গাজীপুরে বিক্রয় করা জমি পুনরায় দখল চক্রের মূল হোতা শোভা ও সাথী ।

Loading

স্টাফ রিপোর্টার: গাজীপুরের কাশিমপুরে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও বিক্রয় কৃত জমির উপরে থাকা স্থাপনা ভাঙচুর করে পুনরায় দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে ।

এঘটনায় ভুক্তভোগী ইমতিয়াজ করিম বাদী হয়ে কাশিমপুর থানায় ওই প্রতারক চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট এবং চাঁদাবাজির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।

পরবর্তীতে পুলিশ ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামী জহিরুল ইসলাম রাজু ও কফিল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেন। মামলায় এজাহারভুক্ত অন্য আসামীরা হলো- নুরুন্নাহার সাথী, বাবু মিয়া, সাজু আহম্মেদ, শাখাওয়াত হোসেন শোভন, মোসাঃ সাহেরা বেগম, আনিসুর রহমান, মনিরুজ্জামান, মোসাঃ কামরুন্নাহার শোভা ও পারভেজ। এরা সবাই বর্তমানে পলাতক রয়েছে।

মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, গত ১২ মে সকালে উল্লেখিত আসামীসহ অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের একটি চক্র দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ক্রয়কৃত জমি দখলের উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। এসময় দারোয়ান আল আমিনকে মারধর করে বিশ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং আনিসুর রহমানের নামে একটি সাইনবোর্ড ওই জমিতে লাগিয়ে দিয়ে যান প্রতারক চক্রের সদস্যরা ।

পরবর্তীতে ১৫ মে রাত সাড়ে ১১টায় ওই চক্রের সদস্যরা পুনরায় হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা জমির বাউন্ডারী দেয়াল ভাংচুর করে এবং জমিতে থাকা মুরগীর খামারসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাংচুর ও লুটপাট করে। এছাড়াও তারা ওই জমিতে নির্মান কাজে ব্যবহৃত প্রায় সাত লাখ টাকা মুল্যের রড ও অন্যান্য মালামালও লুট করে নিয়ে যায়। এঘটনায় স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
এব্যাপারে মামলার বাদী ভুক্তভোগী মোঃ ইমতিয়াজ করিম বলেন, এই জমিটি আমি ২০১১ সালে ক্রয় করি। পরবর্তীতে ২০১৬ সাল থেকে জমি বিক্রেতা কফিল উদ্দিন ও তার পরিবারের সদস্যরা জমিটি পুনরায় দখল করার জন্য পায়তারা চালায়। বিভিন্ন সময়ে তারা একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়েও আমাকে হয়রানী করে।

এছাড়াও গাজীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, জমি বিক্রেতা কফিল উদ্দিনের মেয়ে নুরুন্নাহার সাথী বাদী হয়ে জমি ক্রেতা ইমতিয়া করিমের বিরুদ্ধে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এবং গাজীপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পৃথক পৃথক দুটি অভিযোগ করেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গাজীপুর সদর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মনোয়ার হোসেন তদন্ত পূর্বক একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন।
দাখিলকৃত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পুলিশী অনুসন্ধানে বাদী নুরুন্নাহার কর্তৃক অভিযোগের সত্যাতা পাওয়া যায়নি এবং অভিযোগের সপক্ষে কোন ধরনের কাগজপত্র ও প্রমানাদীও দাখিল করেনি। অন্যদিকে বিবাদী ইমতিয়াজ করিম তার ক্রয়কৃত জমির দলিলসহ যাবতীয় কাগজপত্র ও প্রমানাদী দাখিল করেন। এতে প্রতিয়মান হয় যে, বাদী নুরুন্নাহার বিবাদী ইমতিয়াজ করিমকে অযথা হয়রানীর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযোগকারী মোসাঃ নুরুন্নাহার ও তার বোন কামরুন নাহার শোভা পুর্বেও জমি বিক্রয়ের নামে একাধিক ব্যক্তির সাথে প্রতারনা করেছেন। এসব ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক জিডি ও মামলা রয়েছে।

জমি দখলের উদ্দ্যেশে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় দায়েকৃত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেখ মিজানুর রহমান বলেন, হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় এজাহারভুক্ত দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কফিল উদ্দিন ও তার মেয়েরা একই জমি একাধিকবার বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রীর মাধ্যমে প্রতারনা করে আসছে। তাই বিষয়টি অধিকতর তদন্তের পাশাপাশি প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে আমরা তৎপর রয়েছি।

উল্লেখ্য, প্রতারক চক্রের অন্যতম সদস্য নুরুন্নাহার সাথীর বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে একটি গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী হলেও অদ্যবদি তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।