প্রচ্ছদঅপরাধপুলিশের সামনে বিবাদীকে পেটাল বাদী-অবরুদ্ধ ৪ পুলিশ সদস্য
পুলিশের সামনে বিবাদীকে পেটাল বাদী-অবরুদ্ধ ৪ পুলিশ সদস্য
কুমিল্লা তিতাস উপজেলায় মামলার আসামিকে গ্রেফতার করতে বাদীপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে আসামির বাড়িতে যায় পুলিশ। এ সময় পুলিশের সামনেই বাদীপক্ষের লোকজন বিবাদীকে পেয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে দুই পায়ে ও হাতে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে, পুলিশের সামনে থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে চার পুলিশ সদস্যকে একটি ঘরে ২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে।
পরে সেনাবাহিনী, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও স্থানীয় উপজেলা বিএনপির নেতারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) দিনগত রাত ১১টার দিকে কুমিল্লা তিতাস উপজেলার জিয়ার কান্দি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দড়িকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা তিতাস উপজেলার জিয়ার কান্দি ইউনিয়নের দড়িকান্দি গ্রামের মামলার বাদীপক্ষ জসিম উদ্দিনের ছেলে রাকিব হোসেন ও বিবাদীপক্ষের একই এলাকার মৃত লালা ভূঁইয়ার ছেলে মাওলান এবং তার ছেলে মাসুদ ভূঁইয়া দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ইন্টারনেট ব্যবসা করে আসছিল। ইন্টারনেট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে একাধিকবার বাগ্বিতকণ্ডা হয়।
বুধবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় কুড়েরপাড় স্ট্যান্ডের সামনে রাকিবকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে জখম করে। পরে রাকিব বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) তিতাস থানায় মাসুদ ভূঁইয়া ও তার বাবা মাওলান ভূঁইয়াসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করে।
এ মামলার আসামিদের গ্রেফতার করতে শুক্রবার রাতে আসামিদের বাড়িতে যায় পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে বাদীপক্ষের ১০/১৫ জন যায়। এ সময় মামলার ২নং আসামি মাওলান ভূঁইয়াকে দেখতে পেয়ে বাদীপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মাওলান ভুঁইয়ার দুই পা জখম করে পুলিশের সামনে পালিয়ে যায়। পরে স্বজনরা মাওলানকে উদ্ধার করে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
পুলিশের সামনে এমন ঘটনা ঘটার পর স্থানীয় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশ সদস্যদের একটি ঘরে ২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও স্থানীয় উপজেলা বিএনপির নেতারা গিয়ে স্থানীয়দের কঠিন বিচারের আশ্বাস দিয়ে পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে তিতাস উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মেহেদী হাসান সেলিম ভূঁইয়া সময় সংবাদকে বলেন, ‘পুলিশের সামনে বিবাদীকে কুপিয়ে জখম করা পর স্থানীয়রা পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এ ঘটনা জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে সেনাবাহিনী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বজনদের সাথে কথা বলে এ ঘটনার তদন্ত করে কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হবে এমন আশ্বাস দিয়ে পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে নিয়ে আসি।’
এ বিষয়ে জানতে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও তিতাস থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কল রিসিভ করেনি। এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান সময় সংবাদকে জানান, এ ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানেন না, এ বিষয় জানতে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে কল দেন।