একাদশ সংসদ নির্বাচন শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই নবনির্বাচিতদের নাম-ঠিকানাসহ গেজেট তৈরি করে প্রকাশের জন্য বিজি প্রেসে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে, নতুন এমপিদের শপথ পড়ানোর প্রস্তুতি ইতোমধ্যে তারা নিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের গেজেট হাতে পেলে সময় চূড়ান্ত করা হবে।
গেজেট প্রকাশ হয়ে গেলে আগামী বৃহস্পতিবারই নতুন জনপ্রতিনিধিরা শপথ নেবেন বলে ইতোমধ্যে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৯৯টিতে গত রোববার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়, গোলযোগের কারণে একটি আসন স্থগিত রেখে সেই রাতেই ২৯৮টি আসনের ফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
এর মধ্যে ২৫৯টি আসনে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীরা। আর জোটগতভাবে তাদের আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৮টি। এই নিরঙ্কুশ জয়ে টানা তৃতীয়বারের মত সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
এর বিপরীতে বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভরাডুবি হয়েছে। তাদের ধানের শীষের প্রার্থীরা মাত্র সাতটি আসনে জয়ী হতে পেরেছে।
ভোটে বাধা দেওয়া, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া এবং কারচুপির অভিযোগ তুলে ঐক্যফ্রন্ট ফলাফল বাতিল করে পুনঃভোটের দাবি তুললেও নির্বাচন কমিশন তা নাকচ করে দিয়েছে।
ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নির্বাচিতদের গেজেট প্রকাশের পর শপথের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইসি সচিবালয় থেকে স্পিকারকে চিঠি দেওয়া হবে।
# সংসদ নির্বাচনের ফল গেজেট আকারে প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে শপথের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
# এরপর ৩০ দিনের মধ্যে অধিবেশন ডাকতে হবে।
# প্রথম অধিবেশন শুরুর ৯০ দিনের মধ্যে শপথ না নিলে বা স্পিকারকে অবহিত না করলে সদস্য পদ খারিজ হবে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি। তাতে বিজয়ীরা ৯ জানুয়ারি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন।
সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই সংশ্লিষ্ট শাখাগুলো শপথের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।
সংসদ সচিবালয়ের আইন শাখার কর্মকর্তা নাজমুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। গেজেট পেলে নির্দেশনা অনুযায়ী বাকি কাজ হবে।”
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ ভবনের নিচতলায় ‘শপথ কক্ষে’ নবনির্বাচিতদের শপথ পড়াবেন। তার আগে তিনি নিজে নিজে আইনসভার সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন। এবারও তিনি রংপুর-৬ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন।
রেওয়াজ অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের সদস্যরাই প্রথমে শপথ নেবেন। এরপর ক্রমানুসারে শপথ নেবেন অন্যরা। শপথ শেষে নতুন সংসদ সদস্যরা সংসদ সচিবের কার্যালয়ের স্বাক্ষর খাতায় সই করবেন এবং একসঙ্গে তাদের ছবি তোলা হবে।