তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলার কলমা ইউনিয়নকে ক্ষমতাসীন আ”লীগ দুভাগে বিভক্ত করে কমিটি ঘোষনা করেছেন।
মঙ্গলবার ইউপির দরগাডাংগা স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে ত্রি বার্ষিক সম্মেলন শেষে এমন ঘোষনা দেয়া হয়। এনিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন ও সামাজিক যোগাযোগে নতুন করে ঝড় উঠেছে। এমনকি শুধু আ”লীগ কেন যুবলীগ, সৈনিক লীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ ও মহিলালীগ বিভক্ত করলে ভাল হত এমন প্রশ্ন তৃনমূলের।
কারন কর্মীর চেয়ে নেতা অনেক এটা কলমা ইউপির সম্মেলন তার বড় প্রমান। আবার ২০১১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত টানা ৮ বছর ও ২০১৯ সালের মার্চ মাস থেকে অদ্যবদি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন যুবলীগ সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না। তিনি ২০০১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত উপজেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। সে গত ৮ জুলাই গত শনিবার উপজেলা সৈনিক লীগের পরিচিতি সভায় হঠ্যাৎ অসুস্থ হয়ে প্রথমে উপজেলা পরে রামেকে, সেখান থেকে গত মঙ্গলবার তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়ার রাতে তার হার্ডে রিং পরানো হয়। এদিকে কলমা ইউপির সম্মেলনের ব্যানারে ময়নার নাম না থাকা ও তার জন্য কোন দোয়া না করার কারনে আ”লীগ, যুবলীগসহ তৃনমুলে ছড়িয়ে পড়েছে চরম ক্ষোভ, সেই সাথে বর্তমান সভাপতি সম্পাদক এবং সম্মেলন আয়োজক কমিটিকে ধীক্কার দেয়া শুরু করেছেন। যা সোসাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে।
জানা গেছে, গত বছরের জুলাই মাসে উপজেলা আ”লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বিদ্রোহীরর তকমা লাগিয়ে গোলাম রাব্বানী ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে বাদ দিয়ে
সভাপতি হিসেবে মাইনুল ইসলাম স্বপন ও সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রদীপ সরকারের নাম ঘোষনা করা হয়। তারা এক বছরেও পূর্নাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করতে পারেননি।
গত মঙ্গলবার ১১ জুলাই কলমা ইউপির দরগাডাংগা স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ত্রি বার্ষিক সম্মেলন ।
কলমা ইউপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন এমপি ফারুক চৌধূরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আ”লীগের সভাপতি, সম্পাদকসহ নেত্রী বৃন্দু। কলমা ইউপিকে দলীয় গঠনতন্ত্র লঙ্গন করে দু জন সভাপতি ও দুজন সম্পাদক করা হয়।
অথচ কেন্দ্র থেকে সাব জানিয়ে দেয়া হয়েছে জাতীয় নির্বাচনের আগে কোন সম্মেলন করা যাবে না। কারন তৃনমূল আ”লীগে যে দ্বন্দ্ব বা বিভক্ত রয়েছে সেটাকে এককাতারে আনতে হবে। কিন্তু তানোর আ”লীগ চলছে উল্টোপথে।
এদিকে সকাল থেকে স্কুল মাঠে সম্মেলনের আয়োজন করার জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
তবে দরগাডাংগা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যাক্ষ বকুল হোসেন বলেন, সম্মেলনের জন্য দুপুরের পরে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। আপনি সকাল থেকে বন্ধ রেখেছিলেন জানতে চাইলে তিনি জানান, দুপুরের পর থেকে বন্ধ ছিল। আপনি কি দুপুরের পর থেকে বন্ধ রাখতে পারেন প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন এমপি সাহেব আসবে প্রতিষ্ঠানের প্রধান ইচ্ছে করলে বন্ধ রাখতে পারেন বলে দাম্ভিকতা দেখান তিনি।
সম্মেলনের দায়িত্বে থাকা কলমা ইউপির সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি তানভীর রেজা জানান, সম্মেলন সফল করার জন্য একাধিক সভা ও গাড়ী ভাড়ার টাকাসহ সব খরচ আমাকে বহন করতে হয়েছে। এভাবে একক দায়িত্ব সব বহন করা কষ্টকর।
উপজেলা আ”লীগের সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রদীপ সরকার বলেন, দুই কমিটির অনুমোদন হবে না, এসব নিয়ে আমাকে বিব্রত না করায় ভাল।
এক ইউপিতে দুই কমিটি দেয়া যায় কিনা জানতে চাইলে উপজেলা আ”লীগের সভাপতি মাইনুল ইসলাম স্বপন জানান, এমপি চাইলে দুভাগে কেন চার ভাগে ভাগ করতে পারেন। দুভাগে ভাগ করতে হলে জেলা কেন্দ্র থেকে অনুমতি লাগে সেটা নিয়েছেন কি প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন সেটা এমপি ভালো বলতে পারবেন। বিগত এক বছরে উপজেলার পূর্নাঙ্গ কমিটি প্রকাশ না করে সম্মেলন করা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান,পূর্নাঙ্গ কমিটি হয়েছে তোমাদেরকে দাওয়াত দিয়ে প্রকাশ করা হবে বলে দায় সারেন তিনি।
জেলা আ”লীগের সাধারন সম্পাদক সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারাকে ইউনিয়ন বিভক্ত করে কমিটি দেয়া যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান তানোর নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারব না।
জেলা আ”লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, তাদের সম্মেলন করার কোন ক্ষমতা নেই, কারন এক বছরে তারা পূর্নাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি। এক ইউনিয়নে দুই কমিটি দেয়া যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এসব সাংগঠনিক দূর্বলতা, কোন ইউপি বা উপজেলাকে বিভক্ত করতে হলে ইউপি কমিটি লিখিত ভাবে উপজেলা কমিটিকে দিবে, উপজেলা কমিটি জেলা কমিটিকে দিবে, জেলা কমিটি যদি মনে করেন বিভক্তের প্রয়োজন তাহলে সেটা কেন্দ্র অনুমোদনের পর বিভক্ত করতে পারবে। তারা বলছে সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়াতে বিভক্ত করা হয়েছে জানতে চাইলে আসাদ জানান, ইউনিয়ন থেকে উপজেলা অনেক বড়, উপজেলার চেয়ে জেলা আরো বড় তাহলে এসব বিভক্ত হয় না কেন।
রাজশাহীর সাংগঠনিক দায়িত্ব প্রাপ্ত এসএম কামাল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনিও বলেন আমি কোন মন্তব্য করতে পারব না।
এমপি ফারুক চৌধূরীর মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রাসিক মেয়র এএইচএম খাইরুজ্জামান লিটনকে কলমা ইউনিয়ন বিভক্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমপি চাইলে দুভাগে কেন দশ ভাগে ভাগ করতে পারবেন।