29 C
Dhaka, BD
শুক্রবার, জুলাই ১১, ২০২৫

ঠাকুরগাঁওয়ে ইট ভাটার গ্যাসে পুড়ছে ৩৫ একর জমির ধান

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানার শালবাড়ি কশাল গাঁও এলাকায় এস আর এম ব্রিকসের বিষাক্ত গ্যাসের কারণে প্রায় ৩৫ একর জমির বোরো ধান নষ্ট হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২০ লক্ষ্য টাকার বেশি বলে দাবি কৃষকদের।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৩৫ একর জমির বোরো ধান ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ধানের শীষ থাকলেও এতে কোনো ধান না থাকায় এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক কৃষক এক রকম হতাশার মধ্যে দিন পার করছেন। এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আনিছুর রহমান। পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ধানের শীষ বের হয়েছে। ইট ভাটার ধোঁয়ায় আশ পাশের ধান ফসলের ১৫-২০ ভাগ ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নামের তালিকা বিস্তারিত বর্ণনাসহ প্রস্তুতির কাজ চলছে। এ বিষয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাদের তালিকা প্রদান করবে।’

সদর উপজেলার এই কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘উল্লেখিত ভাটা মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা যেন শতভাগ ক্ষতিপূরণ পায় সে বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত আছে।’

যদিও এখন পর্যন্ত এস আর এম ব্রিকসের সত্ত্বাধিকারী রাজু ইসলামের সঙ্গে বারংবার যোগাযোগ করে তার কোনো সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি। এমনকি মুঠো ফোনে বেশ কয়েকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি তিনি।

অপর দিকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ধীরেণ, বিষ্টু, আমিন, হুমায়ুন কবির, আজাদ আলী এবং আব্দুল আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘গত শুক্রবার ঘূর্ণিঝড় ফণী আসার কথা থাকায় আবহাওয়া মেঘলা ছিল। সেই রাতে ভাটার মালিক রাজু ইসলাম ভাটার গ্যাস ছেড়ে দেয়।

ভুক্তভোগীরা এও অভিযোগ করেন, ‘সে (ইট ভাটার মালিক) ভাবছিল সব দোষ ফণীর হবে। কিন্তু ফনীর কোনো প্রভাব এলাকায় দেখা না যাওয়ায় রাজুর পরিকল্পনা নষ্ট হয়ে যায়। আমরা স্পষ্ট ভাবে বুঝেতে পারছি, রাজু ইসলামের ভাটার গ্যাসের কারণে ধান নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের ক্ষতির কথা তাকে বার বার বলার পরেও কোনো কাজ হচ্ছে না।

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে সুদৃষ্টি কামনা করে তারা এও বলেছেন, ‘মানুষের কাছ থেকে ধার দেনা এবং দোকানে বাকি করেও ফসল উৎপাদন করেছি। ধান না পেলে পরিবার নিয়ে কি করব। সে জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

ঠাকুরগাঁওয়ে নদীর জমি দখল করে মাকের্ট নির্মাণ

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়ার পাথরঘাটা নদীর জমি ভরাট করে মাকের্ট নির্মাণ করছে রহিদুল ইসলাম ও আব্দুস সামাদ নামের দুই ব্যক্তিসহ স্থানীয় কয়েক জন। নদী সংকোচনের কারণে আশে-পাশের বসবাসরত মানুষ গুলো অধিক ঝুঁকিতে বসবাস করছে। সরজমিনে গেলে দেখা যায়, পাথরঘাটা নদীটি সরু ও ড্রেনে পরিণত হয়েছে।

গড়েয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার বিপরীত দিকে নদীর জমি দখল করে অবৈধভাবে মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। মার্কেট নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে। রহিদুল ইসলাম এর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে, তিনি ক্যামেরার সামনে বলতে নারাজ ও কিছু না বলেই তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে তরিঘরি করে সে স্থান ত্যাগ করেন। অপরদিকে আব্দুস সামাদ বলেন, এটা আমার ক্রয়কৃত জমি, আমার জায়গায় আমি ঘর তুলেছি।

