করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে যে পাঁচটি টিকা বিশ্বময় সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে সেগুলো হলো যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও সুইডেনের ওষুধ কম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার যৌথ টিকা, যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার এবং জার্মানির বায়োএনটেকের যৌথ টিকা এবং যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার টিকা। বাংলাদেশে আগামী জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের টিকা আসবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে এবং আশা করা যায় যে জানুয়ারির শেষের দিকে এই টিকা দেওয়া শুরু হবে।
সরকার এ ছাড়া চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র থেকেও টিকা আনার চেষ্টা করছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। এটা খুবই ভালো একটি উদ্যোগ। বিভিন্ন দেশের টিকা থাকলে মানুষ বাছাই করতে পারবে সে কোন টিকাটি নেবে, কোনটি তার পছন্দ। কিন্তু সমস্যা অন্যত্র। সমস্যা হলো সন্দেহ।
গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে ভারতের স্বনামধন্য জরিপ সংস্থা ‘গকি’ সম্প্রতি তাদের পরিচালিত এক জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ভারতের ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ করোনার নব আবিষ্কৃত টিকার কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা নিয়ে সন্দিহান। মোট ১১ হাজার উত্তরদাতার মধ্যে ১০ শতাংশ টিকা নেবে না, ৪৩ শতাংশ এখনই না নিয়ে আরো কিছুদিন অপেক্ষার পক্ষপাতী এবং বাকি ৪৭ শতাংশ টিকা এখনই নিতে রাজি আছে। যারা টিকা নিতে রাজি তাদের মধ্যে মহিলারা টিকা নিয়ে ক্ষতি হয় কি না সে ব্যাপারে পুরুষদের চেয়ে বেশি সতর্ক। বয়সের সঙ্গে টিকার সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিষয়ে একটা সম্পর্কও পাওয়া যাচ্ছে। ৪৫-৬০ বছর বয়সী বা তদূর্ধ্বরা টিকা নেবেন, তবে এখনই নয়, বরং টিকা নেওয়ার পর অন্যদের শরীরে কী প্রতিক্রিয়া হয় তা দেখেশুনে যারা এখনই টিকা নিতে তৈরি তারা মূলত নবীন যুবা।
যুক্তরাষ্ট্রের এবিসি নিউজ ও ইপসোস মিলে ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে তাদের দেশে পরিচালিত একটি জরিপের ফল প্রকাশ করে বলেছে, এখন প্রতি ১০ জন আমেরিকানের মধ্যে আটজন কভিডের টিকা নিতে রাজি (প্রায় দুই মাস আগে যা ছিল প্রায় অর্ধেক), কিন্তু এদের মধ্যে ৪৪ শতাংশ অন্যরা টিকা নেওয়ার পর কী হয় তা দেখার জন্য আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে চায়।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকার কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা নিয়ে এই দ্বিধার কোনো ভিত্তি নেই। কারণ টিকা নেওয়ার পক্ষে আমাদের যে সুপারিশ তা বৈজ্ঞানিক ডাটানির্ভর। এ প্রসঙ্গে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টি এইচ চান স্কুল অব পাবলিক হেলথের সাবেক ডিন এবং রিসার্চ প্রফেসর বেরি ব্লুম বলেছেন, ‘করোনার এই টিকা নেওয়ার পর আপনার ক্ষতির বা মারা যাওয়ার ঝুঁকি গ্রোসারি শপে যাওয়ার ঝুঁকির চেয়ে অনেক কম।’ তিনি মনে করেন, টিকা দুটির নিরাপত্তা পর্যালোচনা করে প্রকাশিত এফডিএর মোট ১০৭ পৃষ্ঠার রিপোর্ট গণমানুষের পক্ষে পড়া সম্ভব নয়। তাই তারা হয়তো ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বাইরে অন্যরা নেওয়ার পরে ‘রিয়াল লাইফে’ কী হয় তা দেখার অপেক্ষায় আছে। তারা যখন দেখবে যে তাদের প্রতিবেশী বা পরিচিত কেউ কেউ টিকা নিয়েছে এবং তাদের কোনো সমস্যা হয়নি, তখন হয়তো তারা টিকা নেবে ও অন্যকে নিতেও পরামর্শ দেবে। তিনি বলেন, ‘এটা একটা ধীর প্রক্রিয়া। কিন্তু মানুষের বিশ্বাস বাড়ানোর কোনো ম্যাজিক পিল বা ম্যাজিক বুলেট তো আমাদের হাতে নেই।’
জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর এখন সে দেশে প্রতিদিন তিন হাজার মানুষ কভিড-১৯-এ মারা যাচ্ছে আর মৃতের সংখ্যা এর মধ্যেই তিন লাখ অতিক্রম করেছে। তাই নতুন টিকা বিষয়ে মানুষের দ্বিধাকে আমলে নেওয়ার পরও বিশেষজ্ঞরা মানুষকে আশ্বস্ত করতে চাইছেন। তাঁরা ব্যাখ্যা করেছেন যে কোনো নতুন টিকার পরীক্ষার সময় তাঁরা টিকা দেওয়ার পরের কয়েক সপ্তাহ স্বেচ্ছাসেবককে গভীর পর্যবেক্ষণে রাখেন। কারণ টিকার যা কিছু বিরূপ প্রতিক্রিয়া তা এই সময়টাতেই প্রকাশ পায়। কিন্তু ফাইজার-বায়োএনটেকের ৪৫ হাজার এবং মডার্নার ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের ওপর তাদের টিকা প্রয়োগের পর সে রকম কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। যুক্তরাজ্য ও ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশে পরিচালিত সর্বশেষ ৪৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফলে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে যে তাদের টিকাগ্রহীতাদের কারো কভিডের কোনো মারাত্মক লক্ষণ দেখা দেয়নি।
অবশ্য এডিনোভাইরাস ধরনের টিকা হওয়ায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সেই আশঙ্কাও কম। কারণ এ ধরনের টিকা বিশ্বে আগেও ব্যবহৃত হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। এমনকি অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরাই তা আবিষ্কার করেছেন। তাই এর মধ্যে এ ধরনের টিকার সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা বিরূপ প্রতিক্রিয়া কী কী হতে পারে সে সম্পর্কে অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের ধারণা রয়েছে।
প্রকাশিত তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী করোনার টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে ইঞ্জেকশন দেওয়ার স্থানে কিছুটা ফোলা, হালকা জ্বর, গা ম্যাজম্যাজ করা, কারো কারো ক্ষেত্রে গায়ে ব্যথা, তীব্র ক্লান্তি, কাঁপুনি দিয়ে শীত লাগার মতো জ্বর ইত্যাদি। গত ১৭ ডিসেম্বর অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে যে মার্কিন অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞরা করোনার টিকাগুলো নেওয়ার পর অ্যালার্জি সৃষ্টির আশঙ্কা প্রসঙ্গে বলেছেন যে তাদের বিশদ পর্যালোচনায় এই আশঙ্কা একেবারেই কম।
কিন্তু আবিষ্কৃত করোনা টিকাগুলোর বিরুদ্ধে নানা রকম অপপ্রচার বাজারে আছে। প্রকৃত সত্য হলো—করোনা টিকা নেওয়ার পর যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো হয় সেগুলোর সঙ্গে কভিড-১৯-এর কয়েকটি লক্ষণের মিল আছে। যেমন—হালকা জ্বর, কারো কারো ক্ষেত্রে কাঁপুনি দিয়ে শীত লাগা, গায়ে ব্যথা, মাথা ব্যথা, ক্লান্তি ইত্যাদি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে কভিডের বিরুদ্ধে টিকা নেওয়ায় কভিড হয়েছে। কভিড হলে ফুসফুস আক্রান্ত হতো, শ্বাসকষ্ট হতো, রক্তে অক্সিজেনের সম্পৃক্ততা কমে যেত এবং ফুসফুসের ক্ষতিটুকু এক্স-রে কিংবা সিটিস্ক্যান করলে স্পষ্ট হতো। তাই টিকা নিলে এ রকম হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। কারণ টিকায় করোনার কোনো ভাইরাস নেই। তাই কভিডে আক্রান্ত হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
