স্টাফ রিপোর্টারঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট ও মন্তব্য করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে মোস্তাফিজুর রহমান খান মুকুল(৩৫) নামের এক ভূয়া সাংবাদিক কে গ্রেফতার করেছে সিংগাইর থানা পুলিশ ।
সিংগাইর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ভোরের কাগজ প্রতিনিধি মাসুম বাদশাহ’র দায়ের করা মামলায় বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) দিবাগত ১০ টা ২৫ মিনিটে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেন।
মোস্তাফিজুর রহমান খান মুকুল দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম ও চাঁদাবাজি করে উপজেলার সর্বত্র দাপিয়ে বেড়িয়ে আসছিল। তার বিরুদ্ধে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও নিরাপরাধ মানুষকে জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। চাহিদা মোতাবেক টাকা না দিলে সমাজের নিরাপরাধ ও সম্মানিত মানুষের বিরুদ্ধে অপমানজনক , আপত্তিকর মন্তব্য প্রচারণা চালানো হতো। মিথ্যা ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা। প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে সখ্যতা থাকায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেও প্রতিকার পেতনা ভূক্তভোগীরা।
গ্রেফতারকৃত মুকুল ধল্লা ইউনিয়নের ফোর্ডনগর খানপাড়া গ্রামের মৃত জামান মাদবরের পুত্র। সে নিজেকে আইপি টিভির প্রতিনিধি ও নিবন্ধনবিহীন নাম সর্বস্ব অনলাইন পোর্টাল সত্য প্রকাশের পরিচয় দিয়ে এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিল। তবে ওই আইপি টিভির পরিচালক সময়ের খবর ২৪ কে জানায়, মুকুল নামের কেউ তাদের প্রতিনিধি নেই।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক মাসুম বাদশাহ’র বিরুদ্ধে তার ফেসবুক আইডি “মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান মুকুল ” থেকে বিভিন্ন সময় অপমানজনক , আপত্তিকর ও ছবি বিকৃিত করে মিথ্যা-বানোয়াট প্রচারণা চালিয়ে আসছিল।
একই পোস্ট তার নিবন্ধনবিহীন সত্য প্রকাশেও শেয়ার করেন এউ মুকুল । এতে মাসুম বাদশাহ’র সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন হলে, তিনি থানায় মামলা দায়ের করেন। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক উপজেলার ফোর্ডনগর গ্রামের জনৈক রনির কাছ থেকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে এই মুকুলের বিরুদ্ধে । ভূক্তভোগী রনি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেও কোন এক অলৌকিক শক্তিতে প্রতিকার পাচ্ছেন না বলেও জানান সময় খবর ২৪ কে। এদিকে, সাংবাদিক নামধারী মুকুল গ্রেফতারের খবরে এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও তার শাস্তির দাবীতে ঝড় ওঠেছে। মামলার বাদী ও থানা পুলিশকে হয়রানির শিকার অসংখ্য ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন সাধুবাদ। গ্রেফতাকৃত মুকুল ইতিপূর্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৫৭ ধারার মামলায় হাজত বাস করেছে। বর্তমানে মামলাটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে ।
ধল্লা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, মুকুলের নিজস্ব কোন পেশা নেই। সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন সময় ফেসবুকে নেতিবাচক পোস্ট দিয়ে লোকজনকে জিম্মি করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে আসছিল । তাকে গ্রেফতার করায় থানা-পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ধল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।
এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ আবু হানিফ বলেন, গ্রেফতারকৃত মুকুলের কাছ থেকে তাহার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন টি জব্দ করে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।