গড়েয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, ইতিমধ্যে আমরা ঘটনা স্থলে গিয়ে তাদেরকে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেছি। কিন্তু তা সত্ত্বেও যে তারা নির্দেশ অমান্য করে কাজ চলমান রেখেছে তা আমরা জানতাম না। নদীর যে সীমারেখা আছে তার কোনভাবেই ভরাট করা যাবে না। নদী নদীর অবস্থানেই থাকবে। সার্বেয়ারকে নিয়ে এসে মাপযোগ করে পাথরঘাটা নদীর সীমানা চিহ্নিত করে খাস জমিগুলো দখল মুক্ত করা হবে।

সুন্দরগঞ্জে অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদে মানবন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল ।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের নগর কাঠগড়া হাটে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ভুক্তভোগী ক্রেতা ও বিক্রেতাগণ। ঘন্টাব্যাপি চলাকালীন মানববন্ধনে বক্তৃতা দেন ব্যবসায়ী আলম মিয়া, জাহিদ মিয়া, বিপ্লব মিয়া, নয়ন মিয়া ও সুধীর চন্দ্র প্রমূখ। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল হাটের বিভিন্ন গলিতে প্রদর্শন করেন। বক্তব্যে তারা বলেন, অনেক বড় এবং পুরাতন হাট আমাদের নগর কাঠগড়া হাট।

এহাটে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী, মাছ-মাংসসহ বিভিন্ন তরিতরকারী পাইকারী বিক্রি হয়। এখানে বিভিন্ন উপজেলা এবং জেলা থেকে ব্যবসায়ীগণ আসেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো হাটে খাজনা বা টোল আদায়ে কোন তালিকা কোথাও সাঁটানো নেই। ফলে ইজারাদারগণ ইচ্ছামত অতিরিক্ত টোল আদায় করে আসছেন। প্রতিবাদ করলে ব্যবসায়ী এবং সাধারণ ক্রেতাদের হুমকি দেন বলেও জানান বিক্ষোভকারীরা।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি তারা। ইউএনও মোঃ সোলেমান আলী লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি যোক্তিকভাবে ভাবে খতিয়ে দেখা হবে।

মান্দায় নার্সারী ব্যবসায় যেভাবে স্বাবলম্বী শিক্ষিত যুবক মোজাম্মেল

গ্রামের নাম নার্সারী পাড়া। চারিদিকে বিভিন্ন প্রজাতির সবুজ সতেজ চারা। মাঝে মাঝে চোখ জুড়ানো বাহারি রঙের ফুলবাগান।

এ সৌন্দর্য কিন্তু প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠেনি। কিছু লোকের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হয়েছে সবুজের এ সমারোহ। তাদেরই একজন মোজাম্মেল হক। কামিল পাস এ যুবক চাকরি নামক সোনার হরিণের পেছনে না ছুটে শুরু করেন নার্সারী ব্যবসা। এ পেশায় আজ তিনি স্বাবলম্বী। নাম দেয়া হয়েছে ‘আল আমিন’ নার্সারী। মোজাম্মেল হক বড়পই নার্সারী পাড়া গ্রামের মৃত আক্কাস আলী মন্ডলের ছেলে।

