শিবগঞ্জে সনাতন সম্প্রদায়ের মাঘী বান্নী গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠিত

Loading

রাজশাহী অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের বিগত বছরের ন্যায় এবারো চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌর এলাকার তর্ত্তিপুরে মাঘী বান্নী গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

চন্দ্র মাসের তারিখ হিসাবে প্রতি বছর রাজশাহী অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ আবালবৃদ্ধবনিতা সবাই তর্ত্তিপুর নামক স্থানে পৌরণিক জাহ্নুমুনির আশ্রমের কাছে গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে থাকেন।

তর্ত্তিপুর মহাশ্মশান কমিটির সভাপতি শ্রী সাধন কুমার মনিগ্রাম ও সাধারণ সম্পাদক কমল কুমার ত্রিবেদী জানান, এ গঙ্গাস্নান অধিকাংশ বছরই মাঘ মাসে অনুষ্ঠিত হয় বলে একে মাঘী বান্নী গঙ্গাস্নান বলা হয়ে থাকে। কিন্তু চাঁদের উপর নির্ভর করে কোন কোন বছর ফাগুন মাসেও গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ রাজশাহী অঞ্চলের নাটোর, নওগাঁ এলাকা থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী পুরুষ-মহিলারা বাস, মিনিবাস, মাইক্রো, মিশুক, রিক্সাসহ বিভিন্ন প্রকার যানবহন যোগে দূরদূরান্ত থেকে গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য আগেরদিন থেকেই পৌরণিক জাহ্নুমুনির আশ্রমে আসতে শুরু করে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত তীর্থযাত্রীদের আসা অব্যহত ছিল। আগতরা স্থানীয়ভাবে গঙ্গাস্নান পর্ব শেষ করে বিভিন্ন ধরণের ভুরি ভোজ করে থাকে। প্রায় মহিলারাই বাড়ি ফেরার সময় নানা ধরণের মাটির পাত্রে সযত্নে গঙ্গার পবিত্র জল নিয়ে যায়।

অপরদিকে গণজমায়েতকে উদ্দেশ্য করে তর্ত্তিপুর ঘাট এলাকায় প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও গড়ে উঠেছে বিভিন্ন আসবাবপত্রের মেলা। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও পৌর এলাকার তর্ত্তিপুর শ্মশানে মাকরী সপ্তমী মহাপূর্ণ স্নান উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাম্মবলীদের মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে প্রচন্ড শীতকে উপেক্ষা করে পূন্যার্থীরা এ গঙ্গাস্নান যোগ দিয়েছে।

আয়োজকরা সময়ের খবর ২৪ প্রতিবেদকে জানিয়েছেন , প্রতি বছরের মতই এবারো বেলা বাড়ার সাথে সাথে বেড়েছে ভক্তদের সংখ্যা। এ উপলক্ষে শুধু স্থানীয় হিন্দু ভক্তদের ভোর থেকে তর্ত্তিপুর গঙ্গাস্নান ঘাট এলাকায় গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়।

এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পূর্ণ্য লাভের আশায় হিন্দু ধর্মাম্মবলীরা জমায়েত হন। গঙ্গাস্নান শেষে অধিকাংশ হিন্দু ধর্ম্বালবীরা ভোলাহাটের ঐতিহ্যবাহী দই, চিড়া, মুড়ি, শিবগঞ্জের আদি চমচম, কলা দিয়ে ঝুড়ি ভোজ খেয়ে থাকে। সাথে কেউ কেউ গঙ্গার জল সাথে নিয়ে নিজ গন্তব্যে ফিরে যান।

এদিকে নওগাঁ থেকে আসা ৮৬ বছরের এক বৃদ্ধা জানান, পূর্ব পুরুষের রীতিনীতি মোতাবেক এখনো আমরা গঙ্গাস্নান শেষে মাটির পাত্রে গঙ্গার জল নিয়ে যায়। সারা বছর এই জল দিয়ে বাড়ির বিভিন্ন জনের শারীরিক সুস্থতার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।