শার্শা থানার এসআই মামুন লুঙ্গী,গেঞ্জি পড়ে ছদ্ববেশে খুনের আসামীকে গ্রেফতার করলেন

Loading

মোঃ রাসেল ইসলাম,বেনাপোল(যশোর)প্রতিনিধি: যশোরের শার্শায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থী শাহপরান হত্যার মূল আসামি হাফিজুর রহমান গত(১১/০৬/২০১৯ইং)তারিখ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে, শার্শা থানা পুলিশের একটি চৌকস দল আসামী হাফিজুরকে ধরতে সক্ষম হয়। শাহপরান হত্যার মোটিভ এবং আসামী গ্রেফতারে পুলিশি অভিযানের অনুসন্ধানে জানা যায়।আসামী হাফিজুর রহমানের স্ত্রী, (হাসিনা বেগম) এর মোবাইল কল লিষ্ট দেখে আসামী গ্রেফতারে দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা এস আই মামুন সহ শার্শা থানা পুলিশের একটি চৌকস দল খুলনা জেলার তেরখাদা, এবং দিঘলিয়া থানার ছদ্ববেশে তল্লাশী চালায়।দুদিন ধরে তল্লাশী শেষে এস আই মামুন এবং তার দল দিঘলিয়া মাদ্রাসা থেকে খুনের আসামী হাফিজুরকে ধরতে সক্ষম হয়।

সেখান থেকে তারা আসামীকে শার্শা থানায় নিয়ে আসে এবং আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারুক্তি মুলক জবানবন্দী প্রদান করে। চাঞ্চল্যকর শাহপরান হত্যাকারী হাফিজুরের গ্রেফতারের বিষয় নিয়ে শার্শা উপজেলার নাভারন সার্কেলের এ,এস.পি জুয়েল ইমরান এবং শার্শা থানার ওসি গ্রেফতারের পরদিন অর্থাৎ (১২/০৬/২০১৯ইং) তারিখ শার্শা থানায় একটি সংবাদ সম্মেলনে সংবাদিকদের মুখোমুখি হন এবং হত্যাকারী আসামী হাফিজুরের গ্রেফতারের বিষয়ে স্থানীয় সংবাদিকদের অবহিত করেন। এদিকে ৩১/০৫/২০১৯ ইং তারিখ শার্শা উপজেলার পোর্ট থানাধীন কাগজপুকুর খেদাপাড়া (হফিজুর) কোরআন মাদ্রাসার ছাত্র (শাহপরান) হত্যার পর থেকে হত্যাকারী ঐ মাদ্রাসার শিক্ষক হাফিজুর মাদ্রাসা কমিটি’র কয়েকজন সদস্যের সহায়তায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। হত্যার দু’দিন পর একই উপজেলার গোগা ইউনিয়নের গাজিপাড়া এলাকায় আসামি হাফিজুরের বাসা থেকে মৃত অবস্থায় শাহ পরানের লাশ উদ্ধার করে শার্শা থানা পুলিশ।

আসামির খোজ পেতে শার্শা থানা পুলিশ আসামি হাফিজুরের নিকট আত্মীয় চায়না বেগম (২৫)স্বামী, মুক্তচ্ছর বিল্লাহ শার্শা মসজিদের ইমাম,হাসিনা বেগম (২৮)স্বামী খুনি হাফিজুর রহমান,রেশমা খাতুন (৩৫)স্বামী,হেদায়েত উল্লাহ (৪৫)পিং আব্দুল আহাদ এবং মোনায়েম হোসেন (৪৫)পিং,শামসুর রহমান,গ্রাম-চৌগাছা,মোট (পাঁচ)জনকে জিজ্ঞাসা বাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে, জিজ্ঞাসা বাদের পরে মুছলেখা নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ছেড়ে দেওয়া হয়। হেদায়েত উল্লাহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে আমার বোনাই ওয়াহেদ দালাল সৈয়দার মাধ্যমে অর্থ দিয়ে আমাদেরকে শার্শা থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন। সেই মোতাবেক স্থানীয় সংবাদকর্মীরা রিপোর্টটি প্রকাশ করেন। কিন্তু বরাবরি শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ মসিউর রহমান টাকা লেনদেন এর বিষয়টি নাকচ করে দেন।

ওসির বক্তব্য স্থানীয় সাংবাদিকদের কানে পৌছালে তারা আরো গভীর ভাবে অনুসন্ধান করতে শুরু করে। অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে দেখা গেছে,শার্শা থানা সংলগ্ন বসবসকারী স্বীকৃতি প্রাপ্ত দালাল সৈয়দ আলী সৈয়দাই সকল কাজের নাটের গুরু। ধৃত ঐ ৫(পাঁচ) নারী-পুরুষকে শার্শা থানা পুলিশ নি:শর্ত মুক্তি দিলেও ধৃর্ত সৈয়দ আলী সৈয়দা ঐ ৫(পাঁচ) নারী-পুরুষের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়। গ্রামবাসি সুত্রে জানা যায় অর্থেও রিপোর্টটি প্রকাশ হওয়ার পর দালাল সৈয়দা তার কাছে গচ্ছিত অর্থ হেদায়েত উল্লাহার কাছে ফিরিয়ে দেন।সৈয়দার সাথে ঐ পাচঁ নারী পুরুষের মধ্যে টাকা লেনদেনের বিষয়টি শার্শা থানা পুলিশের ওসি মসিউর রহমান এবং তদন্ত কাজে নিয়োজিত এসআই মামুন কোন ভাবেই জানতে পারেনি। শার্শা থানার পুলিশ লেনদেনের বিষয়টি সাংবাদিদের কাছ থেকে জেনে হতবাক হয়ে যান। অনুসন্ধানে আরো বেড়িয়ে আসে অর্থ লেনদেন ও ফেরৎ এর বিষয়টি দালাল সৈয়দা পর্যন্ত এসে থেমে যায়। এব্যাপারে থানা এখনও বিষয়টির সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন।

শার্শা থানার এসআই মামুন বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কঠোর নির্দেশে ও থানার ইনচার্জ এর নির্দেশনা মেনে আসামী হাফিজুরকে আটক করার জন্য রাতদিন না খেয়ে,না ঘুমিয়ে নিজের টাকা খরচ করে লুঙ্গী,গেঞ্জি পড়ে ছদ্ববেশে অতি গোপনীয়তা রক্ষা করে খুলনা পাঁচ/সাতটি মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে অবশেষে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আসামীকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত আমি নিজের পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন রাখি। সেখানে অর্থ লেনদেনের বিষয়টি ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বলে এসআই মামুন দাবী করেন।

ওসি মসিউর রহমান এ ব্যাপারে ভিডিও বক্তব্য দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, শাহপরান হত্যায় যদি কোন প্রতারক,দালাল চক্র ও পুলিশের কোন কর্মকর্তা টাকা লেনদেনের ব্যাপারে জড়িত থাকার প্রমান মেলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে যথাযথ ভাবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সাংবাদিকদের আস্বস্ত করেন।