সৌদি আরবে পালিত হচ্ছে পবিত্র হজ। দেশটিতে অবস্থানরত স্থানীয় ও অভিবাসী ৬০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত পবিত্র আরাফাতের ময়দান।
এই ময়দানে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বিদায় হজে মুসলিম জাতির উদ্দেশ্যে নির্দেশনামূলক ভাষণ দিয়েছিলেন। এ ছাড়া মুসলমানদের আদি পিতা হজরত আদম (আ.) এবং মা হাওয়ার স্মৃতি বিজড়িত মিলনস্থলও এই আরাফাতের ময়দান।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছিলেন, আরাফাতের ময়দানে অবস্থান মানে হজ। যে মুসলমান মুজদালিফায় রাত্রিযাপন করে ফজরের নামাজের পূর্বে আরাফাতের ময়দানে পৌঁছাবে তার হজ পূর্ণ হয়ে যাবে।
আরাফাতের ময়দানে মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা পাঠ করবেন কাবা শরীফের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. বান্দার বালিলাহ। বাংলা ভাষাসহ ১০টি ভাষায় এই খুতবা অনুবাদ করে প্রচার করা হবে। খুতবা বাংলায় অনুবাদ করবেন মক্কা ইসলামিক সেন্টারে কর্মরত বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার মাওলানা আ. ফ. ম ওয়াহিদুর রহমান।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি সরকার দ্বিতীয়বারের মতো স্বল্প পরিসরে হজ পালন অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছে। গত বছর ১০ হাজার হজযাত্রী নিয়ে হজ সম্পাদন হলেও এ বছর ৬০ হাজার হজযাত্রীকে লটারির মাধ্যমে হজ পালন করার সুযোগ করে দিয়েছেন সৌদি সরকার, সেজন্য নেয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
হজ-সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। অবৈধভাবে হজ পালন রোধে নেয়া হয়েছে সব ধরনের ব্যবস্থা। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর প্রবেশদ্বারে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আগ থেকেই অনুমতি ছাড়া হজ পালন না করার জন্য সতর্ক করে দিয়েছে সরকার।
আজ সোমবার (১৯ জুলাই) সকালে মিনা থেকে ৩ হাজার বাসে করে হজযাত্রীদেরকে আরাফাতের ময়দানে সুশৃঙ্খলভাবে পৌঁছানো হয়েছে। কোনো ধরনের দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। হজযাত্রীরা আরাফাতের ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করে আল্লাহর কাছে মোনাজাতের মাধ্যমে জীবনের সব গুনাহ ক্ষমা করার জন্য প্রার্থনা করবেন।
হাজিরা মসজিদে নামিরা থেকে প্রদত্ত হজের খুতবা শ্রবণ, জোহর ও আসরের এক আজানের দুই ইকামতে কসরের সঙ্গে নামাজ আদায় করবেন। তাবুতে অবস্থানকারী হাজিরা সেখানেই নামাজ আদায় করবেন।
আরাফাতের ময়দান থেকে সূর্যাস্ত যাবার পর হাজিগণ রওনা দেবেন মুজদালিফার উদ্দেশ্যে। মুজদালিফায় পৌঁছে হাজিরা মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে আদায় করে সেখানে খোলা ময়দানে রাত্রিযাপন করবেন। শয়তানকে নিক্ষেপ করার জন্য সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে জীবাণুমুক্ত কংকর প্রত্যেক হজযাত্রীকে সরবরাহ করা হবে। ফলে হাজিদেরকে নিজ উদ্যোগে কংকর সংগ্রহ করতে হবে না।
ময়দান থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার (২০ জুলাই) ফজরের নামাজ পড়ে সূর্যোদয়ের পর মিনায় পৌঁছে হাজিগণ বড় জামারায় সাতটি কংকর নিক্ষেপ করবেন, পাশাপাশি পশু কোরবানি দিয়ে মাথা মুণ্ডন করে ঈদ আনন্দে মেতে উঠবেন।