেটা তদন্তে বেড়িয়ে আসবে। পুলিশ সঠিক তদন্ত করবে বলেও জানান ওসি।

প্রসঙ্গত, সদর উপজেলার এ অসহায় পরিবারটি বংশ পরমপরায় ওই গ্রামে বসবাস করে আসছে। বরীন দাসের বাবা প্রয়াত সতিষ দাস পেশায় একজন মুচি ছিলেন। তার কাছে শেখা মুচির কাজ করেই সবিতার জীবিকা চলে। আর ভাই রবীন কসাইয়ের কাজ করেন। বরীন ছড়াও সংসারে তার স্ত্রী, প্রতিবন্ধী শিশু ছেলে এবং তিন বোনকে নিয়ে চরম দরিদ্রতার মাজে বসবাস করে আসসেন।