মশুজ্জোহা বিদ্যুৎ,চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সেলিমাবাদের টুকিয়ারা বেগম (২৫)। কোলে ৪ বছরের ১ ছেলে সন্তান। এক গরীব ঘরে জন্ম হয়েছিল তার। উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত মোহর শেখ এর মেয়ে টুকিয়ারা।
মৃত বাবা-মায়ের এতিম সন্তান টুকিয়ারা ৪ ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট। আন্যান্য মেয়েদের মতো টুকিয়ারা বেগমও ৮ বছর আগে সুখের সংসার গড়ে শান্তির আশায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় একই উপজেলার জালমাছমারি গ্রামের মোহর আলীর ছেলে আকবর আলীর সাথে। বিয়ের ২ বছর পরই ১ম স্ত্রীকে রেখে অন্য এক মেয়েকে বিয়ে করে ফেলে টুকিয়ারার স্বামী আকবর আলী। পরিবারে নেমে আসে অশান্তির ছায়া। দু:শ্চিন্তা আর অশান্তির সাথে সাথে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে থাকেন ১ম স্ত্রী টুকিয়ারা বেগম।
দিনমজুর আকবর আলীর আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারনে নুন্যতম চিকিৎসা পায়নি তার স্ত্রী। এক পর্যায়ে ভরন পোষন দিতে না পেরে বাবা হারা টুকিয়ারাকে বৃদ্ধ মায়ের কাছে রেখে চলে যায় স্বামী আকবর আলী। স্বামী পরিত্যক্তা অবস্থায় কিছু দিন পরে মাকেও হারায় সে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত টুকিয়ারার দেখাশোনার দায়িত্ব পড়ে একমাত্র ভাই শরিফুল ইসলামের উপর। দারিদ্রতার কারনে উন্নত চিকিৎসা নিতে না পারলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী নিয়ে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে তার ভাই।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিদিনের ঔষধ ক্রয় ও মাঝে মাঝেই রক্ত দেয়াটা যেন অসম্ভব হয়ে পড়ে তাদের উপর। উন্নত চিকিৎসা তো দূরের কথা। দীর্ঘদিন যাবৎ তার স্বামী কোন খোঁজ নেয়না বলেও জানা যায়। সরেজমিনে গিয়ে জানতে চাইলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ও চিকিৎসা বঞ্চিত টুকিয়ারা বেগম বিছানায় কাতরানো অবস্থায় কোন রকমে উপরের বর্ণনাটুকু দিতে সক্ষম হয়। প্রতিবেশিদের কাছে জানতে চাইলেও রোগাক্রান্ত টুকিয়ারা বেগমের অসহায়ত্বের কথা জানান তারা। স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য মো: মমরেজ আলীর নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, টুকিয়ারা বেগম স্বামী থেকেও স্বামী হারা একজন অসহায় মহিলা, বিভিন্ন সময়ে আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি তাকে সহযোগীতা করতে সেই সাথে তার সহযোগীতায় সকলকে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানাচ্ছি।
এদিকে নিজ বাড়ি ছেড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে বাসা ভাড়া নিয়ে ২য় স্ত্রীকে নিয়ে সংসারে মত্ত আকবর আলী। এ নিয়ে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিশও হয়েছে কয়েকবার। শিবগঞ্জ পৌরসভায় অভিযোগও দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়। এসব বিষয়ে স্বামী আকবর আলীর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারনে আমার স্ত্রীর তেমন খোঁজ নিতে পারি না।
বর্তমানে স্বামী পরিত্যক্তা টুকিয়ারা বেগম শুধুই বিছানায় পড়ে কাতরাচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানীয় বিত্তবান সহ সরকার ও সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগীতা কামনা করেছে টুকিয়ারা বেগম, তার স্বজন ও প্রতিবেশীরা।