মাত্র ১২০ টাকা পুঁজি নিয়ে এ পথে যাত্রা শুরু করেন মোজাম্মেল। অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে সাফল্যের সোনার হরিণটি হাতে পেয়েছেন তিনি। এখন তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয় না। প্রায় ২০ বিঘার বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে তুলেছেন নার্সারী। তার এ নার্সারীতে প্রতিদিন কর্মসংস্থান হয়েছে ১৫ জন শ্রমিকের। দৈনিক ২৫০ টাকা মজুরিতে এসব শ্রমিকরা সকাল ৭টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত কাজ করেন।
নওগাঁর মান্দা উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দুরে এই গ্রামের অবস্থান। মৌজা বড়পই হলেও নার্সারী পাড়া নামেই এখন অধিক পরিচিত গ্রামটি। বর্তমানে পাড়ার অন্তত ৬০ জন ব্যক্তি এ পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন। প্রতিদিন কর্মসংস্থান হয়েছে অন্তত ৩ শতাধিক শ্রমিকের। বেকারত্ব দুর হয়েছে আশপাশের আরও অনেকের।

নার্সারী ব্যবসায়ি মোজাম্মেল হক জানান, ১৯৯৪ সালে আমার বাবা আক্কাস আলী মারা যান। তখন আমি রেবা আখতার আলিম মাদরাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করি। এর দুইবছর পর আমার দু’ভাই আব্দুর রাজ্জাক ও আব্দুল মালেক পৃথক হয়ে যান। বাবা মারা যাওয়ার আগে অন্য দু’ভাইও পৃথকভাবে সংসার করছিলেন। পৈত্রিকসুত্রে বসতবাড়িসহ সাড়ে ৫ কাঠা জমি অংশপ্রাপ্ত হই। এ অবস্থায় মা মতিজান বিবিকে নিয়ে আমি দিশোহারা হয়ে পড়ি। তখন আমি পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

মোজাম্মেল হক বলেন, মাত্র ১২০ টাকা পুঁজি নিয়ে জীবন-যুদ্ধে অবতীর্ণ হই। ভগ্নিপতি হায়দার আলীর নিকট থেকে দেড় শতক জমি একবছর পরে পরিশোধের চুক্তিতে ১৫০০ টাকায় লীজ নিয়ে পেঁপের চারা তৈরির কাজ শুরু করি। লেখাপড়ার পাশাপাশি গ্রামের অন্য নার্সারীতে শ্রম দিয়ে আয়ের টাকায় সংসার চালিয়ে নিই। এভাবেই অভাব-অনটনের মধ্যে ২০০১ সালে দাখিল পাস করি। এরপর পরানপুর মাদরাসা থেকে আলিম, বড়বেলালদহ মাদরাসা থেকে ফাজিল ও নওগাঁর নামাজগড় মাদরাসা থেকে কামিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। ২০০১ সালে দাখিল পাসের পর একটি এনজিও’র মাধ্যমে নার্সারী বিষয়ে ময়মনসিংহ হর্টিকালচারে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি।

শিক্ষা ও মেধা কাজে লাগিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে গাছের পরিচর্যা করতে থাকি। অল্পদিনের মধ্যেই এর সুফল আসতে শুরু করে। এরপর বাৎসরিক চুক্তিতে জমি লীজ নিয়ে ব্যবসার প্রসার ঘটনা তিনি।
সরজমিনে মোজাম্মেলের নার্সারীতে গিয়ে নতুন জাতের বেশকিছু আম গাছের চারা দেখা গেছে।

তার নার্সারীতে রয়েছে ব্যানানা ম্যাংগো, আম ব্লাডস্টোর, গৌড়মতি, বারি-৪, হাইব্রিড রুপালী, হাড়িভাঙা, নাগফজলিসহ অন্তত ৩০ জাতের আমের চারা। এছাড়া ৫ জাতের কমলা, বারি মাল্টা-১, ৩ জাতের লেবু, থাই, চায়না, ভেডিগেড, পলি, মাধবিলতাসহ ৭ জাতের পেয়ারা, ৪ জাতের লিচু, বেদেনা আনার, কেরালা, ভিয়েতনাম, সুনরি ও দেশিজাতের নারকেল, লটকনসহ অনেক দেশিয় ফলদ গাছে চারা রয়েছে। অন্যদিকে মেহগনি, আকাশমনি, বেজিয়ামসহ অনেক প্রজাতির বনজ চারা রয়েছে এই নার্সারীতে (০১৭১৯-৮৬৫৯৩৭ মোজাম্মেল )।

