নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকার সাভার উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও পলাতক উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীবের অন্যতম সহযোগী নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও আন্তজেলা ডাকার দলের সর্দার কথিত সাংবাদিক আপেল মাহমুদ ওরফে লেগুনা আপেলকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে সাভার মডেল থানা থেকে আদালতে পাঠানো হয়েছে
সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে গ্রেপ্তার লেগুনা আপেলকে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে করে সাভার থেকে আদালতে পাঠানো হয়। এরআগে নারায়ণগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা। এদিকে কথিত এই সাংবাদিক গ্রেপ্তার হওয়ায় এলাকায় প্রতীক স্বরূপ পচা আপেল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে সাধারণ মানুষ।
পুলিশ জানায়, ষষ্ঠ শ্রেণী পাস না করেই বাবার পেশা কসাই ও লেগুনার ড্রাইভার হিসেবে পেশা শুরু করে পরবর্তীতে ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, পাঁচ নারীকে ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেইলসহ নানা ধরনের অপরাধের সাথে যুক্ত ছিলেন আপেল মাহমুদ ওরফে লেগুনা আপেল। পরবর্তীতে “আপেল ভাইয়ের দল” নামে একটি ডাকাত দল গড়ে নিজেকে নতুন নামে আত্মপ্রকাশ করেন। গ্রেপ্তার হয়ে কারাবাস শেষে জামিনে মুক্ত হয়ে একটি আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকায় সাভার প্রতিনিধি হিসেবে সাংবাদিকতায় নাম লেখায় অশিক্ষিত চতুর এই প্রতারক। আপেল সাভার পৌরসভার ভাটপাড়া মহল্লার শুকুর মুন্সি ওরফে শুকরু কসাইয়ের ছেলে। কথিত সাংবাদিকতার আড়ালে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীবের ক্যাডার হিসেবে নানা অপকর্মের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সময় বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়িতে ডাকাতি, লুটপাট এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে সরাসরি অস্ত্র হাতে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, গুলিবর্ষণ ও নির্যাতন চালায় আপেল। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে পালিয়ে প্রথমে শশুর বাড়ি পাবনা, পরে বগুড়া ও নরসিংদী হয়ে সর্বশেষ মুন্সীগঞ্জে পূর্বের ন্যায় কথিত সাংবাদিকতা শুরু করেন এই প্রতারক। রবিবার ১৩ এপ্রিল দুপুরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট এলিট ফোর্স র্যাবের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে নারায়ণগঞ্জ এলাকা থেকে আপেল মাহমুদ ওরফে লেগুনা আপেলকে গ্রেপ্তার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ।
সূত্র জানায়, আপেল মাহমুদকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেআওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়নে যুক্ত ও বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আরো বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের নাম উঠে এসেছে। তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে নিশ্চিত করেছে ওই সূত্রটি।
উল্লেখ্য, সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শীর্ষ সন্ত্রাসী মঞ্জুরুল আলম রাজীবের নানা অপকর্মের তথ্য গণমাধ্যমে তুলে ধরতেন সাভারের স্থানীয় সাংবাদিক মতিউর রহমান ভান্ডারী, সোহেল রানাসহ অন্য সাংবাদিকরা। পাল্টা
রাজীবের পক্ষ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে অপপ্রচার করতেন আপেল মাহমুদ ওরফে লেগুনা আপেল। রাজীবকে খুশি করতে গত বছরের ১৫ই মে সাংবাদিক সোহেল রানার বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতা শাহজাহানকে বাদী করে আদালতে মিথ্যা মামলা করিয়ে পুরস্কার স্বরূপ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাই টিভির প্রতিনিধিত্ব ও সাভার উপজেলা থেকে তিন মাসে ৬ লাখ টাকার বিজ্ঞাপন বাগিয়ে নেন আপেল মাহমুদ। এত কিছুর পরে অবশেষে গ্রেপ্তার হলো আপেল মাহমুদ ওরফে লেগুনা আপেল। তাকে আইনের আওতায় আনায় পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ ও পেশাদার সাংবাদিকরা।