বেগম জিয়ার মুক্তি নিয়ে বিএনপি নিজেই দ্বিধান্বিত -তথ্যমন্ত্রী

Loading

মীর আকরাম, তথ্যমন্ত্রীর দপ্তর : বেগম জিয়ার মুক্তি নিয়ে বিএনপি নিজেই দ্বিধান্বিত, বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।শনিবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শরীরচর্চা কলেজ ময়দানে অগ্রণী ব্যাংকের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এসংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

এসময় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন- ‘বিএনপি একদিকে বলছে আন্দোলনের মাধ্যমেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে, অন্যদিকে তারা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে ফোন করে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলাপ করতে চেয়েছে, তারা কি আন্দোলন থেকে সরে আসছে! আবার শোনা যাচ্ছে তার পরিবার চায় প্যারোলে মুক্তি- আসলে বিষয়টি কেমন?’এর জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে প্যারোলের কোনো আবেদন করা হয়নি। আপনারা দেখছেন, তার পরিবারের বরাত দিয়ে এক ধরনের কথা, আবার দলের পক্ষ থেকে আরেক ধরনের কথা বলা হচ্ছে। একদিকে আন্দোলনের ডাক, অন্যদিকে আমাদের সাধারণ সম্পাদককে ফোনে বেগম জিয়াকে মুক্তি দেবার অনুরোধ করে তারা আসলে কি চান, সেটা এখনো স্পষ্ট করতে পারেননি।’

এসময় মন্ত্রী আরো জানান, ‘বেগম জিয়া শুধুমাত্র প্যারোলে মুক্তির আবেদন করলেই সরকারের বিবেচনা করার সুযোগ থাকে, এছাড়া তাকে মুক্তি দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো এখতিয়ার নেই। বিএনপি নেতারা প্রতিদিন বেগম জিয়ার জামিন নিয়ে কথা বলেন, আর বলেন সরকার বাধা দিচ্ছে। বেগম জিয়া কোনো রাজনৈতিক বন্দী নন, তিনি দুর্নীতির দায়ে সাজা ভোগ করছেন। এবং বাংলাদেশে আইন ও আদালত স্বাধীন। সুতরাং তাকে জামিন পেতে হলে আদালতের মাধ্যমেই পেতে হবে। তারা (বিএনপি) আইন আদালতের তোয়াক্কা করেন না, কিন্তু সবাইকেই আইন মেনে চলতে হয়।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ প্যারোলের বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেন, ‘প্যারোল হচ্ছে তার অপরাধ ও শাস্তি মেনে নিয়ে মুক্তির আবেদন। তবে, এখনো পর্যন্ত বেগম জিয়ার পক্ষ থেকে প্যারোলের আবেদন করা হয়নি।’

‘প্রতিহিংসার রাজনীতি করে বিএনপি, আওয়ামী লীগ নয়’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা জিঘাংসা বা প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন না, বরং বিএনপি করে। ২০০৪ সালে বিএনপির আমলে প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়ার সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায়, তার পুত্র তারেক রহমানের পরিচালনায় ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা পরিচালিত হয়েছিল শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে।’

ড. হাছান আরো বলেন, ‘আবার যখন বেগম জিয়ার দ্বিতীয় পুত্র মৃত্যুবরণ করেন, তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম জিয়ার বাড়ির দরজায় দশ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি দরজা খোলেননি। এগুলো আমরা মনে রাখিনি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মনে রাখেননি। বেগম জিয়াকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে রেখে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা দিতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

নিজদলের উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ভাই যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে, তখন তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই ছিলেন। বিদেশ থেকে যে চিকিৎসকরা এসেছিলেন, তারাও বলেছেন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল যে চিকিৎসা দিয়েছে, তা বিশ্বমানের এবং সঠিক।’

বেগম খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তাকে কারাগারের প্রকোষ্ঠে না রেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে, উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তার সাথে পছন্দের গৃহপরিচারিকাকে রাখা হয়েছে, সার্বক্ষণিক নার্স রয়েছে। নিয়মিত তার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও তাকে সময়ে সময়ে পরীক্ষা করেন। সুতরাং বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপির কথাগুলো জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা ছাড়া কিছু না।’

এর আগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অগ্রণী ব্যাংকের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সামস-উল ইসলামসহ কর্মকর্তা-কর্মচারি ও তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।