![]()
কালের বিবর্তনে ক্রমশ পানিশূন্য হয়ে পড়ছে চলনবিল। এক সময়ে বিলের পানি দিয়েই ফসলের খেতে বিশেষ করে বোরো খেতে সেচ দিতেন চাষি। এখন বিল থেকে বন্যার পানি নামার পরেই প্রাকৃতিক জলাধারগুলো শুকিয়ে যায়। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল হয়ে পড়তে হচ্ছে। বর্তমানে ১০ ফুট অবদি গর্ত খুরে মেশিন বসিয়ে বোরো খেতে সেচ দেওয়ার প্রাণান্তর চেষ্টা করছেন চলনবিলের চাষিরা।

তাড়াশ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মো. ওহীদুজ্জামান বলেন, ক্রমাগত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনে প্রতিবছর পানির স্তর নিচে নামছে। চলনবিলের মধ্যেকার নদী, খাল ও নালাগুলো নতুন করে গভীরভাবে খনন করা হলে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমে আসবে। শনিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চলনবিলের বুকজুড়ে দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ বোরো খেত। অধিকাংশ চাষিরা মাটি খুরে তার মধ্যে ডিজেলচালিত ও বিদ্যুতচালিত মেশিন বসিয়ে বোরো খেতে সেচ দিচ্ছেন। যাদের খেত বিলের খালের ধারে তারা খালের মধ্যে মেশিন বসিয়ে পানি সেচ দিচ্ছেন।
চলনবিল অধ্যূষিত তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের ঘরগ্রামের ভুক্তভোগী বোরো চাষি রুবেল হোসেন, গোলাম হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন, সোহরাব প্রামানিক ও জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বোরো খেতগুলো চলনবিলের সাইট খালের ধারে। সমতল থেকে প্রায় ৫ ফুট নিচে খালের মধ্যে মেশিন বসিয়ে খেতে সেচ দিচ্ছি। তারপরও বেশি পানি পাচ্ছিনা। ধান পাকতে আরো দুই মাসের মত সময় লাগবে। এর মধ্যে পানির সংকট বাড়তে থাকবে। তখন খালের মাটি ৪ থেকে ৫ খুরে মেশিন বসিয়ে পানি তুলতে হবে।
তারা আরো বলেন, ১৩০ ফুট গভীরে পাইপ দিয়েও বোরো খেতের জন্য পানি অপ্রতুল। এ জন্য ধান চাষে খরচ বেড়ে গেছে। পানি সংকটে শান্তি নেই চলনবিল অঞ্চলের গ্রামের পরিবারগুলোয়। তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের কুন্দইল গ্রামের মুদি দোকানদার জাকার হোসেন ও ভেটুয়া গ্রামের সাইদুল ইসলাম নামে একজন কৃষক বলেন, আমরা বাড়ির আঙিনার উচ্চতার ১৫ থেকে ২০ ফুট নিচে গভীর নলকূপ বসিয়ে পানির ব্যবস্থা করেছি।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুননাহার লুনা বলেন, বোরো মৌসুমের শুরুতেই চলনবিলের নদী, খাল ও নালা থেকে পানি শুকিয়ে যায়। বর্ষা মৌসুমের আগে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর উপরে ওঠার কোন সম্ভাবনা নাই।


































