ধামরাই ৭০ একর সম্পত্তির রাজস্ব পায়না সরকার।

Loading

মোঃ সম্রাট আলাউদ্দিন (ধামরাই প্রতিনিধি) : ঢাকার ধামরাইয়ে বিলকেস্টি মৌজায় ১নং খাস খতিয়ান ভুক্ত ৭০একর সরকারি সম্পত্তির অবৈদ দখলদারের হাতে।

কাগজ-পত্র ছাড়াই প্রভাব খাটিয়েএলাকার মানুষকে ভয় দেখিয়ে হাওয়ার উপরে প্রায় ৭০ একর সরকারী খাস জমি দখল করে বছরের পর বছর খায় মালিক মোঃ ফজলুল হকসহ কয়েকজন।সেই জমি আবার অন্যনের কাছে পত্তন রেখে প্রভাব খাটিয়ে দিনের পর দিন খাইতেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন ধরে সরকারী খাসজমি  দখলে রাখলেও প্রশাসনের  পক্ষে  সরকারের খাসজমি উদ্ধারের কোনো পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি।  ফলে সরকার ত্রিশ বছরে কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখাযায়। এই নিয়ে এলাকার লোকজন একত্র হয়ে প্রভাবশালী ফজলুল হকের  বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর মৌখিক ভাবে একটি অভিযোগ দিয়েছে বলে জানান স্হানীয়রা ।

স্থানীয়সুত্রে জানাযায়, ধামরাই উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নের বিলকেষ্টি মৌজার স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছাত্রছায়ায় একটি ভুমিদস্যু চক্র প্রায় ৭০একর সরকারী খাস জমি দখল করে ঘরবাড়ী ও চাষাবাদ করে বছরের পর বছর ভোগ করতেছে। দখলদারদের অনেকেই দালান-ঘরবাড়ী ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান করেছে।এছাড়া  জমিতে  ধান,গম, পাট, ভুট্টা সহ বিভিন্ন ধরণের ফসল  চাষ করে। এই থেকে বছরের কোটি কোটি টাকা আয় করলে ও সরকার এখান থেকে কোন রাজস্ব পাচ্ছে না। অবাক করার বিষয় হল  প্রশাসনের নাকের ডগায় শত কোটি টাকার মুল্যের এইসব খাসজমিতে পাকা বাড়ী নির্মাণ করলেও স্থানীয় ভুমি অফিস থেকে কোন ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে দাবি এলাকাবাসির।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানাযায়, ১৯৮০ সালের প্রথমদিকে প্রায় ৪০টি ভুমিহীন পরিবার কিছু ভুমিতে কাঁচা ঘরবাড়ী তৈরি করে বসবাস শুরু করে। এই সব ঘরবাড়ী আশে পাশে কিছু খাসজমি পরিস্কার করে বিভিন্ন ফসল চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকে। পরবর্তীতে এলাকার কিছু প্রভাবশালীদের নজর পরে ঐ ভুমির ওপর। পরে প্রভাবশালীরা নিজেদের জোর খাটিয়ে ভুমি দখল করে নেয়। আরও জানাযায় কয়েকটি দাগে এই ৭০ একর খাসজমি সুতিপাড়া ইউনিয়নের প্রভাবশালী গ্রাম্য সার্ভিয়ার (আমিন) মৃত বাছের আলী ছেলে মোঃ রুবেল হোসেন, আলহাজ্ব হামে আলী, মোঃ জিয়ারউদ্দিন, মোঃ আয়নাল হকসহ কিছু ব্যাক্তির দখলে রয়েছে। এরা নিজেরা কিছু চাষ করে বাকি জমি অন্য লোকের কাছে পত্তন দিয়ে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতি বছর। আবার কেউ কেউ খাসজমির ওপর পাকা বাড়ীঘর এবং ব্যাবস্য বানিজ্য প্রতিষ্ঠিান করেছে।

এলাকাবাসির  কাছ থেকে আর জানাযায়, এক সময় এই জায়গাটি নদী ছিল সেই নদী ভরাট হয়ে নদীর চর পরেছে কিন্তু নদীটি ভাংতে ভাংতে উত্তর দিকে চলে গেছে সেটার প্রমাণ হল কাগজপত্র। যেমন সি.এস ও এস এ. পরচায় নদী লেখা আছে এবং বর্তমানে আর এস পরচায় লেখা মালিক বাংলাদেশ সরকার জমির শ্রেণী নদী,খাল,নাল,বাড়ী,রাস্তা, যা এক নং খাস খতিয়ান ভুক্ত জায়গা সেই জায়গা নিজের প্রভাব খাটিয়ে জোর করে সরকারকে না জানিয়ে মোঃ বাছের আমিন নিজে ভোগদখল করে খাচ্ছে বছরের পর বছরধরে।কেউ বলতে গেলে তাকে প্রানে মেরে ফেলার হুমকি দিতেন বাছের আমিনসহ কয়েকজনে। এর ভয়ে মুখ খুলতে রাজি হয় না এলাকার লোকজন।এই ব্যাপরে এলাকাবাসি জানায় বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে মৌখিক  অভিযোগ করে ও কাজ হয়নি।

এই ব্যাপারে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, এই জমিতে এক সময় নদী ছিল সেই নদী ভাঙতে ভাঙতে উত্তর দিকে রেকর্ডীয় জমি ভেঙে নদী হয়েছে আর নদী ভরে জমিতে পরিণত হয়েছে। তবে এই জমি সরকারী খাস জমি।
এই ব্যাপারে জমি পত্তনকারী ছানোয়ার হোসেন ও মৃত হায়াত আলীর স্ত্রী  বলেন, আমরা দুইজনই বাছের আলীর কাছ থেকে পত্তন নিয়েছি, বাছের আলী মারা যাওয়ার পর তার ছেলে রুবেল হোসেনের কাছ থেকে নিয়েছি। ছানোয়ার হোসেন বলে আমি এক একর ৫০হাজার টাকা দিয়েছি আর হায়াত আলীর স্ত্রী বলে আমি ৯০ হাজার টাকা দিয়েছি। তারা আর বলেন আমাদের কোন কাগজ দেয়নি।

এই ব্যাপারে জমি দখলকারী মৃত বাছের আমিনের ছেলে মোঃ রুবেল হোসেন,হামে আলী,জিয়ারউদ্দিন,আয়নাল হক, ফজলুল হক, বলেন, আমরা সরকারের কাছ থেকে কিছু বন্ধবস্ত পেয়েছি সেই বলে জমি খাইতেছি।

এই ব্যাপারে সুতিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ রেজাউল করিম রাজা বলেন, বিলকেষ্টি মৌজায় বেশ কিছু  খাসজমির ব্যাপারে জেনেছি। কিন্তু খাসজমিতে ঘরবাড়ী তৈরির ব্যাপারে আমাকে কেউ কিছু জানায় নি। বরং আমার কাছ থেকে কেউ কোন অনুমতি নেইনি।
এই ব্যাপারে সোয়াপুর ভুমি অফিসের সহকারী অফিসার মোঃ গরিব শাহ বলেন, এর আগে আমরা জানতাম না  যে সুতিপাড়া ইউনয়নে এত বড় খাসজমি আছে।
এই ব্যাপারে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরকারী খাসজমিতে অনুমতি ছাড়া কেউ কোন স্থাপনা এমনকি টিনের পাকা ঘর পর্যন্ত তৈরি করতে পারবে না। এই বিষয়ে খোজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।