শার্শা উপজেলায় ডেঙ্গু পরীক্ষাকরন কিটস নেই ।

Loading

মোঃ রাসেল ইসলাম.বেনাপোল(যশোর)প্রতিনিধি : সারা দেশে ডেঙ্গু’র বিস্তার ঘটলেও যশোরের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু শনাক্তের বা পরীক্ষা করার কোনো ব্যবস্থা নেই। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সাত-আটজন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসে।

কিন্তু তাদের যশোর পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে উপজেলার কাজীর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান উৎস (২০), পাকশিয়া গ্রামের রায়হান (২৬) ও সেতাই গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৩১) যশোর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিরা জেলা শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছে। শার্শা উপজেলা ৫০ শয্যার হাসপাতালের প্যাথলজিস্ট কবির হোসেন জানান, এ হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের পরীক্ষা করার কোনো মেডিসিন বা সরঞ্জাম নেই। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অশোক কুমার সাহা বলেন, ‘ডেঙ্গু জ্বর পরীক্ষার কোনো কিট হাসপাতালে না থাকায় পরীক্ষা করতে পারছি না। আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি। ঈদের আগেই পাব বলে আশা করছি। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের জন্য আলাদা ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করেছি। ’

৬০ টাকা দামের ভারতীয় ডাবর কম্পানির মশা প্রতিরোধী ওডোমস ন্যাচারালস ক্রিম (নন-স্টিকি মশক বিদ্বেষমূলক ক্রিম) এখন ৫০০ টাকায়ও মিলছে না।

ডেঙ্গু’র প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওডোমস ন্যাচারালস ক্রিমের দামও বেড়েছে আকাশছোঁয়া। ভারতীয় ৪৭ রুপির এই ক্রিমটি কয়েক দিন আগেও বাংলাদেশি ৬০ টাকায় বেনাপোল চেকপোস্টসহ ভারতের পেট্রাপোল চেকপোস্টে পাওয়া যেত। তবে এখন আর পাওয়া যাচ্ছে না। দোকানদাররা বলছে, সাপ্লাই নেই। তাই কোম্পানি সরবরাহ করছে না। পেট্রাপোল থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে বনগাঁ শহরের দু-একটি দোকান থেকে এক সপ্তাহ আগেও এ ক্রিম অনেকে কিনেছে। বর্তমানে কোনো দোকানে নেই। থাকলেও ৩০০ রুপি (বাংলাদেশি ৫০০ টাকা) দাম হাকাচ্ছে দোকানদাররা।

এদিকে জানা গেছে, শত শত পিস ওডোমস ন্যাচারালস ক্রিম এখন চোরাই পথে দেশে ঢুকছে। এগুলো সরাসরি চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে। এই ওডোমস ন্যাচারালস ক্রিম বাচ্চাদের হাতে-পায়ে লাগালে মশা আর কাছে আসে না। ডেঙ্গুকে ইস্যু করে চাহিদা বেশি থাকায় বাংলাদেশের মতো ভারতের এক শ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী মশা প্রতিরোধী এ ক্রিমের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ। এ সুযোগে বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে ওডোমস ক্রিম। বেনাপোল চেকপোস্ট ও পেট্রাপোলের কয়েকজন দোকানদার ও ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে বেনাপোল স্থলবন্দরে ওডোমস ক্রিমের কোনো চালান ভারত থেকে আমদানি হয়নি। এক বছর আগে ঢাকার আমদানিকারক এশিয়ান কনজুমারস নামের একটি প্রতিষ্ঠান বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ওডোমস ক্রিম আমদানি করেছিল। বর্তমানে সংকটময় মুহূর্তে কেউ আর আমদানি করেনি এই ক্রিম। শুধু ওডোমস ক্রিম নয়, মশা মারার কোনো ওষুধও আসেনি এ বন্দর দিয়ে জানালেন কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা।

বেনাপোল বাজারের ওয়াফা কালেকশনের স্বত্বাধিকারী আয়ুব হোসেন বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাবের আগে আমরা এই ওডোমস ক্রিম ৬০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন ৩০০ টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের দোকানে যারা দিয়ে যেত, তারা আর আসছে না। ’ বেনাপোল চেকপোস্টের যশোর স্টোরের স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ডেঙ্গু’র কারণে ওডোমস ক্রিমের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আমদানি না হওয়ায় ওডোমস বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। চোরাই পথে এলেও বেশি দাম পাওয়ায় ঢাকাসহ বড় বড় শহরে পাঠিয়ে দিচ্ছে তারা। পরিচিতরা প্রতিদিন বলছে, কিন্তু দিতে পারছি না।

বেনাপোল চেকপোস্টের আমদানি-রপ্তানির কাজে নিয়োজিত মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমার ঢাকার এক ইমপোর্টারের জন্য দুটি ওডোমস ক্রিম ভারতীয় ৩০০ রুপি দিয়ে এনে দিয়েছি। আগে এটা পেট্রাপোল চেকপোস্ট থেকে ৬০ টাকায় কিনেছি।’