একই কারণে টিকা নেওয়ার পর টিকাগ্রহীতার শরীরে ডিএনএ পরিবর্তনের কোনো কারণও নেই। টিকায় কোনো ডিএনএ নেই। কোনো আরএনএও নেই। ফাইজার-বায়োএনটেক ও মডার্নার এম-আরএনএ টিকায় যা আছে তা হলো করোনাভাইরাসের আরএনএ-এর অতি সামান্য খণ্ডিতাংশ, যা কোড হিসেবে ব্যবহার করে মানবশরীরে করোনাভাইরাসের গায়ের মুকুটসদৃশ কিছু প্রোটিন তৈরি করা হয়, যাতে জীবন্ত করোনাভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে শরীর তাকে প্রতিহত করতে পারে। আরএনএ-এর এই সামান্য খণ্ডিতাংশের শরীরের নিউক্লিক এসিডের অর্থাৎ ডিএনএ ও আরএনএ-এর কোনো পরিবর্তন ঘটানোর কোনোই আশঙ্কা নেই। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা কিংবা চীনের সিনোভ্যাক কিংবা রাশিয়ার গামালিয়া রিসার্চ ও রাশিয়ার সেনাবাহিনীর যৌথ গবেষণার টিকাগুলোতে কিন্তু কোনো আরএনএ-এর খণ্ডিতাংশও নেই। কারণ এগুলো এম-আরএনএ টিকা নয়। এগুলো এডিনোভাইরাসভিত্তিক টিকা অর্থাৎ সর্দিজ্বরের ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে সেগুলো দিয়ে তৈরি করা কভিড-১৯ প্রতিরোধের টিকা।
কেউ কেউ বলছেন, যেভাবে দ্রুতগতিতে এই টিকা উদ্ভাবিত হয়েছে তাতে এগুলোর মান ও নিরাপত্তার প্রশ্নে হয়তো আপস করা হয়েছে। এ সন্দেহটি অমূলক বলেই মনে হয়। কারণ এবারের করোনা মহামারি সারা বিশ্বকে যেভাবে একযোগে আতঙ্কিত করেছে তা অতীতে আর কোনো অসুখ বা মহামারি করেনি। ফলে সমগ্র মানবজাতিই বেঁচে থাকার জন্য দ্রুত একটি টিকা হাতে পাওয়ার ঐকান্তিক আগ্রহে অধীর ছিল। ধনী দেশগুলো টিকা গবেষণায় অনুদান দেওয়ার জন্য বিশাল বড় বড় তহবিল গঠন করে। সেই সঙ্গে সম্ভাবনাময় টিকাগুলোর বিপুল পরিমাণ ডোজ নগদ অর্থে অগ্রিম কিনে নেয়।
ফলে বিশ্বময় গবেষকদের কোনো অর্থ সংগ্রহের চিন্তায় বা সংকটে সময়ক্ষেপণ হয়নি। ফলে অনেক সময় বেঁচে গেছে। চিকিৎসাবিজ্ঞান, অণুজীববিজ্ঞান, বায়োটেকনোলজি, ওষুধ প্রযুক্তি ইত্যাদি বিজ্ঞানও এখন এত এগিয়েছে যে আগে এসব গবেষণার যে অংশটুকু করতে বছর লেগে যেত, এখন তা দুই সপ্তাহে করা সম্ভব।
আরো একটি বিষয়। মহামারির ব্যাপকতাও এখানে দ্রুত টিকা আবিষ্কারে পরোক্ষভাবে সহায়তা করেছে। প্রথমত, এর আগে আর কখনোই কোনো টিকা মহামারির একেবারে সর্বোচ্চ ব্যাপকতার পর্যায়ে ক্লিনিক্যাল স্টাডি করার সুযোগ পাওয়া যায়নি। এর ফলে রোগের শুরু থেকে চূড়ান্ত পর্যায় হয়ে আরোগ্য বা মৃত্যু—সব পর্যায়ে স্টাডির ফলাফল রেকর্ড করা গেছে। দ্বিতীয়ত, মহামারির সর্বোচ্চ অবস্থায় বিপুলসংখ্যক মানুষকে স্বেচ্ছাসেবক কিংবা রোগী হিসেবে স্টাডিতে সহজেই অন্তর্ভুক্ত করা গেছে। স্বাভাবিক অবস্থায় হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক পাওয়া এবং তাদেরকে ভাইরাসের সংস্পর্শে আনা অত্যন্ত কঠিন হতো। তৃতীয়ত, বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী, নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য, বর্ণ, শারীরিক গঠন, খাদ্যাভ্যাস, আবহাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের মানুষের তারতম্যগত ফলাফলগুলোও পর্যবেক্ষণ ও লিপিবদ্ধ করা গেছে। এভাবে বহু বিস্তৃত ভেরিয়েবলের বিপুল পরিমাণ ডাটা অল্প সময়ে সংগ্রহ করা গেছে। বায়োস্ট্যাটিসটিকসের আধুনিক ও উন্নত সফটওয়্যারগুলোর কল্যাণে অনেক সহজে এসব ডাটাকে প্রসেস করাও সম্ভব হয়েছে। অতএব সবগুলো ফ্যাক্টর মিলিয়ে দ্রুততম সময়ে উদ্ভাবনের জন্য টিকাকে মানের বা নিরাপত্তার দিক থেকে আপস করার প্রয়োজন হয়েছে বলে ফার্মাসিস্ট হিসেবে বিশ্বাস করি না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এবারের করোনাভাইরাসের টিকা সবচেয়ে কম সময়ে আবিষ্কৃত হয়েছে তাও সত্য নয়। এর আগে এইচ১এন১ ভাইরাসের অর্থাৎ ফ্লুর টিকা আরো কম সময়ে অর্থাৎ মাত্র কয়েক মাসের গবেষণায় পাওয়া গিয়েছিল।
ফাইজার-বায়োএনটেক এবং মডার্না তাদের টিকার আবেদনের সঙ্গে বিভিন্ন দেশে পরিচালিত তাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলোর যে বিপুল পরিমাণ ফলাফল জমা দেয়, তা পর্যালোচনা করে এফডিএ যথাক্রমে ৫৩ ও ৫৪ পৃষ্ঠার যে রিপোর্টটি তৈরি করেছে তাতে টিকার কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার পর্যালোচনা শেষে এফডিএ অত্যন্ত ইতিবাচক মতামত রেখেছে, যা পড়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের মিলিটারি ইমিউনাইজেশন প্রগ্রামের পরিচালকসহ ড. অ্যান্থনি ফাউসির মতো অনেক প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞও সন্তুষ্ট।
ফাইজার-বায়োএনটেক এবং মডার্নার টিকার কার্যকারিতা বিষয়ে কম্পানিগুলো বলেছে, তাদের টিকা প্রায় ৯৫ শতাংশ কার্যকর। তারা এর সপক্ষে তথ্য-প্রমাণও যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ, যুক্তরাজ্যের এমএইচআরএ, কানাডার কানাডা হেলথ, অস্ট্রেলিয়ার টিজিএ এবং অন্যান্য যেসব দেশ এই টিকা নিজ নিজ দেশে এর মধ্যে ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে তাদের সবাই তাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছে। সেসব সংস্থার বিজ্ঞানী বিশেষজ্ঞ মহল কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা বিষয়ে সেসব নথিপত্র পরীক্ষা করে তারপর অনুমোদন দিয়েছেন। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাও ৯০ শতাংশ কার্যকর পাওয়া গেছে। তারাও উপরিউক্ত সংস্থাগুলোর কাছে অনুমোদনের জন্য তাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সব ফলাফল জমা দেবে। ফার্মাসিস্ট হিসেবে বলতে পারি যে অন্তত প্রথমোক্ত চারটি সংস্থার বিচার-বিবেচনা ও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের মানদণ্ডের ওপর আমরা বিশ্ববাসী আস্থা রাখতে পারি। এরা অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তারা তাদের দেশের কোনো কম্পানির বা সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছার প্রতিফলন ঘটায় না।
এতকাল আমরা সবাই অপেক্ষায় ছিলাম, কবে করোনার টিকা আসবে। টিকা আসার পর এখন কেউ কেউ অপেক্ষা করছি অন্যদের শরীরে প্রতিক্রিয়া, পারলে সম্ভাব্য কোনো দীর্ঘমেয়াদি প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য। কিন্তু এই অপেক্ষা যে নিজের, পরিবারের ও জাতির জন্য কী মারাত্মক আত্মঘাতী তা আমরা সবাই যত দ্রুত বুঝতে পারব ততই মঙ্গল।
লেখক: অধ্যাপক ও পরিচালক, বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টার; সাবেক চেয়ারম্যান, ফার্মেসি বিভাগ; সাবেক চেয়ারম্যান, ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগ; সাবেক ডিন, ফার্মেসি অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়