বর্তমান সময়ে জলবায়ুর পরিবর্তনের কারনে প্রকৃতি থেকে হঠাৎ করেই হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। ঠিক সেই সময়ে হারিয়ে যাওয়া পাখিদেরকে ফিরিয়ে আনতে যশোরের শার্শা উপজেলার প্রকৃতি বন্ধু উদ্ভাবক মিজান নিয়েছেন এক ব্যতিক্রমী উদ্দ্যোগ।
গত কয়েক বছর ধরে তিনি প্রকৃতির গাছে গাছে মাটির কলসি বেঁধে দিয়ে পাখিদের জন্য তৈরী করেছেন নিরাপদ আবাসস্থল। একান্ত নিজের উদ্দ্যোগে এবং নিজেস্ব অর্থায়নে গাছে গাছে তিনি বেঁধে চলেছেন এই মাটির কলসি। উদ্ভাবক মিজানের প্রকৃতি নিয়ে ভাবনা বন্য প্রাণিদের নিয়ে ভাবনা এবং তাদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল তৈরীকে স্বাগত জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন, বন বিভাগ, প্রাণি সম্পদ বিভাগ সহ সব শ্রেণির জনগণ।
প্রকৃতির উপর ভালবাসা বন্যপ্রাণি তথা পাখিদের প্রতি ভালবাসায় আসক্ত তার সীমতি মেধাকে কাজে লাগিয়ে তাদের আবাসস্থল তৈরী করে শুরু করেছেন প্রকৃতি ও পাখি সংরক্ষণ কর্মসূচী। এবং তিনি মনে করেন পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় এবং বিলুপ্তপ্রায় পাখিদের সংরক্ষণের এই কাজে তার সাথে এগিয়ে আসবে অনেকে। গাছে গাছে মাটির কলসি বেঁধে তার শুরু করা এই কার্য্যক্রম তিনি দীর্ঘায়ীত করতে চান। উদ্ভাবক মিজান বলেন, ঝড়-বৃষ্টিসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাখির বাসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একারনে ডিম এবং বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বংশ বিস্তার কমে যাওয়ায় দেশীয় পাখির সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
আমার মতো করে সবাই এগিয়ে আসলে এবং আমাকে সরকারী ভাবে বা বেসরকারী এবং সেচ্ছাসেবক সংগঠন গুলো যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে ভবিষ্যতে এই কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়বে গোটা দেশ ব্যাপি। তিনি আরো বলেন, এক সময় প্রকৃতিতে পাখির অভায়ারণ্য বিরাজ করতো সকালের ঘুম ভাংতো পাখির সুমধুর কলতানে কিন্তু আজদেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের হারিয়ে যাওয়ার কারনে প্রকৃতি তার সৌন্দর্যও হারিয়ে ফেলেছে।
এ কারনেই প্রকৃতি এবং বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ করতেই আমার এই উদ্দ্যোগ। প্রাকৃতিক ভারসম্য ও জীব বৈচিত্র রক্ষার এমন উদ্দ্যোগকে অভাবনীয় ভাবে প্রশংসা কুড়াবে বলে জানান উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জয়দেব কুমার সিংহ। তিনি আরো বলেন, উদ্ভাবক মিজানের প্রকৃতি ও বন্য প্রাণিসহ জীববৈচিত্রের উপর এমন কর্মপরিকল্পনার জন্য তাকে আন্তরিক ভাবে সাধুবাদ জানায়। তিনি যখন যা সাহায্য সেবা আমাদের কাছ থেকে চাইবে আমরা তাহার সে সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দেবো।
উল্লেখ্যঃ যশোর জেলার শ্যামলাগাছী গ্রামের তৃণমুল থেকে বেড়ে উঠা মটর ম্যাকানিক মিজান আজ দেশের একজন সেরা উদ্ভাবক হিসাবে খেতাব অর্জন করেছেন। তার একের পর এক নতুন নতুন উদ্ভাবনায় প্রশংসা সম্মাননা সনদ সহ পেয়েছেন পদক ও উপহার।