স্টাফ রিপোর্টার : সাভারে আধিপত্ত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় উভয় পক্ষের হামলায় কমপক্ষে পাঁচ ব্যক্তি আহত হলে তাদেরকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার রাতে উপজেলার ভাকুর্তা ইউনিয়নের মোগড়াকান্দা এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।এঘটনায় উভয়পক্ষ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও মারধরসহ লুটপাটের অভিযোগ তুলেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এছাড়া এঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন হামলার শিকার ইউপি ওয়ার্ড সদস্য জাকির হোসেন।সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানা যায়, আধিপত্ত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ভাকুর্তা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী শহিদুল্লাহ বেপারী ও যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল বাতেনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মনমালিন্য চলে আসছে। এরই মধ্যে আব্দুল বাতেন আগামীতে সভাপতি প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দেওয়ায় তাদের মধ্যকার বিরোধ আরও চাঙ্গা হয়।গত শনিবার সন্ধ্যায় একটি বিচারকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন আওয়ামীগের সভাপতি শহিদুল্লাহ বেপারী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ বাতেন এর লোকজনদের সাথে সংঘর্ষ বাধে । খবর পেয়ে ইউপি ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য জাকির হোসেন বিষয়টি জানার জন্য ইসমাইলের বাসার সামনে আসলে হামলাকারীরা তার উপরও হামলা চালায়। এসময় জাকির হোসেন ও শহিদুল্লাহ বেপারী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
একপর্যায়ে জাকির হোসেন গ্রুপ পিছু হটে পরে শহিদুল্লাহ বেপারীর বড় ভাই বিল্লালের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়।এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে ভাকুর্তা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্য (এসআই) এনামুল হক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা চালান। কিন্তু উভয়পক্ষ মারমুখি হওয়ায় পুলিশ তাদেরকে থামাতে ব্যার্থ হলে শহিদুল্লাহ বেপারী লোকজন জাকির মেম্বারের কার্যালয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালায়।
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শহিদুল্লাহ বেপারী অভিযোগ করেন, জাকির মেম্বার, কবির, নাদির, আবু তাহেরসহ প্রায় ২০-৩০ জনের সন্ত্রাসী প্রথমে আমার অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে এবং আমাকে মারধরের
চেষ্টা করে।
এসময় স্থানীয়রা তাদেরকে প্রতিহত করলে সন্ত্রাসীলা আমার ভাই বিল্লালের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। হামলায় আহত হাসনেয়ারা বেগম অভিযোগ করেন, জাকির, আবু তাহের, মজিবর, ইসমাইল, মালেক ও খালেকসহ ২০-৩০ জন সন্ত্রাসী রাম দা, চাপাতি ও পিস্তল নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায় ব্যাপক ভাংচুর করে। এসময় তারা বাড়ির প্রতিটি কক্ষের দরজা-জানালা, বিদ্যুৎ এর মিটার, আসবাবপত্র ভাংচুর করে এবং লকার ভেঙ্গে দশ ভরি স্বর্ন এবং নগদ দশ লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
হামলার সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও তারা নিরব ভূমিকা পালন করেছে। হামলার বিষয়ে জাকির মেম্বার বলেন, শহিদুল্লাহ বেপারী ও তার ছেলে রহমত আলী সন্ত্রাসী নিয়ে আমার ভাতিজি জামাই ইসমাইলের তিন তলা বাড়িতে হামলা চালায়। খবর পেয়ে আমরা সেখানে গেলে তারা পুর্ব প্রস্তুতি অনুযায়ী আমাদের উপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা আমার কার্যালয় ভাংচুর করে এবং সাথে থাকা নগদ ৯ লক্ষ টাকা নিয়ে যায়।
হামলায় আমার ভাই আব্দুর রশিদ গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে এনাম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া তারা আমার ভাতিজি ও জামাইকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দিছে। এঘটনায় আমি সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।
সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম ভাকুর্তায় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এঘটনায় ইউপি সদস্য জাকির হোসেন একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।