সম্প্রতি ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির উপর যৌন নিপীড়ন ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা সারা দেশে আলোড়ন তুলেছে। দেশে চলমান নারী নিপীড়নের পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, প্রতিনিয়ত এদেশে নারী নিপীড়ন বাড়ছে। এই নিপীড়ন এবং বিচারহীনতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাজধানীর শাহবাগে গায়ে কাফনের কাপড় জড়িয়ে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়েছিলেন ছয় নারী। তাদের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক তরুণী।
বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গায়ে কাফনের কাপড় জড়িয়ে দাঁড়িয়ে ধর্ষিত হয়ে ‘মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি’-এমন একটি প্রতীকী প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা। তরুণীর হাতে থাকা প্ল্যাকার্ড লেখা ছিল; “আমি ‘মানুষ’ বিচারহীন রাষ্ট্রে খুন ও ধর্ষিত হয়ে মৃত্যুর প্রস্তুতি নিচ্ছি। ভিক্টিম পক্ষ।”
তারা বলেন, ‘নুসরাতের মতো এমন হাজার হাজার নুসরাতের ঘটনা আমরা আপনাদের সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পারছি। এত এত নারী নিপীড়নের ঘটনা ঘটলেও অপরাধীরা থেকে যাচ্ছে বিচারের বাইরে। কিংবা অপরাধী গ্রেপ্তার হলেও দৃষ্টান্তমূলক কোনো সাজা আমরা দেখতে পাই না। আমরা আজকের নারী নিপীড়নের জন্য রাষ্ট্রের বিচারহীনতার সংস্কৃতিকেই দোষারোপ করছি।’
এর আগে শারমিন জাহান অর্পি নামে এক প্রতীকী প্রতিবাদকারী দৈনিক সময়ের খবর অনলাইনকে বলেছিলেন, আজ (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭ থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ‘ভিক্টিম পক্ষ’ ব্যানারে ১০ নারী দাঁড়াবেন কিন্তু বিশেষ কারণে শাহাবাগ চত্বরে তিনজন প্রতিবাদে দাঁড়াননি। তবে পরবর্তীতে তারা ৭ জন শাহাবাগ চত্বরে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেন।
‘নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে তাই প্রতিবাদে শামিল হতে আমরা “ভিক্টিম পক্ষ”র ব্যানারে ১০ নারী ৫ জন করে দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে দাঁড়াবো শাহাবাগ চত্বরে। আমাদের প্রতিবাদটা একটু ভিন্ন ভাষায় করতে চাই। আমরা এই রাষ্ট্রের কাছে যখন বিচার চাইতে চাইতে ক্লান্ত, তখন আমাদের মনে হয়েছে যে রাষ্ট্রের কাছে নিপীড়কের বিচার চাইবার চেয়ে আমাদের নিজেদেরই বুঝি খুন বা ধর্ষিত হয়ে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নেয়া উচিত। তাই আমরা আমাদের প্রতিবাদী ইভেন্টে মূলত মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নেব।’
‘তাই শাহাবাগে মূলত আমরা কিছু কাফনে মোড়ানো মৃতদেহের প্রদর্শনী করবো। যারা প্রস্তুতি নিচ্ছে বিচারহীনতায় মৃত্যুর জন্য’ আরও যোগ করেন শারমিন জাহান অর্পি।