এস আলমের চটপটির দোকান দেখিয়ে ২৩৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ

Loading

নিজস্ব প্রতিবেদক: চার ব্যাংক থেকেই দেড় লাখ কোটি টাকার বেশি লুটপাট করেছে এস আলম গ্রুপ। এর মধ্যে শুধু চটপটির দোকান দেখিয়ে ঋণের নামে ২৩৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে গ্রুপটি। দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র।

বিগত সরকারের সুবিধাভোগী গ্রুপটির দুর্নীতির ফিরিস্তি খুঁজতে দুদকের গঠিত টাস্কফোর্সের অনুসন্ধান প্রতিবেনে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর চটপটির দোকান। দেখতে ছোটখাটো হলেও এই প্রতিষ্ঠান ও দুটি রোস্তোরাঁর মাধ্যমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে কমপক্ষে ২৩৪ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে নওরোজ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

এই প্রতিষ্ঠানের মালিক নাজমি নওরোজ হলেও প্রকৃত অর্থে ঋণের টাকা যায় এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যাংকটির মালিক সাইফুল আলমের পকেটে।

এই অনিয়ম খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড় দুর্নীতিবাজ ধরতে এখনও দুদকের তৎপরতা বাড়েনি।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, চটপটির দোকান ও দুটি রেস্তোরাঁর বিপরীতে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ২৩৪ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ প্রদানে অনিয়মের অভিযোগে নওরোজ এন্টারপ্রাইজের মালিক নাজমি নওরোজ ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই ঋণ জালিয়াতির সঙ্গে এস আলমের চেয়ারম্যান ও ব্যাংকটির মালিক মো. সাইফুল আলম মাসুদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্যানুসন্ধানে উদঘাটিত হয়েছে।

ইতোমধ্যে বিএফআইইউ থেকে পাওয়া নথি বিশ্লেষণ করে দুদকের তথ্য বলছে, এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যাংকগুলো থেকে নামে-বেনামে লুটপাট করা হয়েছে। ইসলামী ব্যাংক থেকে এক লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক থেকে ১৩ হাজার কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩৯ হাজার কোটি টাকা ও ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে। এসব নিয়ে টাস্কফোর্সের পাশাপাশি দুদকের একাধিক টিম কাজ করছে।

যদিও দুদকের আইন বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম মনে করেন, বড় দুর্নীতিবাজ ধরার ক্ষেত্রের সক্রিয়তায় এখনও ঘাটতি রয়েছে।

মঈদুল ইসলাম বলেন, ‘সেই সময়কার দুদক এটা (এস আলম গ্রুপ) ধরতে পারেনি বা ধরবার চিন্তাই করেনি সরকারি প্রভাব থাকার কারণে। এখন পট পরির্তন হয়ে গেছে। এখনকার সরকার ও বাইরের পরিবেশ সবটাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে। সে দিক থেকে দুদকের যে তৎপতরা সেই ক্ষিপ্র গতি দেখছি না। দুদক যেন কেমন ঢিলেমি করছে।’

ইতোমধ্যে বন্ধ হওয়া এস আলমের আটটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে দুদক।