এছাড়া এখানে পাওয়া যাবে ১০ জাতের গোলাপসহ বিভিন্ন ফুলের চারা। বর্তমানে প্রায় ২০ বিঘা জমির বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে এই নার্সারী। এটিই নওগাঁ জেলার বৃহত্তম নার্সারী বলে জানিয়েছে সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ।

নার্সারী ব্যবসায়ি মোজাম্মেল হক জানান, ২০১৭ সালের ভয়াবহ বন্যায় আমার নার্সারী পুরোটাই পানিতে তলিয়ে যায়। পানির নিচে তলিয়ে থাকায় ছোট চারাগুলো নষ্ট হয়ে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সেই ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারিনি। এছাড়া গত মৌসুমে ইটভাটার বিষাক্ত ধোয়ায় জলপাই, আমড়া ও কাঁঠালের ৪ হাজার চারা নষ্ট যায়। এ বিষয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বন্যায় ক্ষতির পরও কৃষি দপ্তর থেকে কোনো সহায়তা দেয়া হয়নি। নার্সারী পরিচর্যার ক্ষেত্রেও সহায়তা মিলে না কৃষি দপ্তরের। মিলে না সরকারি পৃষ্ঠপোষকতাও। এই নার্সারী মালিক দাবি করেন, কৃষি অফিসের সহায়তা ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই পেশাকে আরও গতিশীল করা সম্ভব। তৈরি হবে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান।

যশোরের শার্শায় পুলিশের অভিযানে অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবাসহ আটক-২

যশোরের শার্শায় পৃথক অভিযানে একটি ওয়ান শুটার গান, এক রাউন্ড গুলি ও ১০০ পিস ইয়াবাসহ দুইজন আসামিকে আটক করেছে শার্শা থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার (৭ মে) রাতে শার্শার নাভারন কাজির বেড় ও নাভারন হাসপাতালের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়।আটককৃতরা হলো- শার্শা থানার যাদবপুর গ্রামের আব্দুল সামাদের ছেলে নাজমুল হোসেন শামীম ( ৩২) ও শার্শা থানার দক্ষিণ বুরুজবাগান গ্রামের আব্দুল আজিদের ছেলে সোহানুর রহমান সোহান ( ৩০)।

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরে, দুটি পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়। এসময় শামীমের কাছ থেকে একটি ওয়ান শুটার গান ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয় এবং অপর আসামি সোহানকে তল্লাশি করে ১০০ ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়।

শার্শা থানার এসআই বাবুল আক্তার (সেকেন্ড অফিসার) বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বুধবার দুপুরে তাদের যশোর আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আজ রবীন্দ্র স্মৃতিধন্য পতিসরে রবীন্দ্র ভক্তদের মিলনমেলা ।

আজ ২৫ বৈশাখ, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮তম জন্মজয়ন্তী। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও কবিগুরুর নিজস্ব জমিদারি তার স্মৃতি বিজড়িত নওগাঁর পতিসর কাছারি বাড়ি প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছে দিনব্যাপী নানা উৎসবের। কবিভক্তরা আজকের এই দিনে বিশ্বকবির জন্মকে নতুন চিত্তে ভাবার জন্য একে অপরের সান্নিধ্যে এসে স্মৃতিচারণে মগ্ন হন।

প্রতি বছরের মতো এবারেও এখানে আসবেন সরকারের মন্ত্রী, এমপি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ দেশবরেণ্য শিল্পী, সাহিত্যিক ও রবীন্দ্রভক্তরা। নাচ, গান আর কবির রচিত কবিতা আবৃত্তি করে উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছে বিশ্বকবির জন্মোৎসব।

