সৌমেন মন্ডল, রাজশাহী ব্যুরো: ৩১ ডিসেম্বর বর্ষবরণ উদযাপন করতে গিয়ে মদ পান করে রাজশাহীতে মোট ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ভেজাল মদ তৈরী করে বিক্রির দায়ে মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বোয়ালিয়া থানা পুলিশ জানায় অতি লোভের আশায় এই চক্রটি মদের বৈধ উপকরণ বাদ রেখে অবৈধ ভাবে রেক্টিফাইড স্পিরিট ও রং মিশিয়ে মদ তৈরী করে পরিত্যাক্ত মদের বোতলে ভরে বিক্রি করেছিলো।
চক্রটির কাছ থেকে সেই মদ বিভিন্ন জন কিনে খাওয়ার ফলে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সাগরপাড়া এলাকার মরহুম পবিত্র সিংয়ের ছেলে পরিমল সিং (৬০), একই এলাকার হাসেম আলীর ছেলে মো. সাজু (৩০), একই এলাকার পরিতোষ সিংয়ের ছেলে বাপ্পা সিং (২৮) ও নগরীর সিপাইপাড়া এলাকার মরহুম আব্দুর রউফ মতিনের ছেলে ইফতেখার হোসেন সুমন (৫০)।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের হেফাজত হতে ৩ টি কাঁচের তৈরি মদের খালি বোতল, টিউনিং মদ (মিশ্রিত মদ) তৈরির তরল পদার্থ ভর্তি একটি প্লাস্টিকের তৈরি বোতল, তেতুলের বিচি ভর্তি একটি কাঁচের বোতল, কমলা কালারের ৫০ গ্রাম গুড়ো রং, ২৯ টি টিন ও প্লাস্টিকের তৈরি কর্ক, ১১ টি কর্কের নিব ও ৫০ টি কর্কের প্রটেকশন, এ্যাকোহল ভর্তি দুইটি প্লাস্টিকের সাদা বোতল উদ্ধার করা হয়।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, বিষাক্ত মদপানে মৃতের ঘটনায় পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকের তাৎক্ষণিক নির্দেশে এবং পরিকল্পনায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন থানা ও ডিবি পুলিশের সমন্বয়ে অবৈধ মদের বিরুদ্ধে আরএমপির বিভিন্ন এলাকায় সর্বাত্বক অভিযান শুরু হয়।
রোববার বোয়ালিয়া মডেল থানার এসআই মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে বোয়ালিয়া মডেল থানার একটি চৌকস পুলিশ টিম মৃত ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজনের এবং চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও গোপন সংবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা হতে তাদের গ্রেপ্তার করে।
গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, উদ্ধারকৃত আলামতগুলির রাসায়নিক পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, তারা অতিরিক্ত লাভের আশায় বিদেশী মদের সাথে রেক্টিফাইড স্পিরিটসহ অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে এক বোতলকে একাধিক বোতলে পরিণত করেছিলো এবং এই অবৈধ মিশ্রিত মদ মৃত ও অসুস্থ ভিকটিমদের নিকট বিক্রয় করেছিলো। অসুস্থ ব্যক্তিদেরকে ধৃতদের ছবি দেখানো হলে তারাও এদেরকে উক্ত মদ বিক্রেতা হিসেবে সনাক্ত করে।
এ ঘটনায় বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে । জড়িত সকলকে গ্রেফতার ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। এই অবৈধ মদের উৎস সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করার জন্য কঠোর অভিযান অব্যহত রয়েছে।