ধামরাইয়ে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, বিচার না পেয়ে বিধবার আত্মহত্যা।

Loading

মোঃ সম্রাট আলাউদ্দিন ,ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধিঃ ঢাকার ধামরাই উপজেলার রৌহাটেক এলাকায় ধর্ষণের বিচার না পেয়ে তিন সন্তানের জননী বিধবা শামেলা বেগম বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেলে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠেছে রৌহারটেক জামে মসজিদের ইমাম আশরাফুল ইসলাম ওই বিধবা নারীকে বিয়ে প্রলোভনে গত এক বছর ধর্ষণ করে আসছিল।

এঘটনায় এলাকার মাতাব্বরা ধর্ষক ইমমাকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। ধর্ষক মসজিদের ইমামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। নিহত বিধবা নারীর বাড়ি সূয়াপুর ইউনিয়নের রৌহারটেক গ্রামে সে মৃত কালা চাঁন মিয়ার স্ত্রী।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে,রৌহারটেক গ্রামের তিন সন্তানের জননী বিধবা শামেলা বেগমকে (৩৫) বিয়ের প্রলোভনের গত এক বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছে ওই গ্রামের মসজিদের ইমাম আশরাফুল ইসলাম (৩৮)। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পরলে বিধবা ওই নারী গত বুধবার দুপুরে মসজিদের ভিতরে যেয়ে এলাকার মুসল্লিদের উপস্থিতিতে তাকে বিয়ে করতে বলে ইমামকে। ইমাম তাকে সবার সামনে মারধর করে মসজিদ থেকে বের করে দেয়। পরে ওই নারী সূয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের গিয়ে চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান সোরহাবের কাছে ধর্ষণের বিচার চাই।

চেয়ারম্যান তাকে থানায় গিয়ে অভিযোগ দিতে বলে। এঘটনায় বুধবার রাতেই এলাকার মাতাব্বরা মসজিদের মাঠে শ্যালিসে বসে। উক্ত শ্যালিসে মসজিদ কমিটি ধর্ষক ইমাম আশরাফুল ইসলামকে থানায় দেওয়ার জন্য সূয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার রহিম মিয়ার কাছে হস্তান্তর করে। ধর্ষকের কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ খেয়ে মসজিদ কমিটির সাধারন সম্পাদক জাহিদ হোসেন,দলিল লেখক শরীফ হোসেন,মাতাব্বর ইউসুফ আলী,পাগলা মিয়াসহ কয়েকজন মাতাব্বরা দফাদার কাছ থেকে ধর্ষক ইমামকে ছিনিয়ে নিয়ে তাকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে।

ধর্ষক ইমাম পালিয়ে গেছে এখবর শুনার পর আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বিধবা শামেলা বেগম তার ঘরের দরজা লাগিয়ে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে। এলাকার ওই মাতাব্বরা পুলিশকে না জানিয়ে গোপনে লাশ দাফনের তরগরি করে। এমন সংবাদ জানতে পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা শহীদ সোর্য়াদী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।রৌহাটেক জামে মসজিদের ইমাম আশরাফুল ইসলাম ও স্থানীয় মাতাবরা পলাতক রয়েছে।

স্থানীয় সেলিম হোসেন বলেন,মাতাব্বরা ইমাকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে। সূয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার রহিম মিয়া বলেন,মাতাব্বরা যদি সঠিক বিচার করতো তাহলে বিধবা মহিলা আত্মহত্যা করত না। মাতাব্বরা আমার কাছ থেকে ইমামকে নিয়ে তাকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে।

সূয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান সোরহাব বলেন,বুধবার বিকেলে রৌহারটেক থেকে এক বিধবা মহিলা আমার কাছে অভিযোগ দেয়,বিয়ে প্রলোভনে মসজিদের ইমাম আশরাফুল ইসলাম তাকে ধর্ষণ করেছে। আমি তাকে থানায় গিয়ে অভিযোগ দিতে বলেছিলাম।ধামরাই থানার এস আই নুরমোহাম্মদ বলেন,লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত পর বুঝা যাবে আসল ঘটনা কি।