সকাল থেকেই শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের উৎকণ্ঠা। কখন তারা পাবে পরীক্ষার ফল। অবশেষে দুপুরের দিকেই মিলল সেই ফল। ফলাফল প্রকাশের পরপরই উল্লাস আর উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। স্কুল প্রাঙ্গণেই নাচে-গানে মাতোয়ারা হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। তাদের আনন্দে স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাকরাও ব্যাপক খুশি। নেচে-গেয়ে ও হৈ-হুল্লোড় করে ভালো ফল অর্জনের আনন্দে মেতে ওঠে সবাই।
পিইসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া তাসফিয়া মুসিরা বলেন, খুবই আনন্দ লাগছে। বলে প্রকাশ করতে পারবো না। সারাদিন পড়েছি এর ফল পেয়েছি। আমার এ রেজাল্টের পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান আমার মায়ের। ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা আছে জানান মুসিরা।
জেএসসিতে শিক্ষার্থী সায়মা রহমান জানায়, এ প্লাস পেয়েছি। কী বলবো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। ভালো ফলাফলের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন আব্বু-আম্মু আর শিক্ষকরা। আমার ইচ্ছা শিক্ষক হবো।
জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক পিইসি শিক্ষার্থী মা জানান, মেয়ের পড়ালেখা নিয়ে সারাদিন ব্যস্ত থাকতে হয়। আমার কষ্ট সফল হয়েছে। মেয়ে এ প্লাস পেয়েছে। দোয়া করবেন আগামীতেও যেন এ ফলাফলের দ্বারা অব্যাহত থাকে।
এর আগে সোমবার সকালে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ২০১৮ সালের অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসিতে), জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি), প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ির ফলাফল হস্তান্তর করেন।
এবার জেএসসিতে পরীক্ষায় ৮৫ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং জুনিয়র জেডিসি পরীক্ষায় ৮৯ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। আর জেএসসি ও জেডিসি মিলে পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৮৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
অন্যদিকে পিইসি পরীক্ষায় এবার পাস করেছে ৯৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর ইবতেদায়িতে এ হার ৯৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। দুই পরীক্ষা মিলিয়ে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৬০ শতাংশ।
গত ১ নভেম্বর শুরু হওয়া জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় সারাদেশ থেকে ২৫ লাখ ৯৯ হাজার ১৬৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তাদের মধ্যে পাস করেছে ২২ লাখ ৩০ হাজার ৮২৯ জন বা ৮৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৮ হাজার ৯৫ জন।
গত বছর জেএসসি ও জেডিসিতে সম্মিলিতভাবে ৮৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে। এর মধ্যে ১ লাখ ৯১ হাজার ৬২৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছিল। সে হিসাবে এবার পাসের হার বাড়লেও কমেছে জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা।
অন্যদিকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষায় মোট ৩০ লাখ ৯৫ হাজার ১২৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। গত ১৮ থেকে ২৬ নভেম্বর দেশজুড়ে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।