ধামরাইয়ে অভাবের তাড়নায় এক নবজাতককে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন তার মা
স্টাফ রিপোর্টার ঃ ঢাকার ধামরাইয়ে অভাবের তাড়নায় এক নবজাতককে বিক্রি করে দিয়েছেন তার মা। এঘটনায় এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ধামরাই উপজেলার বাটারখোলা গ্রামে। এদিকে নবজাতককে বিক্রির বিষয়টি শুনে তাকে উদ্ধারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে ধামরাই থানা পুলিশ।
এলাকাবাসী জানায় স্বামী, দুই সন্তান ও মা-বাবাকে নিয়ে ঢাকার ধামরাইয়ের সূতিপাড়া ইউনিয়নের বাটারখোলা গুচ্ছ গ্রামে থাকতেন নাজমা বেগম (২৮) এক গৃহবধু। গুচ্ছ গ্রামে বাস করলেও তাঁদের নামে সরকার থেকে কোনো ঘর বরাদ্দ ছিল না। দুই মাস আগে নাজমার স্বামী বাবুল হোসেন মারা যান। চার দিন আগে মারা যান তাঁর মা। সাত মাস আগে মারা গিয়েছিলেন বাবা আক্কাস আলী।
নিত্য অভাব আর প্রিয়জনদের হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েন নাজমা। স্বামী মারা যাওয়ার সময় নাজমা সাত মাসের অন্তঃসত্ত¡া ছিলেন। অবুঝ দুই সন্তানের জন্য কিছুই রেখে যাননি স্বামী। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার নাজমার প্রসব বেদনা ওঠে। স্থানীয় ইউপি মহিলা সদস্য আছিয়া বেগমের সহযোগিতায় তাঁকে ভর্তি করা হয় ধামরাইয়ের ডাউটিয়া রাবেয়া মেমোরিয়াল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ওই দিন অস্ত্রোপচারের (সিজার) মাধ্যমে এক ছেলে সন্তান জন্ম দেন তিনি। এই নবজাতককে নিয়েই তিনি পড়ে যান বিপাকে। পরে অভাবের তাড়নায় গত শুক্রবার সেই নবজাতককে বিক্রি করে দেন মাত্র ৬০ হাজার টাকায়। হাসপাতালের ১০ হাজার ৫০০ টাকা বিল পরিশোধ করে শুক্রবার সন্ধ্যায় নাজমা হাসপাতাল থেকে চলে যান সেই গুচ্ছ গ্রামে।
নাজমা বেগম বলেন, পৃথিবীর কোনো মা তাঁর সন্তান ব্যাচপার চায় না। আমিও চাই ন্যাই। কিন্তু আমিতো অসহায়। আমার একটি মেয়ে (৮) ও একটি (৫) আছে। ওগোই কী খাওয়ামু। আমার থাকারই ঘর নাই। অন্যজনের দয়ায় আমাগো থাকপার দিছে। চিন্তাই থাকি কোন সময় খ্যাদিয়ে দেয়।’ স্থানীয় ইউপি মহিলা সদস্য আছিয়া বেগম বলেন, নিরুপায় হয়ে সন্তান বিক্রি করেছেন নাজমা।
এবিষয়ে ধামরাইয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল হক বলেন, সন্তান বিক্রি আইনবিরোধী। এটা অত্যন্ত অমানবিক ও দুঃখজনক ঘটনা। তবে তাঁকে পুনর্বাসন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবিষয়ে ধামরাই থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন বিক্রি করা নবজাতককে উদ্ধারে ধামরাইর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ ।