কুমিল্লা দেবীদ্বারে ইউপি চেয়ারম্যান করোনা আক্রান্তে মৃত্যু উপসর্গে মেম্বার’র মৃত্যু
এ আর আহমেদ হোসাইন (দেবীদ্বার-কুমিল্লা)প্রতিনিধি :কুমিল্লা দেবীদ্বার উপজেলার ভাণী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান (৫৫) করোনায় আক্রান্ত হয়ে এবং বরকামতা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শাহজালাল মেম্বার(৬০) করোনার উপস্বর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।স্থানীয় প্রশাসন ভাণী ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যুর সংবাদ পেলেও করোনায় মৃত্যু হওয়ার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নন বলে জানান। অপর ঘটনায় বরকামতা ইউপি সদস্য ও বাগুর গ্রামের শাহজালাল মেম্বার’র মৃত্যুর পর তার বাড়ি লক ডাউন করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বরকামতা ইউপি সদস্য ও বাগুর গ্রামের শাহজালাল মেম্বার’র মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে দুপুর ১২টায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীদা আক্তার’র নেতৃত্বে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আহমেদ কবির, দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক(এস,আই) মিঠুন সাহা সহ একটি দল এসে তাঁর বাড়িটি লগডাউন করেন। এসময় নিহতের ২ছেলে, ১মেয়ে ও একজন স্কুল শিক্ষক সহ ৪জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর-এ প্রেরন করেন।এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আহাম্মেদ কবির জানান, গত সোমবার ওই ইউপি সদস্য সর্দি-কাশি নিয়ে দেবীদ্বার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন এবং স্বাস্থ্যের বিবরন দিয়ে তার ইচ্ছাতেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তৃপক্ষ নমুনা সংগ্রহ করেন, এর আগে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা সংগ্রহ করতে চাইলে ওনার বাড়ি দেবীদ্বার হওয়ায় ওখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দেবীদ্বার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা দিতে বলেন। পরে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নির্দেশে তার নমুনা সমগ্র করে আইইডিসিআর-এ পাঠানো হয়। একই সাথে তাকে হোম কোয়ারেইন্টেনে থাকার পরামর্শ্ব দিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় তিনি মারা যাওয়ার সংবাদ পেয়ে তার বাড়ি লক ডাউন সহ ৪জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর-এ প্রেরন করেন।
অপর ঘটনায় কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ১২নং ভানী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান(৫৫) করোনায় আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় তার ঢাকাস্থ নিজ বাসায় ইন্তেকাল করেছেন। মঙ্গলবার রাত ১১টায় দেবীদ্বার উপজেলার সাইতলা নিজ গ্রামে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
তার ঘনিষ্ঠ স্বজন উপজেলার কটকসার গ্রামের অধিবাসী এবং কটকসার মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদ’র সভাপতি ও বিআইডবিউটিএ’র অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল খালেক জানান, আব্দুল হান্নান দির্ঘদিন যাবত এজমা, লিবার, ডায়েবেটিস সমস্যায় ভোগছিলেন। তিনি গত কয়েকদিন যাবত জ্বর,সর্দি, কাশি, গলা ব্যাথা ও শ্বাস কষ্টে ভোগছিলেন, করোনা উপস্বর্গ সন্দেহে ৩মেয়ে ও ১ছেলেকে অন্যত্র সরিয়ে রাখেন। বাসায় তার স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। গত রোববার স্বামী- স্ত্রী দু’জনেরই করোনা পরীক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ(পিজি) হাসপাতালে নমুনা প্রেরন করেন। মৃত্যুর পর ঢাকা থেকে এ্যাম্বুঈলেন্স যোগে তার মরদেহ দেবীদ্বারে আনার সময় করোনা রিপোর্ট তাদের হাতে আসে। এতে হান্নান চেয়ারম্যানের করোনা পজেটিভ হলেও তার স্ত্রীর করোনা নেগেটিভ আসে। পরে তার স্বজনেরা কঠোর নিরাপত্তায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে রাত ১১টায় দাফন সম্পন্ন করেন।
উল্লেখ্য এ পর্যন্ত প্রথম ধাপে ১৭ জন এবং দ্বিতীয় ধাপে আরো ৮জনের নমুনা আইইডিসিআর-এ প্রেরন করা হলে, প্রথম ধাপের ১৭জনের মধ্যে করোনা উপস্বর্গ নিয়ে মৃত্যুবরনকারী উপজেলার নবিয়াবাদ গ্রামের জীবন কৃষ্ণ সাহা ছাড়া আর কোন করোনা পজেটিভ রোগী পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয় ধাপে প্রেরিত আরো ৮জনের নমুনা প্রেরণ করা হলেও তাদের বিষয়ে বুধবার বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ফলাফলের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।