রাণীশংকৈলে ইউপি নির্বাচনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশের গুলিতে শিশুর মৃত্যু
হুমায়ুন কবির, রাণীশংকৈল, (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় ইউপি নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের ছোড়া গুলিতে ৯ মাস বয়সি সুরাইয়া আকতার নামে এক কন্যা শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছ ।
নিহত শিশুটি বাচোর ইউনিয়নের মীরডাঙ্গী দিঘির পাড় গ্রামের বাদশা আলমের মেয়ে। বুধবার (২৭ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিশুটির মরদেহ নিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন শিশুটির আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী।
এর আগে, সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের টেকিয়া মহেষপুর ভিএফ নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনি সহিংসতায় পুলিশের গুলিতে শিশুটির মৃত্যু হয়। ঘটনার পর রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম জাহিদ ইকবালসহ ৩ পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে এলাকাবাসী। পরে ওসিসহ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে প্রশাসন ও থানা পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোটের দিন ভোট দেয়ার পর ভোট কেন্দ্রের পাশে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিল নিহত শিশুর মা মিনারা বেগম। পরে নির্বাচনী কেন্দ্রে গোলমাল শুনতে পেয়ে মিনারা বেগম ও তার মেয়ে শিশু সুরাইয়াকে কোলে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়।
ভোট শেষে ওই কেন্দ্রের ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয় বাবুল হোসেন। বাবুল হোসেনের ফলাফলের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বাকী প্রতিদ্বন্দ্বী ইউপি সদস্য প্রার্থী খালেদুর, আজাদ ও কামালের সমর্থকরা মিলে কেন্দ্রে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে তাদের তর্কবিতর্ক, পথ অবরোধ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এবং সমর্থকরা পুলিশের দিকে ইট পাটকেল ছোড়া শুরু করে এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি ছোড়ে। এ সময় তার মায়ের কোলে থাকা শিশু সুরাইয়া আকতারের মাথায় এসে গুলি লাগে। এতে মাথা ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে তার মায়ের কোলেই শিশুটির মৃত্যু হয়।
রাণীশংকৈল থানার ওসি এস এম জাহিদ ইকবাল বৃহস্পতিবার ২৮ জুলাই বিকালে জানান পোস্টমোর্টেম শেষে আজ দুপুরে শিশুটির জানাযা ও দাফন সম্পুর্ন হয়েছে। তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাক্ষেপে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।