উচ্চ আদালতের নির্দেশে কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর রোববার (০৩ ফেব্রুয়ারি) রাতেই টাঙ্গাইলের ধুবড়িয়া এলাকার বাড়িতে ফেরেন জাহালম মিয়া।
এরপর থেকে পরিবারে বইছে আনন্দ-উচ্ছ্বাস। সোমবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে তাকে দেখতে বাড়িতে ভিড় করেন আশপাশের এলাকার মানুষজন ও স্বজনরা। খুশির জোয়ার বইলেও দুশ্চিন্তা বেড়েছে জাহালমের স্বজনদের।
তিন বছরে মামলা পরিচালনা করতে শেষ সম্বল হারানোর পাশাপাশি ঋণ করতে হয়েছে তাদের। দুর্বিসহ দিনগুলোর কথা জানান তার বৃদ্ধা মা।
পরিবারের সদস্যারা বলেন, এক সের করে চাল এনে খেয়েছি। কদুর পাতার জাও রান্না করে খেয়েছি। নুন দিয়ে ভিজিয়ে চাল রান্না করে খেয়েছি।
জাহালম মিয়া বলেন, আমার জীবন থেকে মূল্যবান তিনটা বছর হারিয়ে গেছে। এর জন্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।
এদিকে, সোমবার বিকেলে কক্সবাজারের এক অনুষ্ঠানে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, জাহালম ও তার পরিবারকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিৎ।
মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, রাষ্ট্রকে জাহালম মিয়াকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। জাহালমের ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিতে আমরা পদক্ষেপ নেবো।
পাটকল শ্রমিক জাহালমের তিন বছর কারাভোগের ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। দুদক পরিচালক আবুল হাসনাত মোহাম্মদ আবদুল ওয়াদুদকে এ তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়।
সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগসহ ৩৩টি মামলার প্রকৃত আসামির নাম আবু সালেক হলেও জেল খাটতে হয় নিরাপরাধ জাহালমকে।
পরে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে দুদক ও সংশ্লিষ্টদের ডেকে পাঠান আদালত। পরে শুনানি শেষে আদালত জাহালমকে মুক্তির আদেশ দেন।
এ ধরনের ঘটনাকে জজ মিয়া কাহিনীর সাথে তুলনা করে আদালত।