রোগীদের লুকোচুরিতে একের পর এক বন্ধ হচ্ছে হাসপাতাল

Loading

করেনার তথ্য গোপন রেখে চিকিৎসা নেয়ায় একের পর এক বন্ধ হচ্ছে বিভিন্ন হাসপাতালের বিভাগ। শুধু বিদেশ ফেরা নয়, করোনা আক্রান্তের খবর পর্যন্ত গোপন করে প্রতিদিন অসংখ্য চিকিৎসককে আক্রান্ত করছেন রোগীরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোগীদের বাস্তবতা বোঝানোর পাশাপাশি সেবা দানে চিকিৎসকদের আরও সতর্ক করা না গেলে কোভিড মোকাবিলায় চরম বিপদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

এক্ষেত্রে সব হাসপাতালে পিপিই সরবরাহের পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের জন্য শিগগিরই আলাদা কর্ণার খোলার দাবি চিকিৎসকদের।

সারাদেশে আক্রান্ত হওয়া চিকিৎসকদের ৯০ শতাংশই সাধারণ হাসপাতালের। এসব হাসপাতালে আগের নিয়মে সেবা অব্যাহত থাকায় আক্রান্তের হার বাড়ছেই। ডেল্টা, আনোয়ার খান মডার্ন, ইনসাফ বারাকা হাসপাতালের মতো সাময়িক সেবা বন্ধের তালিকায় প্রতিনিয়তই যোগ হচ্ছে নতুন নতুন নাম।

সম্প্রতি ইব্রাহিক কার্ডিয়াক হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত একজন রোগী তথ্যগোপন করে চিকিৎসা নিতে আসেন। মুমূর্ষু অবস্থায় লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া রোগীর পরীক্ষা করতে চাইলে পরিবার তার কোভিড উনিশে আক্রান্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেন। এরপরই বন্ধ করে দেয়া হয় সিসিইউ, কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয় ২০ জন চিকিৎসককে।

ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের ভাসকুলার সার্জন ডা. সাকলায়েন রাসেল জানান, স্বাভাবিকভাবে তারা মনের করছেন তারা লাভবান হচ্ছেন কিন্তু তা হচ্ছেন না। এক তারা পর্যায়ে শনাক্ত হচ্ছেন। এতে বিপদে পড়ছেন চিকিৎসক এবং হাসপাতাল।

অন্যদিকে তথ্য গোপনসহ না জেনে চিকিৎসা নিতে এসে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৫টি বিভাগের বেশ কয়েকটি ইউনিটের সেবা বিঘ্নিত হয়। কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে থাকা প্রায় অর্ধশতাধিক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা করার কথা জানান ডিএমসি কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ জানান, শ্বাস কষ্ট হচ্ছে সেটা না বলে রোগীরা বলছেন পেটে ব্যথা হচ্ছে। এই রোগীদের শ্বাস কষ্ট হচ্ছে এবং এদের বাঁচানো যাচ্ছে না। এই অবস্থা যদি এখানে হয় তাহলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হাসপাতালগুলোতে আরও ভয়ানক অবস্থা।

তথ্য গোপনের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করে সরকারকে সবার সেবা নিশ্চিত করার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রিদউয়ানউর রহমান জানান, রোগীদের অনরোধ করব আপনারা সঠিক তথ্য চিকিৎসকদের দিন। না দিলে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, হাসপাতাল বিপদে পড়বে।

রোগীদের তথ্যগোপন ও অসচেতনতায় কোভিড যুদ্ধে ক্রমাগতভাবে রসদ কমছে বাংলাদেশের। সামাজিক সংক্রমণের চতুর্থ ধাপে তাই যে কোনো রোগীকে সেবা দানের পূর্বে পিপিই পরার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের।