বরিশালে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ১০ প্লাটুন বিজিবি চেয়েছেন জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্টেট মাঠে থাকবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার।
তিনি বলেন, খুব দ্রুত বরিশালে বিজিবি আসবে এবং তাদের মোতায়েন করা হবে। আশপাশের জেলা থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এরা সকলেই উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিয়োজিত হবেন।
বরিশালে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে লঞ্চ ও বাস চলাচল বন্ধ করা দেওয়া হয়েছিল। সড়কের উপর বাস আড়াআড়ি করে রেখে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। লঞ্চ চলাচলও একইভাবে বন্ধ ছিল। এই অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। সাত ঘণ্টা পর বাস ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এর আগে গত বুধবার ১৮ আগস্ট রাতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবৈধ বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন উচ্ছেদ করতে অভিযান চালায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাদের অভিযান বন্ধ করে সকালে অভিযানে চালাতে বলেন।
কিন্তু সেটি না মেনে ইউএনওর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন সিটি কপোরেশন কর্মী এবং আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে তারা ইউএনওর বাসভবনে হামলা চালান। এ সময় ইউএনওর নিরাপত্তায় আনসার সদস্যরা গুলি চালালে বেশ কয়েকজন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেলে পুলিশের সঙ্গেও হামলাকারীদের সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হন।
পরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এ ঘটনায় মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবুসহ কয়েজনকে আটক করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অভিযোগ, প্রশাসনিক এলাকায় সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ অভিযান না করতে অনুরোধ করার পরও তারা বাসভবনে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। এদিকে, সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর দাবি, এ হামলার ঘটনা সিটি করপোরেশনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি তিনি জানার পর সিটি করপোরেশনের লোকজনকে অনুরোধ করেন, নিরাপত্তার স্বার্থে প্রশাসনিক এলাকায় রাতে উচ্ছেদ অভিযান না চালাতে। কিন্তু তারা তা উপেক্ষা করে ইউএনওর বাসভবনে ঢুকে হামলা করলে, আনসার সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে।
পরে সিটি করপোরেশনের লোকজনের সঙ্গে যোগ দেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরাও। তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও কক্ষের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে বলে জানান ইউএনও।
সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, সিটি করপোরেশন একটা সরকারি প্রতিষ্ঠান। উনার বাসায় কেন হামলা চালাবে? তার সঙ্গে কি ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা আছে? বাধা তো দিয়েছেন তিনি! এটা আসলে সিটি করপোরেশনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। ঘটনা তদন্ত করে হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার কথা জানায় তারা।