21 C
Dhaka, BD
শুক্রবার, জানুয়ারি ৩১, ২০২৫

সাভারে পূর্ব শক্রতার জের হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র টেটা বিদ্ধ

সাভারে পূর্ব শক্রতার জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে টেটা বিদ্ধ করা হয়েছে। আজ রবিবার উপজেলার বিরুলিয়া ইউনিয়নের ভবানীপুর এলাকায় এঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী জানায়,জমি সংক্রান্ত ও পূর্ব শক্রতার জের ধরে সাভারের সিটি ইউনিভার্টিতে বিএসসি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অধ্যায়ন করা মামুনকে (২৫) নিজ বাড়ি ভবানীপুরে টেটা বিদ্ধ করে গুরুতর আহত করে তারেই চাচা এসহাক আলী। এসময় মামুনের লোকজনও এসহাক আলীর ভাই জসিমকেও মারধর করেন। পরে আহত মামুনকে দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এঘটনার পর থেকে এশেক আলী পলাতক রয়েছে।

স্থানীয় বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের তিন নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন বলেন,জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তাদের মাঝে মারামারি হয়েছে অন্য কিছু না।

এঘটনায় ভুক্তভোগী মামুনের পরিবার সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এবিষয়ে সাভার মডেল থানার ওসি আতিকুল ইসলাম বলেন,তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লাশের স্তূপে ব্রাজিলের জার্সি দেখে স্বামীকে শনাক্ত আশুলিয়ায়

ভ্যানে লাশের হলুদ জার্সি দেখে নিখোঁজ স্বামীকে শনাক্ত করলেন স্ত্রী লাকি আক্তার। সেই ভিডিওতে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা দেহগুলোর স্তূপ থেকে ব্রাজিলের জার্সি পরিহিত একটি হাত বের হয়ে থাকতে দেখা যায়। সেই হাত দেখে ওই ব্যক্তিকে স্বামীর লাশ হিসেবে শনাক্ত করেছেন তিনি।

লাকী আক্তার নামের ওই নারী বলছেন, লাশের ভ্যানে থাকা ওই ব্যক্তি তার স্বামী আবুল হোসেন। এক সময় লাকির প্রতিবেশীরাও ওই হাত আবুল হোসেনের হওয়ার কথা বলছেন, যিনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার খবর শুনে ব্রাজিলের জার্সি পরেই ঘর থেকে বেরিয়েছিলেন।

লাকী আক্তার গত ৫ আগস্ট থেকে তার স্বামী আবুল হোসেনের নিখোঁজ থাকা নিয়ে আশুলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছিলেন।

একটি ভিডিওতে ভাইরাল হওয়া ভ্যানে একটির ওপর আরেকটি নিথর দেহ স্তূপ করে রাখার যে ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়েছে সেটি সাভারের আশুলিয়া থানার ঠিক পাশের ঘটনা বলে ইতোমধ্যেই গণমাধ্যমসহ দেশব্যাপী ঝড় তুলেছে।

সেখানকার বাসিন্দা জনাব আলী বলেন, ভিডিওটিতে যে ভ্যানে রক্তমাখা নিস্তেজ দেহগুলো তুলতে দেখা গেছে সেটি দাঁড়ানো ছিল থানার কোনায় জামে মসজিদের ঠিক পেছনে গলির ওপরে। সময় তখন বিকাল ৫টা। এর কিছুক্ষণ পর সড়ক থেকে দেহগুলো ওই ভ্যানে তোলা হয়।

স্থানীয় লোকজন বলেন, পরে পুলিশ চলে যাওয়ার পর থানার সামনে থেকে পুলিশের একটি লেগুনা জ্বলতে দেখা যায়। পরিস্থিতি শান্ত হলে জনগণ সেই আগুন নেভানোর পর সেখানে কয়েকটি পোড়া লাশ দেখতে পান।
৬ আগস্ট সেখানে ছয়টি পোড়া লাশ উদ্ধার করা হয়। সেগুলোর মধ্যে চারটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাকি দুইজনের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে নিকটবর্তী আমতলী গোরস্থানে দাফন করা হয় বলে স্থানীয় সূত্রমতে জানা গেছে।

লাকী আক্তার ও আবুল হোসেন দম্পতি থাকতেন বাইপাইল পশ্চিমপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়ির ঘরে। তাদের দুই সন্তান বড়টির বয়স নয় বছর ছোটটি ছয় মাস বয়সি। আবুল হোসেন দিনমজুরির ভিত্তিতে ট্রাক থেকে মালামাল নামানোর কাজ করতেন। লাকী সেখানকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তবে ছোট বাচ্চাটির জন্মের পর শারীরিক কারণে কাজ ছাড়তে বাধ্য হন। সংসার চলছিল পুরোপুরি আবুল হোসেনের রোজগারে।
শনিবার ভাড়া বাসায় কথা হয় তার সঙ্গে। কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন বারবার। বলছিলেন, তার সন্তানদের এখন কী হবে?