প্রতি বছরই পতিসরে নামে রবীন্দ্রভক্তের ঢল। পরিণত হয় মানুষের মহামিলন মেলায়। সরকারিভাবে একদিনের কর্মসূচি নিলেও এ মিলনমেলা চলে প্রায় পুড়ো সপ্তাহজুড়ে। দূর-দূরান্ত থেকে কবিভক্তরা ছুটে আসেন তাদের প্রিয় কবির পতিসর কাছারি বাড়ি প্রাঙ্গণে। একে অপরের সান্নিধ্যে এসে স্মৃতিচারণে লিপ্ত হন কবিভক্তরা।

কবিগুরুর ১৫৮তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এবার ব্যাপক প্রস্তুতি হাতে নেয়া হয়েছে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য কবির নিজস্ব জমিদারি পতিসর যেন পর্যটনের অপার সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। কাছারি বাড়িতেই কবিগুরুর ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। পতিসরে নাগর নদের পাড়কে মনমুগ্ধকর করে তোলা হয়েছে। কবিগুরুর নিজস্ব জমিদারি এলাকা কালিগ্রাম পরগনার সদর দফতর এই পতিসর। আর এই পতিসর নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মনিয়ারি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত একটি গ্রাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ মাধুর্যঘেরা কবির স্মৃতিবিজড়িত পতিসর আজও সাহিত্যের অঙ্গণে সাড়ম্বরে বিরাজিত। কবির যখন ভরা যৌবন এবং কাব্য সৃষ্টির প্রকষ্ট সময়, তখন তিনি সময় কাটিয়েছেন এই পতিসরে।

নওগাঁ জেলা সদর থেকে ৩৬ কিলোমিটার ও আত্রাই উপজেলা সদর হয়ে ৫৫ কিলোমিটার আঁকাবাঁকা পাকা সড়ক চলে গেছে নিঝুম-নিস্তব্ধ- নিভৃত পল্লীতে, কবিগুরুর কাছারি বাড়ি জেলার আত্রাই উপজেলার মনিয়ারি ইউনিয়নের পতিসর গ্রামে। তিনি যে আমাদের প্রাণের কবি, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নওগাঁ এবং আত্রাই থেকে মাইক্রোবাস, বাস, সিএনজি, টেম্পু, চার্জার, ভটভটিসহ বিভিন্ন যানবাহন যোগে পতিসরে যাওয়া যায়। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন উপলক্ষে প্রতি বছরই সপ্তাহ খানেক জুড়ে চলে রবীন্দ্রমেলা। এ সময় স্থানীয় ও এলাকাবাসীর বাড়িতে ভিড় জমায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা কবি ভক্ত, আত্মীয়-স্বজন, অতিথিরা।

গ্রামের মানুষ মেয়ে-জামাইকে নাইওরে আনে এই উৎসবে। ঘরে ঘরে পড়ে যায় পিঠা-পায়েসসহ উন্নত মানের খাবার তৈরির ধুম।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজরিত পতিসরে এবার কবির ১৫৭তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ইতোমধ্যে নওগাঁ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এখানে সরকারিভাবে একদিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

পতিসরে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে, বুধবার সকাল ১০টায় রবীন্দ্র কাছারি বাড়ির দেবেন্দ্র মঞ্চে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সকাল সাড়ে ১০টায় ‘একুশ শতকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রাসঙ্গতা’ শীর্ষক স্মারক আলোচনা অনুষ্ঠান, বিকেল ৩টায় রয়েছে, নাটক, আবৃত্তি, নাচ- গানসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবেন নওগাঁসহ দেশের প্রথিতযশা শিল্পীরা।

জানা গেছে, ১৯৩৭ সালে ২৭ জুলাই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হাজার হাজার প্রজাকে কাঁদিয়ে অশ্রসিক্ত নয়নে পতিসর তথা বাংলাদেশ থেকে শেষ বিদায় নিয়েছিলেন। শেষ বিদায়কে স্মরণীয় করে রাখার জন্য কবির ৭৬ বছর বয়সের একটি উন্মুক্ত ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে পতিসরে। স্থাপন করা হয়েছে রবীন্দ্র সংগ্রহশালা। এই কাছারি বাড়িতে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে কবির ব্যবহৃত বিভিন্ন আসবাবপত্র।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নওগাঁর আত্রাইয়ের এই পতিসরে এসে তার কাছারি বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা নাগর নদকে নিয়ে লিখেছিলেন, ‘আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে’।

