মহান স্বাধীনতা দিবসে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে এসে বিশৃঙ্খলায় জড়িয়েছেন বিএনপি নেতারা। এতে ঠেলাঠেলিতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ শীর্ষ কয়েকজন নেতা পড়ে যান। এসময় তাদের পুস্পস্তবকটিও ভেঙ্গে যায়।
শনিবার (২৬ মার্চ) সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদির সামনে শ্রদ্ধা জানানোর সময় এ ঘটনা ঘটে।
এসময় দলের সিনিয়র নেতা মির্জা ফখরুল ও রুহুল কবির রিজভীসহ অনেককেই বেদিতে উল্টে পড়ে যেতে দেখা যায়। বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদনের এমন চিত্র দেখে ক্ষোভ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষসহ সুশীলরা।
বাহার আহমেদ নামে এক দর্শনার্থী বলেন, সকাল ৯টার দিকে বিএনপির লোকজন স্লোগান দিচ্ছিলো। এসময় বেদির কাছে অনেক যাওয়ার চেষ্টা করেও ধাক্কাধাক্কির জন্য পারিনি। পরে তারা চলে যাওয়ার পর বেদিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছি।
নাম প্রকাশে এক অনিচ্ছুক এক সংবাদকর্মী বলেন, বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদনের বরাবরই জাতীয় স্মৃতিসৌধে আমরা বিশৃঙ্খলা দেখেছি। নেতাকর্মীদের ধাক্কাধাক্কির কারণে সাংবাদিকদের ছবি ও ভিডিও নেয়া কষ্ট হয়ে যায়। ধাক্কাধাক্কির কারণে দাড়িয়ে থাকাও দূরহ হয়ে পড়ে। এটা খুবই দুঃখজনক!
সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশিদ বলেন, ‘বরাবরে বিএনপি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসলেই বেদির সামনে ধাক্কাধাক্কি ও ঠেলাঠেলির শুরু হয়। এসময় হ্যান্ডমাইকে তাদের উশৃংখলতা পরিহার করে শান্তভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে বলা হয়। কিন্তু তারা কর্ণপাত না করে হুড়োহুড়ি করে সামনে যাওয়ার প্রতিযোগিতা করতে থাকে।
এসময় ভীড়ের মধ্যে মোবাইল ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি যাওয়ারও ঘটনা ঘটে। গত বিজয় দিবসেও বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় সাংবাদিক, পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তাসহ অনেকের মোবাইল খোয়া গিয়েছিল। আজকে স্বাধীনতা দিবসেও বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় বেশ কয়েকজন পকেটমার আটক করেছি। তবে আমাদের সকলের ভাবগাম্ভীর্যতার সাথে শ্রদ্ধা নিবেদন করা উচিত।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, ‘ওখানে ফুল দেয়ার জন্যে দায়িত্বরতদের নিয়ম চালু করা উচিৎ। সারিবদ্ধভাবে ফুল দিলে এমন ঘটনা ঘটতো না। মূলত সকালে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ফুল দিয়ে যাওয়ার পরেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। বিশেষ করে বড় দুই রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা হুড়োহুড়ি করে। যারা ওখানে দায়িত্বে আছেন তারা যদি যথাযথ গাইডলাইন করে দেয় তাহলে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। এটা আসলে যার যার সতর্ক থাকার কথা। যার যার বোধ আসার কথা। সবাই যদি সতর্ক থাকে তাহলে এটা থেকে উত্তরণ সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি তারা না পারে তাহলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বা রোভার স্কাউটকেও দায়িত্ব দিতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন তারা করছে। আমরা কেন পারবো না। আমাদের দায়িত্ব দেয়া হলে আমরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাম। এখানে কর্তৃপক্ষেরও ব্যর্থতা রয়েছে ।
কেআরআর