লাকী আক্তার বলছেন, গত ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন আবুল হোসেন। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

ছয় মাসের বাচ্চা কোলে লাকী এই কয়েক দিন ধরে হাসপাতাল, মর্গ, কারাগার, থানা থেকে শুরু করে সেনানিবাস পর্যন্ত স্বামীর খোঁজে গিয়েছেন। পরে গত শুক্রবার রাতে তার একজন আত্মীয়কে কেউ একজন ভিডিওটি পাঠিয়ে দেখতে বলেন। আত্মীয়টি সেটি তাকে দেখালে তিনি স্বামীকে চিনতে পারেন। সেই সময়ই ভ্যানে ঢাকা চাদর কিছুটা সরে গিয়ে আরও দেহের নিচে চাপা পড়ে থাকা একজনের হাত বের হয়ে যায়। দুই তিন সেকেন্ডের সেই হাতের ছবি দেখে তাকে আবুল হোসেন বলে শনাক্ত করেন তার স্ত্রী, স্বজন প্রতিবেশীরা।
লাকী আক্তার বলছেন, ৫ আগস্ট দুপুরের দিকে ব্রাজিল ফুটবল দলের একটি হলুদ রঙের জার্সি আর লুঙ্গি পড়ে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন তিনি। আশপাশে অনেকেই চেনেন আবুলকে। বাইপাইল মসজিদ থেকে যখন আসরের আজান হচ্ছিল তখনো মসজিদের পাশেই তাকে দেখেছেন স্থানীয়রা।

আবুল হোসেনের প্রতিবেশীরা জানান, ওই দিন শেখ হাসিনার পতনের পর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে একটি বিজয় মিছিলে আবুল হোসেনকে দেখেছিলেন তিনি। ভিডিওটি দেখে স্থানীয় আলী হোসেন ধারণা করছেন, বিকালে রাস্তায় জমায়েত হওয়া লোকজনকে লক্ষ্য করে পুলিশ যে গুলি চালিয়েছিল তাতে অনেকেই হতাহত হন। যাদের লাশ ভ্যানে করে সরিয়ে ফেলা হয়।

তবে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। ভ্যানের সেই নিথর দেহ বা লাশগুলো কোথায় গেল সেটিও জানে না পুলিশ। ভ্যানের লাশগুলোই কি লেগুনায় তোলা হয়েছিল কিনা সে তথ্যও নেই তাদের কাছে।

ঢাকা জেলার এসপি আহম্মদ মুইদ কয়েক দিন আগে দায়িত্ব নিয়েছেন। মোবাইল ফোনে তাকে লাকী আখতারের বিষয়টি জানালে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, আমি লাকী আখতারের বিষয়টি শুনলাম। আমি সব খবর নিয়ে আপনার সঙ্গে পরে কথা বলব।

তিনি আরও বলেন, আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি তবে এখনো বিস্তারিত কিছুই জানি না।

মিরপুরে ছাত্রী হত্যার দায়ে মামলা, হাসিনাসহ আসামি মাসউদ-নজিবুল-মিছবাহুর

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় রিতা আক্তারের (১৭)। এ হত্যার দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আরও ৩৯৫ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) মিরপুর মডেল থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করেন রিতার বাবা মো. আশরাফ আলী।

মামলায় ৩৯৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও এ মামলায় আসামি করা হয়েছে সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ, কিশোরগঞ্জের ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বাশার মাইজভাণ্ডারী, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরীকে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সহপাঠীদের সঙ্গে আন্দোলনে যায় শিক্ষার্থী রিতা। ঘটনার দিন আনুমানিক সকাল ১০টা থেকে রাত পর্যন্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ ৭০০ থেকে ৮০০ নেতাকর্মী, পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাবসহ যৌথবাহিনীর সদস্যরা ছাত্র-ছাত্রীদের হত্যার লক্ষ্যে নির্বিচারে গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। তাদের গুলিতে মিরপুর মডেল থানার পাশে মিরপুর শপিং মলের সামনে গুলিবিদ্ধ হন রিতা। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

