এনামুল হক,সুন্দরগঞ্জ(গাইবান্ধা)প্রতিনিধিঃ এক সপ্তাহ থাকি খুবে কষ্ট করি দিন-আইত পার করবার নাকছি বাবা এই দুনিয়াত কেউ নাই যে,হামাক এক পোয়া চাউল দিয়া সাহায্যে করবে। বউ বেটা -বেটিক নিয়া হামরা খুব কষ্ট করি চলবার নাকছি হামাক দেখার মত কেউয়ে নাই । খালি শুনি ওমুক তুমুক চাউল সুদ্ধা ম্যালা কিছু পায় হামরা কি কছছি হামাক দেয় না ক্যা।হামরা কেংকা করি বাচঁমো বাবা চোখের জলে অনেক বেদনাভার কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের মধ্য সাহাবাজ ও আকন্দ পাড়াস্থ নুরুল ইসলাম(৫৬)আব্দুল কুদ্দুস মোল্লা(৬০)আলিমউদ্দিন(৫০)রমজান আলী(৭৪) বাবু মিয়া( ৫০)আলম মিয়া(৪৫)মনোয়ার(৪০) ।
করোনা ভাইরাসের নামটা শুনেছে তারা এখনো বুঝেনা করোনা ভাইরাস কতটা ভয়াবহ ও করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কল্পে কি করতে হবে ।
জানা গেছে, উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের মধ্য সাহাবাজ ও আকন্দ পাড়াস্থ বয়োবৃদ্ধ রমজান আলী,আব্দুল কুদ্দুস মোল্লা, দিনমজুর নুরুল ইসলাম, আলিমউদ্দিন,বাবু মিয়া,মনোয়ার হোসেন,আলম মিয়া পরিবারে সদস্যদের নিয়ে খুব কষ্ট করে দিনাতিপাত করছেন। তারা বলেন এ দুঃসময়ে খেয়ে পরে বেঁচে থাকাই এখন আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ কিন্তু সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম চললেও আমরা তা পাচ্ছি না।
আকন্দ পাড়া ও মধ্যে সাহাবাজ পাড়ার ভ্যান চালক আলিমউদ্দিন ও আলম মিয়া জানান রাস্তাঘাটে ভ্যান নিয়ে বের হতে পারছিনা ও আগের মত লোকজন চলাচল করেনা তাই উপার্জন নাই । আর উপার্জন নাহলে পরিবারের লোকজনকে খাওয়াবো কি। আমরা তো কাজ হারিয়ে এখন বেকার। পেটে যখন খাবার জুটছেনা তখন সন্তানের দুধ ও বয়োবৃদ্ধ মায়ের ওষুধের খরচ জোগান দিবে কে এমন প্রশ্ন তাদের। অপরদিকে দিনমজুর মনোয়ার হোসেন ও নুরুল ইসলাম,বাবু মিয়া জানান, শুধু গ্রামের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল কাজের।
সাম্প্রতিক সময়ে নোভেল করোনা ভাইরাসের কারণে কোন কাজই তারা পাচ্ছে না। কাজ না পেয়ে তারা বেকার হয়ে পড়েছে।তাদের পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে খুব কষ্ট করে দিন পাড় করছে। তারা বলেন, প্রতিদিন ডাল-ভাতই তাদের প্রধান খাবার। সেটাও সঠিক সময়ে দুইবেলা জুটছে না।
বয়োবৃদ্ধ রমজান আলী ও আব্দুল কুদ্দুছ মোল্লা বলেন “আমরা তো কারো কাছে হাত পাততে পারি না।সরকারের অঘোষিত লক ডাউনে পরিবার পরিজন নিয়ে এখন ঘরে বসা। আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ। সরকার যদি সাহায্য না করে তাহলে বাঁচার কোন রাস্তা নাই। আমরা খুবই কষ্টে আছি।
এ সময় বাবু মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কত মেম্বার,চেয়ারম্যানের কাছে গেছিলাম কোনদিন একটা কিছু দেয় নাই হামাক। ভাতা কার্ডের জন্য টাকা লাগে এমন কি আমার প্রতিবন্ধী নাতির কার্ড করে নেয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে ঘুরাঘুরি করে কোন সুরহা পায়নি ।
ভ্যান চালক আলম মিয়া বলেন, আমি গরীব মানুষ, দিন এনে দিন খাই। আমার মা বয়োবৃদ্ধ হাটতে চলতে পারেনা তাই তার একটি ভাতা কার্ডের জন্য মেম্বার চেয়ারম্যানের কাছে কত ঘুরছি তবুও তাদের মনে দয়া হয়নি ।আলম মিয়া আরো জানান,ভোটের সময় আসলে বাড়ী বাড়ী শ্লিপ দিয়া যায় আর এখন এই দুঃসময়ে কোন ভালো মানুষের চেহারাটাও চোখে পড়েনা কেন তারা এখন গরীবদেরকে সহায়তা করতে পারেনা। তারা এখন কোথায়?
এ বিষয়ে সর্বানন্দ ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।