এছাড়াও তার বিখ্যাত কবিতা তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, ‘দুই বিঘা জমি ও সন্ধ্যাসহ অসংখ্য সাহিত্যকর্ম রচনা করেছেন এই পতিসরের কাছারি বাড়িতে বসে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর তার পুরস্কারের অর্থ তিনি এই পরগনার প্রজাদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার জন্য ৭৫ হাজার টাকা তৎকালীন সময়ে এখানে স্থাপিত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠিয়েছিলেন।

এই প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকার প্রজাদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেয়ার লক্ষে কবি ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে পতিসরে এসে তার পুত্র রথীন্দ্রনাথের নামে কাগ্রিাম রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশন স্থাপন করেন এবং এই প্রতিষ্ঠানের নামে ২শ’ বিঘা জমি দান করেন।
এ ব্যাপারে আত্রাই থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মোবারক হোসেন জানান, বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। দেবেন্দ্র মঞ্চে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে উদ্ধোধন ও আলোচনা সভা ও বিকেল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

এ বিষয়ে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছানাউল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও আগামী ২৫ বৈশাখ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হবে। এ উপলক্ষে সেখানে বসবে গ্রামীন মেলা।

ঠাকুরগাঁওয়ে স্বপ্ননীলের চেয়ারম্যান আটক ।

টার্কি মুরগি পালন করে তিন মাসের মধ্যে আকর্ষণীয় লাভ দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ঠাকুরগাঁওয়ে স্বপ্ননীল এগ্রো সার্ভিসেস লিমিটেড নামের একটি কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ তিনজনকে আটক করেছে ঠাকুরগাঁও ডিবি পুলিশ।

সোমবার সৈয়দপুর বিমান বন্দর থেকে কোম্পানির চেয়ারম্যানকে আটক করা হয় বলেন জানান ডিবি পুলিশের ওসি রফিকুল ইসলাম। আটক তিনজন হলেন, স্বপ্ননীল এগ্রো সার্ভিসেস লিমিটেড কোম্পানির চেয়ারম্যান সালমান ওরফে সানি (৩২),তার স্ত্রী রওশন আরা (২৮) ও ভাতিজা আবু সালেম রাসেল(২৩)। ওসি জানান, আটক সানি ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও পঞ্চগড় জেলার সাধারণ মানুষকে টার্কি মুরগি পালনে আকর্ষণীয় লাভ দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে বিভিন্ন প্যাকেজ বিক্রি করে।

পরে তাদের টার্কি মুরগি দিয়ে নগদ টাকা হাতিয়ে নেয়। চুক্তি অনুযায়ী মেয়াদ শেষে ওই সব উদ্যোক্তার পালিত মুরগি নিয়ে কাউকে চেক আবার কাউকে সাদা কাগজে রশিদ দিয়ে কোম্পানির চেয়ারম্যান ও মহাব্যবস্থাপকসহ অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। সোমবার স্বপ্ননীল কোম্পানির চেয়ারম্যান সানি সৈযদপুর বিমান বন্দর থেকে বিমানে ঢাকা এবং পরবর্তীতে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঠাকুরগাঁও ডিবির একটি ফোর্স তাকে বিমানবন্দর থেকে আটক করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে স্ত্রী রওশন আরা এবং ভাতিজা আবু সালেম রাসেলকে আটক করা হয়।

