ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় প্রতিবাদ ও সম্প্রীতি সমাবেশ

Loading

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীসহ সারাদেশে মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুরকারিদের গ্রেফতার, বিচার ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে প্রতিবাদ ও সম্প্রীতি সমাবেশ বৃহস্পতিবার ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়।

এ উপলক্ষে এদিন দুপুরে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের সিন্দুরপিন্ডি মন্দির চত্বরে সন্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ঠাকুরগাঁও জেলা শাখা এ প্রতিবাদ ও সম্প্রীতি সমাবেশের আয়োজন করে।
ঘন্টাব্যাপি এই সমাবেশে সন্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সভাপতি অনুপম মনি, সাধারন সম্পাদক পার্থ সারথী দাস, নিশ্চিন্তপুর থিয়েটারের সাধারন সম্পাদক নুরে আলম উজ্বল, শাপলা নাট্য গোষ্ঠির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুপকুমার গুহ, তারুন্য একাডেমির প্রীতি গাংগুলী, এমদাদুল হক ভুট্টো,গণসংগীতের সভাপতি মীর ছানোয়ার হোসেন সহ সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক ও স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে সন্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক পার্থ সারথী দাস বলেন, এমন ঘটনা ঘটিয়ে সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা করা হয়েছে। এর পেছনে অবশ্যই কোন অপশক্তি কাজ করছে। অপরাধি যেই হোক না কেন তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সংগঠনটির সভাপতি অনুপম মনি অভিযোগ করে বলেন এ ঘটনার কয়েকদিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কাউকে সনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয় নাই। যার ফলে স্থানীয়দের মধ্যে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই দোষিদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

শাপলা নাট্য গোষ্ঠির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুপকুমার গুহ বলেন, প্রতিমা ভাঙ্গার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ফায়দা লুটার চেষ্ঠা করছেন। ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত না করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও সংখ্যালঘুদের জান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা রীনা রাণী জানান, প্রতিমা ভাঙার পর থেকে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। কিন্তু ঘটনার পূর্বে পুলিশি টহল জোরদার করা হলে এমন ঘটনা হয়তো কখনোই ঘটতোনা। তাই স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ দোষিদের দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার জানান, এই এলাকায় সকল ধর্মের মানুষ একসাথে বসবাস করেন। এ ঘটনাটি শুধু ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি নয়, এটি অনুভুতিতে আঘাত করার মতো বিষয়। এঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিকভাবে খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। সামাজিক সম্প্রীতি আরো জোরদার করতে প্রতিটি ইউনিয়নে সকলের অংশগ্রহণে সমাবেশ করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই হয়তো দোষিদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

প্রসঙ্গত: গত রবিবার ৫ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের জাউনিয়া কলেজপাড়া গ্রামে তিনটি, ধনতলা ইউনিয়নে সিন্দুরপিন্ডি গ্রামে ৮টি ও চাড়োল সাবাজপুর পশ্চিমনাথ পাড়া রাস্তার সংলগ্ন একটি মন্দিরে ৩টি প্রতিমা সহ মোট ১৪টি প্রতিমাভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।