জাবিতে র‌্যাগিংয়ের নামে জুনিয়র শিক্ষার্থীর কান ফাটাল সিনিয়র শিক্ষার্থী ।

Loading

সাঈদ বিন ইসলাম জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে র‌্যাগিংয়ের নামে জুনিয়র এক শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একই হলের সিনিয়র এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থীর নাম শিহাব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৪৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থী। মারধরের শিকার মো.ফয়সাল আলম। তিনি একই হলের ও গণিত বিভাগের ৪৮তম আবর্তনের শিক্ষার্থী।
গত সোমবার (২২ জুলাই) রাত ১টার দিকে মারধরের এই ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার মো.ফয়সাল আলমসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাত ১টার দিকে শিহাব (মাকের্টিং-৪৭), সারোয়ার শাকিল (ইতিহাস-৪৭) এবং মোঃ ফয়জুল নীরবসহ (ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং-৪৭) আরও ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী গণরুমে এসে ফয়সালের পরিচয় জিজ্ঞেস করে। সর্দি জনিত কারণে গলায় সমস্যা থাকায় পরিচয় দেওয়ার সময় হলের নাম জোরে কেন বলতে পারেনি ফয়সাল এ জন্য তাকে মুরগি হতে বলে তারা। এ সময় ফয়সাল চার-পাঁচ বার মুরগি হলে তাকে গণরুমের জানালার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলে থাকতে বলা হয়। তার এক হাতের তালু সামান্য কাটা থাকায় ঝুলতে অস্বীকৃতি জানালে শিহাব এসে ফয়সালের কানের ওপর সজোরে থাপ্পড় দেয়। এতে তার কানে প্রচণ্ড যন্ত্রণা শুরু হওয়ার একপর্যায়ে কান থেকে রক্ত বের হতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে গণরুমের বন্ধুরা তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে এনাম মেডিকেল কলেজ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়ার পর তার বাসায় নিয়ে আসে।
এ ঘটনার সষ্ঠু বিচার চেয়ে মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থী আরও জানান, এ ঘটনার পর থেকে নীরবসহ বেশ কয়েক জন ফোনে আমাকে হুমকি দেয় যাতে আমি কারো সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো কিছু না জানাই। তারা আমাকে হলে থাকতে বারণ করে। আমি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচার চাই যাতে পরবর্তীতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শিকার কোনো শিক্ষার্থীকে আর না হতে হয়। আমি আগামীকাল ক্যাম্পাসে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাব।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিহাবকে মুঠো ফোনে একাধিবার কল দেওয়া হলেও তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ঘটনার দায় স্বীকার করে নীরব জানান, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘটনাটি ঘটে গেছে। কথা না শুনায় আমাদের এক সহপাঠী তার (ফয়সাল) গায়ে হাত তুলে। তবে বিষয়টি এত মারাত্মক হবে তা আমরা বুঝতে পারিনি।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমেদ জানান, আমি বিষয়টি জেনেছি। আজ রাত সাড়ে ৭টায় জরুরি মিটিং ডাকা হয়েছে। আবাসিক শিক্ষক, ওয়ার্ডেনসহ সবাইকে নিয়ে বসব। সবার সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে সঠিক বিচার নিশ্চিত করবো যাতে কেউ ভবিষ্যতে এরকম কাজ করতে সাহস না পায়।