ধামরাইয়ে ভূমি দস্যু ফরহাদের আতঙ্কে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী,জমি দখলসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ।

Loading

মোঃ সম্রাট আলাউদ্দিন, ধামরাই(ঢাকা)প্রতিনিধিঃ ঢাকার ধামরাইয়ে এক প্রবাসীর জমি ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে জোর করে দখল নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে।

এমন ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নের দেপাশাই গ্রামে। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নের পশ্চিম দেপাশাই গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে প্রবাসী মোঃ দেলোয়ার হোসেন (শুকুর) এর জমি দির্ঘদিন ধরে জোর পূর্বক দখল নেওয়ার চেষ্টা করে আসছিলেন ফরহাদ হোসেন ।

ফরহাদের বিরুদ্ধে জমি দখলের একাধিক অভিযোগ রয়েছে।তিনি এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব করে বেড়ায়। কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায় না বলে জানা যায়। চিহ্নিত সন্ত্রাসী ফরহাদের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় একাধিকবার অভিযোগ করেও কোন কাজে আসেনি বলে জানিয়েছেন দেলোয়ার হোসেন (শুকুর)। এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে দেলোয়ারের পরিবারে। যেকোন সময় বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে ফরহাদ হোসেন।

ফরহাদ হোসেন ধামরাই উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নের দেপাশাই গ্রামের লাবু বেপাড়ীর ছেলে।

একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে জানা যায়, দেপাশাই গ্রামের মাতব্বরদের নিয়ে গ্রামের মধ্যে এক বিচারে বসেন।সেখানে বিজ্ঞ দুই আইনজীবি দিয়ে কাগজ পত্র দেখানো হলে সেই বিচারেও ফরহাদ হোসেন কোন জমি পায়না বলে জানান আইনজীবিগণ। কিন্তু ফরহাদ হোসেন সাভার ধামরাইসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে দেপাশাই ও দত্তখোলা মৌজার ৮৫ শতাংশ জায়গা জোর করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দখল নেওয়ার চেষ্টা করে ফরহাদ হোসেন ।

এরপর এলাকার লোকজন দৌড়িয়ে গেলে ভাড়া করা লোকজন নিয়ে সেখান থেকে সরে পরেন তিনি । এছাড়া একই গ্রামের বিধবা হনুফা বেগমের ১৩ শতাংশ জায়গা ৬ লক্ষ টাকা দাম ধরে নিয়ে পরে বিধবা হনুফা বেগমকে ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা নিজেই খেয়ে ফেলেন। এর পর দেপাশাই পূর্ব পাড়া সাইদুর রহমানের ৪০শতাংশ জায়গা অস্ত্র(পিস্তল) দেখিয়ে জোর করে দখল করার চেষ্টা করেন তিনি।

শুধু তাই নয়,  দেপাশাই উত্তর পাড়া মহল্লায় ১২ বছরের একটি মেয়ে ধর্ষণ হয়। শামছুল হককে আসামী করে থানায় মামলা করেন। পরে সেই মামলা মিমাংসা করে দেওয়ার কথা বলে শামছুল হকের স্ত্রীর কাছে দুই লক্ষ টাকা দাবি করেন ফরহাদ । পরে মিমাংসার কথা বলে শামছুল হকের স্ত্রীর কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। এই ভাবে নিজের প্রভাব খাটিয়ে মানুষের কাছ থেকে জোর করে জায়গা জমিসহ টাকা পয়সা নেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে ফরহাদের বিরুদ্ধে। সে এলাকার চিহ্নিত ত্রাস।তার সামনে অনেকেই কথা বলার সাহস করে না।পরে ক্ষতির ভয়ে।

ভুক্তভোগী দেলোয়ার হোসেন (শুকুর) বলেন, ফরহাদ আমার দেপাশাই ও দত্তখোলা মৌজার ৮৫ শতাংশ জায়গা বিভিন্নভাবে দখলের চেষ্টা করে আসছে। বিদেশে থাকার কারণে তিনি বিভিন্ন অজুহাতে জমি দখল নিতে চাচ্ছে। কিছু দিন পূর্বে  ভাড়া করা সন্ত্রাসী দিয়ে জমি দখল করার চেষ্টা করছে। এই বিষয়ে আমি একাধিক বার থানায় জিডি ও অভিযোগ করেছি।কোন ফল  হয়নি। এরপর আমাদের গ্রামে মাতব্বরদের নিয়ে গ্রামে সালিশি বসেছিলাম। কিন্তু ফরহাদ গ্রামের বিচার সে মানে নি এবং কোন প্রকার বৈধ কাগজ পত্র দেখাতে পারে নি ।

আরেক ভুক্তভোগী  বিধবা হনুফা বেগম বলেন, আমার স্বামী মারা গেছে অনেক আগে। আমার কোন ছেলে সন্তান নেই, থাকার মধ্যে দুটি মেয়ে আছে তাদের ও বিয়ে হয়ে গেছে। আমি কোন রকমে সংসার চালাই। ফরহাদ আমার ১৩ শতাংশ জায়গা নিয়ে ৬ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফরহাদ আমাকে  ৪লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়েছে। বাকি টাকা দেয় নাই। চাইতে গেলে সে নানাভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখায়।

পশ্চিম দেপাশাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লোকমান হোসেনের কাছ থেকে জমি লিখে নিয়ে  ৬০ হাজার টাকার একটি চেক দেন।পরদিন লোকমান হোসেনকে ব্যাংক চেক দেন। কিন্তু ব্যাংকে তার একাউন্টে কোন টাকা না থাকায় সে ধামরাই থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। আজও লোকমান হোসেনের টাকা পরিশোধ না করে তালবাহানা করে যাচ্ছে।

জানা যায়, ফরহাদ হোসেনের নামে জমি দখল ও অর্থ আত্মসাৎ এর কারণে বিভিন্ন সময়ে ধামরাই থানায় ৪ টি অভিযোগ, ৩ টি সাধারণ ডায়েরি ও কোর্টে রয়েছে একাধিক মামলা।

মঙ্গল আলী নামে এক কৃষক বলেন, আমি সাইদুর রহমানের ৪০ শতাংশ জায়গা পত্তন রেখে চাষ করি। কিন্তু ফরহাদ সেই জমি জোর করে দখল করতে আমাকে পিস্তল দেখিয়ে বলে জমি ছেড়ে না দিলে পিস্তল দিয়ে গুলি করে মেরে ফেলবে। তার ভয়ে এখন কিছুই বলা যায় না।

এই বিষয়ে চিহ্নিত সন্ত্রাসি ফরহাদ হোসেন এসব অস্বীকার করে বলেন, আমি আমার নিজের জমি চাষ করে খাই। আমি কারো জমি দখল করি নাই। তাছাড়া কোন সন্ত্রাসী দিয়ে জমি দখলও করি নাই । তার নিজস্ব বাহিনীর কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন আমার কোন বাহিনী নাই।

জমি দখলের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন,  আমার নানার জমি আমার মা পেয়েছে  সেই জমি বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছি। এতে কার কি।