নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার ধামরাইয়ে সংবাদ সংগ্রহকালে ধামরাই উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এবং দৈনিক যুগান্তরের সাংবাদিক শামীম খানকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত ধামরাই উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লা ও তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতরের দাবিতে এবং পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে সাংবাদিক হত্যা চেষ্টার ঘটনায় ধামরাই থানায় মামলা নিতে কালক্ষেপণ করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ধামরাই প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ও সাভার-আশুলিয়া, ধামরাই এবং সাটুরিয়া উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিকদের আয়োজনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হয়।
আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সময় টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার সাভার মোজাফফর হোসেন জয়ের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার সম্পাদক ও দৈনিক তৃতীয় মাত্রার স্টাফ রিপোর্টার সোহেল রানার সঞ্চালনায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে একত্বতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন ধামরাই রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি আদনান হোসেন, আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খোকা মাহমুদ চৌধুরী, আশুলিয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকী মানু, ধামরাই প্রেসক্লাবের সদস্য আব্দুর রউফ, দৈনিক স্বাধীন বাংলার স্টাফ রিপোর্টার মোঃ ইয়াসিন, দৈনিক কালবেলা ও এখন টেলিভিশনের সাংবাদিক হুমায়ুন কবির, একাত্তর টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার আশরাফ সিজেল, ঢাকা প্রকাশের সাংবাদিক সাকিব আসলাম প্রমুখ।
এসময় বক্তরা, অবিলম্বে পুলিশের সামনে সাংবাদিক শামীম খানকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় গাংগুটিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লাকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে তার বাহিনীর সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান। পাশাপাশি ধামরাই থানার কাওয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলামিন হাওলাদারের প্রত্যাহার দাবি এবং মামলায় কালক্ষেপণ করায় ধামরাই থানার ওসি আতিকুর রহমানের তীব্র নিন্দা ও হুশিয়ারি জানিয়ে বক্তারা বলেন, শনিবার দুপুরে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গাংগুটিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লা এবং তার বাহিনী পুলিশের সামনে সাংবাদিক শামীম খানকে হত্যাচেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শামীম খানের পরিবার মামলা করতে গেলে ধামরাই থানার ওসি প্রথমে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান এবং কালক্ষেপণ করে প্রধান অভিযুক্ত আব্দুল কাদের মোল্লাকে বাদ দিয়ে মামলা নেওয়ার শর্ত জুড়ে দেন। অবিলম্বে আব্দুল কাদের মোল্লা সহ অভিযুক্তদের গ্রেফতার এবং দায়িত্বে অবহেলার কারণে কাওয়ালী পুলিশ ফাঁড়ি ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ আলামিন হাওলাদারের শাস্তি নিশ্চিত না করা হলে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দিয়ে সাত দিনের সময় বেঁধে দেন সাংবাদিক নেতারা।
এসময় রিপোর্টার্স ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বাংলা টিভির ধামরাই প্রতিনিধি হুমায়ূন রশিদ, ধামরাই উপজেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আলোকিত প্রতিদিন পত্রিকার ধামরাই প্রতিনিধি মাসুদ রানা, দৈনিক জনকণ্ঠের ধামরাই প্রতিনিধি সোহেল রানা,দৈনিক স্বাধীন বাংলা পত্রিকার আশুলিয়া প্রতিনিধি মো: সোহাগ হাওলাদার , দ্যা নিউজ প্লাসের ধামরাই প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম, সারাদিন.নিউজের সাভার প্রতিনিধি হাসান ভুঁইয়া, যমুনা টেলিভিশনের ভিডিও জার্নালিস্ট কাজী শহিদুল্লাহ তনয়সহ শতাধিক স্থানীয় সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, নারী কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জেরে শনিবার দুপুরে গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লার নেতৃত্বে ইউনিয়নের হাতকোড়া গ্রামে সংবাদ সংগ্রহকালে যুগান্তরের সাংবাদিক শামীম খানকে পুলিশের সামনে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়। এসময় সাথে থাকা ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, কর্মরত পত্রিকার আইডি কার্ড (সাংবাদিক পরিচয় পত্র) সহ নগদ অর্থ ছিনিয়ে নিয়ে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে যায় সন্ত্রাসীরা। মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে অনেকগুলো সেলাই দেওয়া হয়েছে। সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সোমবার সকালে প্রধান অভিযুক্ত আব্দুল কাদের মোল্লাকে বাদ দিয়ে মামলা নেয় ধামরাই থানা পুলিশ।