যশোরের বেনাপোলে জামিনে ফিরে মাদক সম্রাটদের অবাধ বিচরণ

পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বেনাপোল সীমান্তে অবাধ বিচরণ করে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসায়ীরা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে চিহিৃত মাদক স¤্রাটরা। মাঝে মধ্যে বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করলেও আবার তারা জামিনে এলাকায় ফিরে প্রকাশ্যে চালিয়ে চাচ্ছে মাদকের কারবার।

জানা যায়, দেশের অনান্য সব সীমান্ত দিয়ে যে পরিমান মাদকের চোরাচালান হয় তার এক তৃতীয়াংশ চোরাচালান হয় বেনাপোল সীমান্ত পথে। মাদক পাচার প্রতিরোধে বিজিবি ও পুলিশ এলাকায় সর্বচ্চ সতর্কতা জারী করলেও তাতে কোন সুফল আসছেনা। যেন নিরাপত্তার সাথে পাল্লা নিয়ে বাড়ছে মাদকের চোরাচালান।

স্থানীয়রা বলছেন, বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসন মাদক পাচার প্রতিরোধে আন্তরিক হয়ে কাজ করলে তবেই মাদক পাচার ও প্রতিরোধ করা সম্ভব। আর পুলিশ বলছে তারা মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে প্রানপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

জানা যায়, এক সময় বেনাপোল বাণিজ্যিক এলাকা হিসাবে পরিচিতি থাকলেও বর্তমানে মাদক পাচারের কেন্দ্র স্থল হিসাবে আলোচিত। পুলিশ ও বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন শত শত বোতল ফেন্সিডিল,গাঁজা সহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্যের চোরাচালান হচ্ছে। মাঝে মধ্যে দুই এক জন বিজিবির হাতে আটক হলেও এক্ষেত্রে পুলিশ থাকওেছ প্রায় নিষ্ক্রীয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারত থেকে ফেন্সিডিলের চালান আনার পথে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বেনাপোলের দক্ষীন কাগজপুকুর গ্রামের বাবু কলুর ছেলে তাজিম ও তার সহযোগি মাদক ব্যবসায়ি রাবেয়া খাতুনকে দৌলতপুর গ্রাম থেকে বিজিবি সদস্যরা আটক করে পুলিশে দেয়। আটকের মাত্র এক মাসের মধ্যে তাজিম জামিনে ফিরে আবার মাদকের সিন্ডিকেট পরিচালনা করছে। অভিযোগ রয়েছে তার কাছ থেকে এক শ্রেনীর আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা মাসিক মাশোহারা পাওয়ায় সে এলাকায় দাপটের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এছাড়া বেনাপোলের ভবাবেড় গ্রামের সোহেল ও আফরোজা, খড়িডাঙ্গা গ্রামের নুরুদ্দিন, গাতিপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেন রানা ও আনোয়ারা খাতুন, আমড়াখালীর আলাউদ্দিন, পুটখালীর দেলোয়ার হোসেন, বড় আঁচড়া গ্রামের ফারুক আলী ও রবি হোসেন। এসব মাদক ব্যবসায়িদের অনেকে জামিনে বাড়িতে ফিরে প্রকাশ্য মাদক পাচারে লিপ্ত রয়েছে।

বেনাপোল সীমান্ত মাদক চোরাচালান ব্যবসায়িরা অতিদ্রæত বাড়ি ফিরে আসা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে পোর্ট থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল লাতিফ বলে, মাদক ব্যবসায়িরা জামিনে ফিরে আসা এটা বিজ্ঞ আদালতের ব্যাপার। তবে যারা ফিরে আসছে তাদের ওপর আমাদের নজরদারি রয়েছে।

উল্লেখ্য গত কয়েকদিনে শুধু বেনাপোলের পুটখালী সীমান্ত থেকে বিজিবি সদস্যরা প্রায় ৩ হাজার বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে। এসময় ইয়াবা, গাজা সহ অন্যান্য ভারতীয় পন্য জব্দ করেছে ।

ধামরাইয়ে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় ছাএীর আত্নহত্যা।

ঢাকার ধামরাইয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় ফারজানা আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