অ্যান্টিবায়োটিকের খোঁজ মিলেছে আর্কটিক সাগরের গভীরে

অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ তৈরিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অ্যাকটিনোব্যাকটেরিয়া থেকে বর্তমানে ব্যবহৃত প্রায় ৭০ শতাংশ অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করা হয়। এবার আর্কটিক সাগরের গভীরে পাওয়া অমেরুদণ্ডী প্রাণীর নমুনা থেকে বিচ্ছিন্ন অ্যাকটিনোব্যাকটেরিয়ার চারটি প্রজাতির খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

যদিও সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে নিয়ন্ত্রণে নতুন অ্যান্টিবায়োটিকের বেশ সংকটই দেখা দিয়েছে।

এই সমস্যা সমাধানে বিজ্ঞানীরা নতুন অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধান পেতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গবেষণা করছেন।
ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী পাইভি টামেলা জানিয়েছেন, আমরা একটি অ্যান্টিবায়োটিক যৌগ আবিষ্কার করেছি, যা এন্টারোপ্যাথোজেনিক ই কোলি ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে প্রভাবিত না করেই বাধা দিতে পারে। আর্কটিক মহাসাগরের গভীরে পাওয়া অ্যাকটিনোব্যাকটেরিয়া থেকে এই যৌগ আবিষ্কার করেছি আমরা। ই কোলি ব্যাকটেরিয়ার কারণেই পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মারাত্মক ডায়রিয়া হয়ে থাকে। মানুষের অন্ত্রের কোষ ধ্বংস করে রোগ সৃষ্টি করে ই কোলি ব্যাকটেরিয়াটি।

বিজ্ঞানীরা আর্কটিক থেকে সংগৃহীত নমুনা থেকে শক্তিশালী অ্যান্টিভাইরুলেন্স বা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদানের সঙ্গে দুটি অজানা যৌগও খুঁজে পেয়েছেন।

ফ্রন্টিয়ার্স জার্নালে এই গবেষণার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এই পর্যবেক্ষণে দেখা যায় একটি সক্রিয় যৌগ সম্ভবত একটি ফসফোলিপিড, যা ফ্যাটি ফসফরাস-ধারণকারী অণুর একটি শ্রেণি যা কোষের বিপাকের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। (সূত্র: ফিজিস ডট অর্গ)

মানবাধিকার লঙ্ঘন তদন্তে জাতিসংঘকে আমন্ত্রণ প্রধান উপদেষ্টার

জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালীন মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত করতে জাতিসংঘকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তার্ক এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার (৩০ আগস্ট) এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি। এসময় তিনি আরও জানান, নিরপেক্ষ ও স্বাধীন সত্য অনুসন্ধান পরিচালনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের কাছ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পেয়েছেন ফলকার তার্ক।

গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের ঘটনাগুলোর তদন্তে জাতিসংঘকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ন্যায়বিচার, জবাবদিহি ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের জন্য আগামী সপ্তাহের কোনো একসময় বাংলাদেশে জাতিসংঘের একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দল আসার কথা রয়েছে। দলটিকে পূর্ণ সহযোগিতার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন তারা।

উল্লেখ্য, এর আগে ২২ আগস্ট থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত জাতিসংঘের একটি কারিগরি দল বাংলাদেশ সফর করে অন্তর্বর্তী সরকার, প্রধান বিচারপতি, পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও আইনজীবী, সাংবাদিক ও মানবাধিকার রক্ষায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গসহ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেন।

ছাত্র আন্দোলনে নিহত ২০ পরিবারকে ২০ লাখ টাকা দিল জামায়াত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ২০টি পরিবারকে ২০ লাখ টাকা সহায়তা দিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজারস্থ মোল্লা কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ২০টি পরিবারকে ২০ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম।

মাওলানা শামসুল ইসলাম বলেন, শহীদেরা আমাদের অনুপ্রেরণা, এক অদম্য চেতনার সাইরেন।

এ আন্দোলনে শাহাদাত বরণকারী ভাইয়েরা ঘুমন্ত জাতিকে জাগিয়ে তুলেছেন। হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত বাংলার মাটি ও মানুষের হৃদয়ে আশার ঢেউ তুলেছে একবিংশ শতাব্দীর সাহসী যুবক আবু সাঈদ এবং তার সঙ্গীরা।

 

