করোনার প্রভাবে আর্থিক সংকটে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পত্রিকা, চাকরিহারা হয়ে পড়ছেন সংবাদকর্মীরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংকট মোকাবিলায় অগ্রসৈনিকের ভূমিকায় থাকা সংবাদশিল্প বাঁচাতে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে। নইলে সঠিক তথ্য প্রবাহের সংকটে কঠিন হয়ে পড়বে কোভিড উনিশের মতো বৈশ্বিক মহামারী মোকাবিলা।
করোনা সংকটের স্থবিরতার মধ্যে পেশাহীন হয়ে পড়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। এক সংবাদকর্মী বলেন, করোনা সংকটের কারণে অর্থায়ন হুমকির পড়েছে এমন নোটিশ দিয়ে গেল ২৫ মার্চ থেকে হঠাৎই বন্ধ করে দেয়া হয় তার পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠানিক সব কার্যক্রম। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আবারও পত্রিকাটি চালু করার ঘোষণা রয়েছে। তবে পুনরায় কর্মক্ষেত্রে ফেরা নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কা আছে এ সংবাদকর্মীর মনে।
করোনার অচলাবস্থার শিকার হয়েছে দেশের প্রায় সব গণমাধ্যম। বিজ্ঞাপন নেই, মাঠে নেই সার্কুলেশন ব্যবস্থা। এমন অবস্থায় হাতেগোনা কিছু প্রতিষ্ঠান বাদে প্রিন্ট সংস্করণ বন্ধ করে দিয়েছে প্রায় সব সারির পত্রিকা। ফলে ঝুকিঁর মুখে পড়েছে এ শিল্পের কর্মীদের জীবন-জীবিকা, প্রতিষ্ঠানগুলো। অথচ বন্দিদশার প্রেক্ষাপটে কোভিড নাইনটিন যুদ্ধক্ষেত্রে ঝুঁকি নিয়ে মাঠে এই সংবাদকর্মীরাই।
ডিবিসি নিউজের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে প্রণোদনা দিয়েছেন সেখানে নির্দিষ্টভাবে মিডিয়ার কথা নেই। কিন্তু আমি মনে করি এই প্রণোদনার মধ্য থেকে বা এর বাইরে থেকে প্রণোদনা দেয়ার সুযোগ আছে। এবং প্রয়োজনও আছে।
গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপপ্রচারের বিপরীতে লকডাউন সময়ে সাধারণ মানুষ সঠিক তথ্য পাচ্ছে মূলধারার গণমাধ্যম থেকেই। তাই সংকট উত্তরণের সহযোদ্ধা হিসেবে গণমাধ্যম বাঁচাতে এখনই বিশেষ পরিকল্পনা নিতে হবে সরকারকেই।
দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, অঘোষিত ছুটি বা লকডাউন যাই বলি না কেন যে কারণে সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালত বন্ধ। সেখানে কিন্তু কাজ করতে হচ্ছে গণমাধ্যম কর্মীদের। আমরা বিশ্বাস করি গণমাধ্যমের প্রবাহ যদি না থাকে অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে যে গুজব তা অব্যাহত থাকবে। এ কারণে প্রকৃত সত্য প্রচারের দায়িত্ব নিয়েই কিন্তু গণমাধ্যম তাদের কাজ করে পালন করছে।
গেল ৩০ মার্চ করোনা সংকটে আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে করণীয় ঠিক করতে তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন বেসরকারি টেলিভিশন ও পত্রিকার মালিক ও সম্পাদকরা। সেই বৈঠকে সংকট সমাধানে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন মন্ত্রী।