পুলিশ নিহতের মরদেহটি উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে।সোমবার (৬মে) বিকেলে ৫ ঘটিকায় নিজ বাড়িতে এ আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটে।ফারজানা আক্তার ধামরাইয়ের চাপিল এলাকার ফারুক হোসেনর মেয়ে। ফারজানা আক্তার শৈলান সুরমা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।

এব্যাপারে ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) আব্দুল লতিফ জানান, গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ওই ছাত্রী গণিত বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। পরবর্তীতে সে এবছর ওই এক বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়। আজ দুপুরে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলে সে আবারও গণিত বিষয়ে অকৃতকার্য হয়।

আর এতে লজ্জায় ওই শিক্ষার্থী নিজ ঘরের মধ্যে গলায় ফাঁস লাগালে স্বজনেরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। পরে খবর পেয়ে ধামরাই থানা পুলিশ হাসপাতাল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে এবং নিহতের স্বজনদের কোন অভিযোগ না থাকায় মরদেহটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে।

বন্ধুর বাবার বিয়ে ঠেকাতে গিয়ে পিটুনীর শিকার ৬ জাবি শিক্ষার্থী

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বন্ধুর বাবার বিয়ে ঠেকাতে এসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ শিক্ষার্থী স্থানীয়দের হাতে প্রহৃত হয়েছেন। পরে তাড়াশ থানা পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে।

পুলিশ হেফাজতে থাকা শিক্ষার্থীরা হলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ ৪২ তম ব্যাচের রকিবুল হাসান, নাট্যতত্ব বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফ মেহেদী, রিশা আইরিন, রেদোয়ান মাহফুজ, ক্যামেলিয়া চুঁড়া ও দিপংকর বড়ুয়া।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের সবুজতারা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদের (৭০) মেয়ে রিশা আইরিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যতত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী। কয়েকদিন আগে তিনি ছুটিতে বাড়ি আসেন। এ সময় তার বাবা আব্দুস সামাদ দ্বিতীয় বিয়ের জন্য প্রস্তুতি শুরু করলে রিশা বিষয়টি টের পেয়ে তার পাঁচ বন্ধুর কাছে সাহায্য চান।

এর প্রেক্ষিতে রবিবার সন্ধায় বন্ধুরা তাড়াশে এসে রাতে রিশার বাবার সাথে বিয়ে প্রসঙ্গ নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। এসময় উত্তেজিত হয়ে রিশার বাবা স্থানীয়দের ডেকে এনে রিশাসহ তার বন্ধুদের পিটুনী দেন। খবর পেয়ে তাড়াশ থানা পুলিশ রাত ২টার দিকে রিশাসহ ৬জনকে থানায় নিয়ে আসে।

এদিকে, ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সোমবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ প্রশাসন খোঁজ-খবর নেয়া শুরু করলে বিপাকে পড়ে পুলিশ।
সোমবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রিশার বাবা সামাদসহ স্থানীয় লোকজন তাড়াশ থানায় পুলিশের সাথে দফায় দফায় আলোচনা করছেন বলে লক্ষ্য করা গেছে।

ঘটনা প্রসঙ্গে রিশার বাবা আব্দুস সামাদ বলেন, “আমার স্ত্রী নাজমুননাহার (৬০) পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ শয্যাশায়ী রয়েছেন। তাকে আমি নিজেই দেখাশোনা করছি। কিন্তু বর্তমানে আমি নিরুপায় হয়ে দ্বিতীয় বিয়ের চিন্তাভাবনা করি। বিষয়টি আমার মেয়ে জানতে পেরে তার বন্ধুদের ডেকে এনে আমাকে লাঞ্ছিত করে”।

এ বিষয়ে তাড়াশ থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, “আহত শিক্ষার্থীদের স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেবার প্রক্রিয়া চলছে”।

সর্বশেষ আপডেট...