ইন্টারনেটের যুগে আইপি টিভি বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় গণমাধ্যম-এ,এইচ,এম তারেক চৌধুরী
বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রযুক্তির সহজলভ্যতায় আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও জনপ্রিয় হচ্ছে আইপি টিভি বা ইন্টারনেট প্রটোকল টেলিভিশন ।
হাতে হাতে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেটের কল্যাণে দেশের মানুষের বিনোদন ও তাৎক্ষনিক সংবাদের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে আইপি টিভি ।
আইপি টিভি দেশের জন্য সম্পূর্ণ নতুন একটা গণমাধ্যম হওয়ায় এর অনুমোদন এবং সম্প্রচার নিয়ে কিছু গণমাধ্যম বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে যা দেশের সুষ্ঠ ধারার সংবাদ পরিবেশনের পথকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আইপি টিভিকে অনেকে ফেসবুক বা ইউটিউব টিভির সাথে এক করে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছেন। আইপি টিভি এবং ফেসবুক ইউটিউব একই জিনিস নয়, আইপি টিভির সংবাদ এবং অনুষ্টানমালা অন্যান্য টেলিভিশন চ্যানেলের মতো শুধুমাত্র ফেসবুক বা ইউটিউবে শেয়ার করা হয়। আইপি টিভির নামধারী কিছু ইউটিউব এবং ফেসবুক ভিত্তিক চ্যানেল চাঁদাবাজি সহ নানাধরনের অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে তুলে ধরতে দেশের আইপি টিভিগুলো প্রতিনিয়তই বর্তমান সরকারের তৃণমলসহ সারাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডগুলোর বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা ও তাৎক্ষনিক সংবাদের মাধ্যমে তুলে ধরছে। বর্তমান সরকার গণমাধ্যম বান্ধব সরকার। সম্প্রতি বর্তমান সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ এর হাতেই দেশে ১ম ডিজিটাল একটি অন্যতম স্বতন্ত্র গণমাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে অনলাইন নিউজ পোর্টাল। তারই ধারাবাহিকতায় জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা ২০১৭ (সংশোধিত ২০২০) প্রনয়ন করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। তবে স্টেক হোল্ডারদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এই নীতিমালার কিছু বিষয় পরিবর্তন, পরিবর্ধন এনে দেশের প্রথম সারির আইপি টিভিগুলোকে নিবন্ধন এবং পূর্নাঙ্গ সম্প্রচারের অনুমতি দেওয়া উচিৎ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাহলেই একদিকে আইপি টিভির মতো জনপ্রিয় একটা ডিজিটাল মাধ্যম যেভাবে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবে একইভাবে রোধ হবে অপসাংবাদিকতা।
প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সাথে সাথে আমাদের বিনোদন গ্রহনের পদ্ধতিও প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে । একটা সময় মানুষ পত্র পত্রিকার মাধ্যমে খবরাখবর জানলেও রেডিও আবিষ্কারের ফলে মানুষ রেডিওর প্রতি ঝুঁকে পড়ে তারই ধারাবাহিকতায় স্যাটেলাইট চ্যানেল আসার ফলে মানুষের সেদিকে ঝুঁকে পড়তে দেখা যায়, এবং বর্তমানে আইপি টিভির প্রচলনের ফলে মানুষের এদিকে ঝুঁকে পড়তে দেখা যাচ্ছে। আইপি টিভি মূলত স্যাটেলাইট টিভির মতোই অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে তবে তাদের সম্প্রচার মাধ্যম হচ্ছে ইন্টারনেট, অর্থ্যাৎ ইন্টারনেটের মাধ্যমে আপনি চাইলেই বিশ্বের যেকোন জায়গা থেকে বসে মোবাইল বা ল্যাপটপের মাধ্যমে উক্ত টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্টানমালা উপভোগ করতে পারেন।
আইপি টিভি উপভোগ করার জন্য আপনার আলাদা করে সেটাপ বক্স বা ডিশ লাইনের প্রয়োজন নেই, শুধুমাত্র ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে আপনি ঝামেলাহীন তাৎক্ষনিক সংবাদ ও বিনোদন এবং অনুষ্ঠানমালা উপভোগ করতে পারবেন।
আমরা আনেকে স্যাটেলাইট টিভি ও আইপি টিভির পার্থক্য বুঝি না। স্যাটেলাইট টিভি তাদের অনুষ্ঠানমালা আপলিংক করে স্যাটেলাইটে প্রেরন করে, ক্যাবল অপারেটর স্যাটেলাইট থেকে সিগনাল গ্রহনের মাধ্যমে ডাউনলিংক করে ক্যাবলের মাধ্যমে আমাদের টিভিতে প্রচার করে । আর আইপি টিভির অনুষ্ঠানমালা ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিজস্ব অথবা ভাড়া সার্ভারে স্ট্রিমিং বা সম্প্রচার করে, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার বা আইএসপি উক্ত অনুষ্ঠানমালা রিস্ট্রিমিং করে ইন্টানেট ব্যবহাকারীদের মাঝে প্রচার করে।
উন্নত বিশ্বে আইপি টিভির বিশেষ কদর এবং জনপ্রিয়তা রয়েছে, এবং বর্তমানে বাংলাদেশেও ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় আইপি টিভির জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। ভাবা হচ্ছে আগামী দিনে আইপি টিভি গুলোই দেশের প্রধান গনমাধ্যমে পরিনত হবে এবং বিজ্ঞাপনের বড় বাজার সৃষ্টি মাধ্যমে সরকারকে রাজস্ব যোগান দিবে ।
বাংলাদেশের শীর্ষ আইপি টিভি ৭১ বাংলা টিভিসহ অন্যান্য স্বনামধন্য আইপি টিভি নিয়ে দেশের কিছু গণমাধ্যমে মিথ্যাচার আমাদেরকে বিস্মিত করেছে । ৭১ বাংলা টিভি গত ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ সালে তৎকালীন তথ্য মন্ত্রনালয়ের নিয়ম-নীতি অনুযায়ী নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে এবং কয়েকবার বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত শেষে তথ্য ও মন্ত্রণালয় থেকে পূর্নাঙ্গ সম্প্রচারের ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষায় আছে।
৭১ বাংলা টিভি তথ্য মন্ত্রনালয়কে অবগত করে পরীক্ষামূলক সম্প্রচারে আছে। আশা করা হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে এবং আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার লক্ষ্যে আইপি টিভিগুলো বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে।