জন দূর্ভোগের ছবি তুলতে গিয়ে ঝালকাঠির এনডিসি কতৃক সাংবাদিকদের বাধাঁ

Loading

ঝালকাঠি প্রতিনিধি: দেশে চলমান করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গনপরিবহন বন্ধ করতে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত ২৫/০৩/২০২০ইং তারিখ বুধবার বিকেলে বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের ঝালকাঠি প্রেট্রোল পাম্প মোড় এলাকায় জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) আহমেদ হাসানের নেতৃত্বে একাধিক মেজিষ্ট্রেট নিয়ে গঠিত একটি টিম ভ্রাম্যমান আদলত পরিচালনা করেন।

এ সময় স্থানীয় সাংবাদিকরা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার কারনে সৃষ্ট জনদূর্ভোগের ছবি তুলতে গেলে ভ্রাম্যমান আদলতের নির্বাহী মেজিষ্ট্রেট ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) আহমেদ হাসান স্থানীয় সাংবাদিকদের ছবি তুলতে বাঁধা প্রদান করেন।

এ বিষয় ঘটনা স্থানে উপস্থিত ঝালকাঠির সাংবাদিক দেলোয়ার হোসেন ও রিয়াজ মোর্শেদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা জানান, ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় ঘটনা স্থলে জনদূর্ভোগ শুরু হওয়ার খবর পেয়ে আমরা ঘটনা স্থলে যাই এবং সেখানে গিয়ে সাংবাদিক রিয়াজ মোর্শেদ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বরিশাল এবং খুলনা রুটে মাহিন্দ্র এবং বিভিন্ন যান যোগে নারী পুরুষ ও শিশুরা দক্ষিনাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।

গোধুলি লগ্নে এনডিসির নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে মাহিন্দ্র ও গনপরিবহন যোগে আসা নারী পুরুষ ও শিশু যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন, অপরদিকে গাড়ী চালককে জরিমানা করছেন।

এ সময় ঘরে ফেরা দূর্ভোগের সম্মুখীন যাত্রীদের ছবি তুলতে গেলে বিষয়টি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এনডিসি দেখতে পেয়ে আমাদের ডাক দেন। তার কাছে যাওয়ার সময় দূর থেকে জন সম্মুখে আমাদের কাছে জানতে চান আমরা বিনা অনুমতিতে কেন ছবি তুলছি। একই সাথে তিনি রিয়াজের পরিচয় জানতে চাইলে রিয়াজ একজন সংবাদ কর্মী পরিচয় দিলে এনডিসি আহমেদ হাসান রিয়াজকে বলেন, আপনি আমাদের ছবি তুলছেন কেন ? আমাদের অনুমতি নিয়েছেন ? অনুমতি না নিয়ে কেন ছবি তুলছেন ? ছবি বা ভিডিও করতে আমাদের অনুমতি লাগবে। অনুমতি ছাড়া ভিডিও করা বা ছবি তোলা যাবে না। সাংবাদিক ও এনডিসির কথোপকথনের সময় ৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে প্রকাশ হলে ঝালকাঠি জেলা সহ বিভিন্ন এলাকার সাংবাদিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রয়া দেখা দেয়।

এ বিষয় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) আহমেদ হাসানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, সাংবাদিকগন যেভাবে বলেছে আসলে বিষয়টি প্রকৃত ভাবে সেরকম হয়নি। কোভিড-১৯ উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার দেশব্যাপী গনপরিবহন বন্ধে উদ্যোগ নেয়। আর এ জন্য ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের নির্দেশে প্রশাসনের পক্ষ থেকে চলমান পরিস্থিতিতে গনপরিবহন বন্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতেছি। হঠাৎ দেখতে পাই দূর থেকে একজন লোক আমাদেরকে কার্যক্রম ভিডিও করছে। আমি তাদেরকে ডাক দিয়ে কেন ভিডিও করছেন জানতে চাই এ সময় তারা সাংবাদিক পরিচয় দিলে আমি তাদের সাথে আর কোন কথা বলিনি। বিষয়টি নিয়ে তারা আমাকে ভুল বুঝছে। যেহেতু প্রথমত দূর থেকে ভিডিও করছে, সে ক্ষেত্রে তাদের দূর থেকে অপরিচিত তথা গাড়ীর যাত্রী মনে করে ডাক দেই সেই সাথে ভিডিও করার কারন জানতে চেয়েছি।

এ বিষয় ঝালকাঠি মিডিয়ার ফোরাম সাংবাদিক সংগঠন সভাপতি মনির হোসেন সহ অন্যান্য সাংবাদিকরা জানান, দেশে বিভিন্ন বিষয় যেমন ক্যাসিনো কান্ড, দ্রব্যমূল্য উর্ধগতি সহ অনেক বিষয় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। তখন প্রেস ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা প্রশাসনের পাশে থেকে আদালত পরিচালনার সময় সরাসরি লাইভ সম্প্রচার করার মাধ্যমে প্রশাসনের সংবাদ প্রকাশ করে।

কিন্তু ঝালকাঠিতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় সাংবাদিকরা জনদূর্ভোগের ছবি তুলতে গিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী মেজিষ্ট্রেট বাধা প্রদান করবেন অথবা তার অনুমতি নিয়ে ছবি তুলতে হবে এটা আমাদের জানা নেই। আমরা এ বিষয় উর্ধতন কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।