দিনাজপুরে কলেজের জায়গা দখলে বাধা দেয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ওপর হামলা
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের জায়গা অবৈধভাবে দখলের সময় বাধা দেয়ায় দখলকারী পৌর নারী কাউন্সিলরের সমর্থকদের হামলায় কলেজটির শিক্ষকসহ ৯ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
বুধবার (১৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পৌর শহরের বটতলী মোড়ে সরকারি কলেজের জায়গা দখল করে টিনসেট ঘর নির্মাণ করতে বাধা দেয়ায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এদিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে কলেজের শিক্ষার্থীরা বেলা সাড়ে ১২টা থেকে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন। দুপুর ১টায় ফুলবাড়ী থানার ওসি ফকরুল ইসলাম হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেয়ায় অবোরোধ প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা।
পৌর কাউন্সিলর ও তার লোকজনের হামলায় আহতরা হলেন- ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক এরশাদ হোসেন, কলেজের দর্শন বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মনসুর পারভেজ, একই বিভাগের সাগর হোসেন, মানবিক শাখার স্নাতক বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন, একই বিভাগের শিক্ষার্থী নাসিম আহম্মেদ, সাজু মেহেদী হাসান, সাব্বির ও শুভ। তারা সকলে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নাজমুল হক বলেন, পৌর কাউন্সিলর রোকেয়া বেগম দীর্ঘদিন থেকে ফুলবাড়ী কলেজের জায়গা অবৈধভাবে জবর দখল করে ঘরবাড়ি ও দোকানপাট করেছিলেন। রাস্তা প্রসস্তের সময় উচ্ছেদ অভিযানে তার অবৈধ দখল করা জায়গা উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, বুধবার সকাল থেকে উদ্ধার করা জায়গায় আবোরো ঘর নির্মাণ শুরু করেন পৌর কাউন্সিলর রোকেয়া বেগম। এ ঘটনায় কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক এরশাদ হোসেন বাধা দেয়। এসময় পৌর কাউন্সিরর রোকেয়া বেগম ও তার সাথে থাকা লোকজন শিক্ষক এরশাদ হোসেনের ওপর হামলা করে। এরপর শিক্ষার্থীরা এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে পৌর কাউন্সিলর লোকজন দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এ কারণে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেছেন।
ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী নাসিম আহম্মেদ বলেন, শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে পৌর কাউন্সিলর রোকেয়া ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। হামলা ও কলেজের জায়গা অবৈধভাবে দখলের প্রতিবাদে রাস্তা অবোরোধ করে তারা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর কাউন্সিলর রোকেয়া হামলার কথা অস্বীকার করে বলেন তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে শিক্ষক পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। কিন্তু সরকারি কলেজের জায়গা কেন দখল করছেন এই প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন উত্তর দেয়নি।
ফুলবাড়ী থানার ওসি ফকরুল ইসলাম বলেন, রাস্তা অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে, তারা অবোরোধ প্রত্যাহার করে নেন।
তিনি বলেন, ঘটনা তদন্ত করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, পৌর কাউন্সির রোকেয়া বেগমসহ কয়েকজন ব্যক্তি সরকারি কলেজের জায়গা দখল করে দোকান-পাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। সরকারি উচ্ছেদ অভিযানে তাদেরকে উচ্ছেদ করা হলেও তারা আবোরো দখল তা শুরু করেছে।