জামায়াতে ইসলামী আজীবন শহীদ পরিবারের পাশে থাকবে কথা দিয়ে তিনি বলেন, যেকোনো প্রয়োজনে জামায়াতে ইসলামীকে স্মরণ করবেন, আমরা সর্বদা আমাদের সাধ্যমতো আপনাদের সুখে-দুঃখে সহযোগিতা করবো ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এ জাতির প্রয়োজনে জীবন দিয়ে হলেও তার দেশের মানুষের অধিকার আদায়ে সোচ্চার ভূমিকা পালন করবে।

মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে এবং মহানগর সেক্রেটারি আ স ম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যগণ, মহানগরের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য খায়রুল হাসান, মহানগর সহকারী সেক্রেটারি ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য আফজাল হোসেন, মহানগর কর্মপরিষদ সদস্য ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইউবী, তুরস্ক ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্বশীল ও তুকাত গাজী উসমান পাশা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের গাজীপুর মহানগর সভাপতি মাওলানা আবু হানিফসহ কর্মপরিষদ সদস্য ও থানা আমিরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নোয়াখালীতে সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের চরএলাহী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন তোতাকে (৬৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ বর্তমান ইউপি চেয়াম্যানের যোগসাজসে প্রতিপক্ষের লোকজন এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত।

শুক্রবার (৩০) আগস্ট বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকার ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ৯ টার দিকে রাজনৈতিক পূর্ব শক্রতার জের ধরে ও ইউপি চেয়াম্যানের যোগসাজসে উপজেলার চরএলাহী বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

নিহত আব্দুল মতিন তোতা উপজেলা চরএলাহী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও একই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ছিলেন।

নিহতের বড় ছেলে ইব্রাহীম তোতা অভিযোগ করে বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে আমার বাবা চরএলাহী বাজারে তার ব্যক্তিগত অফিসে বসেছিলেন। ওই সময় চরএলাহী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন ও চরএলাহী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন ও বর্তমান ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মেম্বার এবং বর্তমান চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে আমার বাবার অফিসে তার ওপর হামলা চালানো হয়। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা আমার বাবাকে মাথায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। ওই সময় হামলাকারীদের দলে থাকা ৪০ থেকে ৫০জনের একটি দল আগ্নেয়াস্ত্র হাতে আমার ভগ্নিপতি মিজানের দোকানেও হামলা চালায়।

নিহত চেয়ারম্যান তোতার মেয়ে জামাই মো. মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার সময় রাতে চরএলাহী বাজারে চরএলাহী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মেম্বারের নেতৃত্বে এলাকা ত্রাণ বিতরণ উপলক্ষে আনন্দ মিছিল করে। মিছিল শেষে চরএলাহী ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আবুল কালামসহ বেলাল, খোকা, রিপন, এমরান, মামুন, হিরন, আলমগীর আগ্নেয়াস্ত্র হাতে আমার শ্বশুরের অফিসে তাকে মাথায় কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে। পরে তিনি ঢাকার ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মিছিলে বিএনপি নেতারা আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারীদের ঢুকিয়ে পরবর্তীতে হামলা চালায়।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন শিকদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। তিনি বলেন, স্থানীয় বিএনপির সাথে দলীয় কোন্দল ও চেয়ারম্যন আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে দ্বন্দ রয়েছে। তিনি সেদিকে ইঙ্গিত করেন এবং পরে বিস্তারিত জানাবেন বলেছেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ অনুসারী আব্দুর রাজ্জাক চেয়ারম্যান। কাদের মির্জার ছত্রছায়ায় চরএলাহী ইউনিয়নের উড়িরচরের প্রায় ১১০০একর খাস জায়গা ভূয়া ভূমিহীন সাজিয়ে রাজ্জাক বিক্রি করে দেয়। চরএলাহী ইউনিয়ন থেকে শুধু খাস জায়গা বিক্রি করে গত ১৩ বছরে রাজ্জাক চেয়ারম্যান হাতিয়ে নিয়েছেন ২৫ কোটি টাকা। ২০২২ সালে চরএলাহী ইউনিয়নে ১৫ টাকা চালের ভিজিএফ কার্ড জনপ্রতি ২হাজার টাকা থেকে ৩হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এভাবে প্রায় ১হাজার নিরীহ জনগণের থেকে ৩০ লক্ষ টাকা আদায় করে। চরএলাহী ১, ৩, ৪, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে কোড বেড়ি নির্মাণ কাজ চলছে রাজ্জাক চেয়ারম্যানের তত্ত্বাবধানে। এ বাঁধ নির্মাণেও ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। রাজ্জাক একসময় রিকশা চালালেও এখন থাকেন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দৃষ্টি নন্দন পাকা ভবনে।  চলাফেরা করেন অর্ধকোটি টাকার গাড়িতে। এই ইউনিয়নের মাদক ব্যবসা, ঘাট সব নিয়ন্ত্রণ করে রাজ্জাকের ঘনিষ্ঠ অনুসারী ইয়াবা আলমগীর ও চরএলাহী ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আবুল কালাম। নামে বেনামে সম্পদ গড়েছেন জেলা শহর মাইজদীও চট্রগ্রামে। এর মধ্যে মাইজদী ইসলামী ব্যাংক রোডে রয়েছে ফ্ল্যাট।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের মুঠোফোনে কল করা হলেও তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয়রা জানান, তোতা চেয়ারম্যানের মৃত্যুর খবর পেয়ে তারা সবাই গা ঢাকা দেয়।

জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নরসিংদীর প্রাণ আরএফএল কারখানায় ভয়াবহ আগুন

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গায় প্রাণ আরএফএল গ্রুপের একটি কারখানায় আগুন লেগেছে।  শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে এই আগুন লাগে বলে জানায় স্থানীয়রা।

খবরটি নিশ্চিত করে নরসিংদী ফায়ার সার্ভিস জানায়, পলাশ ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট এবং মাধবদী ফায়ার স্টেশনের দুটি আর নরসিংদীর তিনটি ইউনিটসহ মোট ৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

এছাড়া, আগুন নেভাতে কোম্পানির নিজস্ব দমকল বাহিনীও কাজ করেছে।

জানা যায়, কারখানার যে অংশে আগুন লেগেছে সেখানে ওয়ান টাইম প্লেট এবং অন্যান্য প্লাস্টিক পণ্য তৈরি হতো।

ড. ইউনূসকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ফোন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। ফোনে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে রেডিও পাকিস্তান। এছাড়া পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও উভয় নেতার ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সংবাদ মাধ্যমটি বলেছে, চলমান বন্যায় হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ড. ইউনূসের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন শেহবাজ। একইসঙ্গে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সমৃদ্ধির জন্য ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বলে ফোনালাপে উভয় নেতা সম্মত হয়েছেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বর্ধিত সহযোগিতার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন শেহবাজ শরিফ। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বন্ধন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ উভয় দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান এবং উভয় দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ আরও জোরদার করার বিষয়েও গভীর ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

ফোনালাপে উভয় নেতা একমত হন যে– পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জনগণের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া বৃহত্তর আঞ্চলিক সহযোগিতা দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের জীবনযাত্রার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলেও একমত হন তারা।

প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস টেলিফোন আলাপে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে ধন্যবাদ জানান বলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

আধিপত্য নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, কৃষক দল নেতা নিহত

মাগুরায় বিএনপির দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম ওয়াজেদ আলীর (৫০)। তিনি জাতীয়তাবাদী পৌর কৃষক দলের সহসভাপতি। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

নিহত ওয়াজেদ আলী মাগুরা সদর উপজেলার ডেফুলিয়া গ্রামের তোরাপ আলির ছেলে।

মাগুরা জেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর আলম হীরা ওয়াজেদ আলীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এলাকাবাসী জানান, বুধবার (২৯ আগস্ট) সকালে সদর উপজেলার ডেফুলিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ১৪ জনকে আহত অবস্থায় মাগুরা ২৫০ বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে শিমুল নামের একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ও ওয়াজেদ আলিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওয়াজেদ আলির মৃত্যু হয়।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদ ও জেলা বিএনপির সদস্য মনোয়ার হোসেন খানের সমর্থকরা বিরোধের জেরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। যিনি মারা গেছেন তিনি মনোয়ার হোসেনের পক্ষের সমর্থক বলে তার ভাই মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন।

আধিপত্য নিয়ে এ সংঘর্ষ হয় বলে নিশ্চিত করে মাগুরা সদর থানার ওসি মেহোদী হাসান রাসেল বলেন, গত বুধবার সামান্য ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। দুই পক্ষই বিএনপির রাজনীতি করে। এতে কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর ডেফুলিয়ার একজন ফরিদপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বলে শুনেছি। এ ঘটনায় কোনো পক্ষই পুলিশের কাছে এখন পর্যন্ত অভিযোগ দেয়নি।

সর্বশেষ আপডেট...