আশরাফ হোসেন পল্টু,মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল বাজারের মোস্তাক ষ্টোর নামক এক প্রতিষ্ঠিত মুদি দোকানে জাহাঙ্গীর বিশ্বাস (৪৮)নামে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে দোকানের মালিক মোস্তাক বিশ্বাস(৪৯)কে মারধর করে প্রায় ৩৬ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের শিকার মোস্তাক ষ্টোরের মালিক মোস্তাক বিশ্বাস সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন,তিনি নাকোল বাজারের একজন পুরাতন প্রতিষ্ঠিত মুদি দোকানদার । করোনা ভাইরাসের কারণে প্রতিদিনের ন্যায় শনিবার বিকেল ৫টার দিকে তিনি দোকানের কাজ-কর্ম সেরে বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ।
এমন সময় নাকোল গ্রামের মজিদ বিশ্বাসের পুত্র জাহাঙ্গীর বিশ্বাস পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তেল মাপা বাটখারা নেওয়ার অজুহাতে মোস্তাকের দোকানে ঢুকে দোকানের মধ্যেই তাকে জামার কলার ধরে এলোপাতাড়ি মারধর করে আহত করে। সন্ত্রাসী হামলায় আহত ব্যবসায়ী মোস্তাক বিশ্বাস অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তখন তাকে সন্ত্রাসীরা ছেড়ে দিয়ে দোকানের ক্যাশ বাক্স থেকে ৩৫ হাজার ৭’শত টাকা ছিনতাই করে সটকে পড়ে । জাহাঙ্গীর বিশ্বাস এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধরের সময় কেউ তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেনি । পরে তার পরিবারের লোকজন সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায় । বিষয়টি নিরসনের জন্য নাকোল বাজার ব্যবসায়ী সমিতিকে অবগত করা হলেও করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারনে অদ্যবধি কোন সমাধান হয়নি বলেও জানা যায়।
এবিষয়ে প্রতিবেশী দোকানদার বিদ্যুত সাহা বলেন, আমার সামনেই মোস্তাক বিশ্বাসকে দোকানেই মধ্যেই মারধর করা হয়েছে। তবে জাহাঙ্গীর প্রভাবশালী হওয়ায় মোস্তাককে মারধরের সময় তাকে প্রতিহত করতে পারিনি ।
নির্যাতিত ব্যবসায়ী মোস্তাকের ছোট ভাই আছাদুজ্জামান বিশ্বাস ওরফে আসাদ জানান,তার বড়ভাই মোস্তাক বিশ্বাস নাকোল বাজারের একজন নিরীহ ব্যবসায়ী । জাহাঙ্গীর অন্যায়ভাবে তার ভাইয়ের দোকানে ঢুকে মারধর করেছে এবং ক্যাশ বাক্স থেকে প্রায় ৩৬ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়েছে । বিষয়টি প্রতিবাদ করায় জাহাঙ্গীর বিশ্বাস ও তার লোকজন তাকে নারী নির্যাতন ও মিথ্যা চুরি মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করার ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে বলেও অভিযোগ করেন ।
এবিষয়ে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর বিশ্বাস বলেন, বাজারের মুদি দোকানদার মোস্তাকের নিকট তেল মাপা বাটখারা আনতে গিয়ে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ি । বাক-বিতন্ডার একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয় । হাতাহাতির মধ্যে মোস্তাকের মারধরের পরিমানটি একটু বেশি হয়ে যায় । তবে সে দোকানদারকে মারধরের বিষয়টি স্বীকার করলেও দোকান থেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, ওইদিন সন্ধ্যায় মোস্তাক,আছাদসহ তিনভাই লোকজন নিয়ে তার বাড়িতে হামলা করেছে এবং হামলার সময় তার বাড়ি থেকে দেড় লাখ টাকা হারিয়ে যায়। টাকাগুলি কে বা কারা নিয়েছে,তা তিনি সঠিক করে বলতে পারেননি ।
এবিষয়ে নাকোল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ শাহজাহান মিয়া জানান,তারা উভয়ই একই গোষ্টির লোক । সাধারণ বিষয় নিয়ে তাদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি কারণে সংঘাত সৃষ্টি হয়েছে । তবে সুযোগ বুঝে এর একটি সমাধান করা হবে ।
এবিষয়ে নাকোল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এস,আই প্রসেনজিৎ বিশ্বাস বলেন,বাজারের গোলমালের বিষয়টি তার জানা নেই । তবে কোন পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।