সিংগাইরে বিভিন্ন সড়কের দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ১০ চাকার ডাম্প ট্রাক

Loading

স্টাফ রিপোর্টার: মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় অর্ধশতাধিক ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটার মালিক ও বালু ব্যবসায়ীরা কয়লা, মাটি ও বালু বহনের কাজে ব্যবহার করছেন ডাম্প ট্রাক। মাত্রাতিরিক্ত লোড নিয়ে দিনে-রাতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ১০ চাকার এসব ডাম্প ট্রাক।

এতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে সড়কের। আঞ্চলিক মহাসড়ক ও গ্রামীণ সড়কে ডাম্প ট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানছেন না কেউ। ডাম্প ট্রাক চলাচল নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক, সিংগাইর-বায়রা সড়ক , বাস্তা-মানিকনগর সড়ক, মানিকনগর-সিরাজপুর সড়ক, গোবিন্দল-চারিগ্রাম সড়ক ও ঋষিপাড়া-বলধারা সড়কে অবাধে চলছে ১০ চাকার ডাম্প ট্রাক। এতে আঞ্চলিক মহাসড়ক ও গ্রামীণ সড়কগুলোর বিভিন্ন জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের । ভাঙন ও দেখা দিয়েছে অনেক গ্রামীণ সড়কে।

বাস্তা মানিকনগর সড়কের শাখা সড়ক বঙ্গবন্ধু মোড় থেকে ডাওটিয়া বাজারে যাওয়ার মাঝে দেয়া হয়েছে বালি বিক্রির গদি। এতে করে রাস্তা সহ ধুলাবালির কারণে নানাবিধ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এলাকাবাসী ‌। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী থেকে একজন বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে সেন্টুর দাপটে রিপন ও তানভীর এই বালির ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। দিন ও রাতে ১০ চাকার ড্রামস্ট্রাকসহ ছোট-বড় গাড়ি চলাচল করছে অবাধে । যদি বাধা প্রদান করা হয় তবে আমাদের নানান ভয় ভীতি দেখান তারা। তাদের কারণে সরকারের করা আমাদের এই রাস্তাটি আজ ধ্বংসের মুখে ‌। তাই এমন স্থানে বালির ব্যবসা যেতে না করতে পারেন, সেজন্য সরকারের ও আইন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী । এ ছাড়া সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানের সাথে সূত্রে আরো জানা যায়, উপজেলার জামির্ত্তা-হাতনি এলাকায় মালেক, আয়নাল, সাইফুল, দানেজ, খোকন, সাহানুর, ইয়াসিন, রউফ, সুলতান, বাচ্চু ও রাশেদ ডাম্প ট্রাক দিয়ে মাটি ও বালু পরিবহনের ব্যবসা করছেন। এ ছাড়া বলধারায় কুদ্দুস কোম্পানী ও নুরু কোম্পানীর মালিকানাধীন ইটভাটা গুলোতে ও মাটি এবং কয়লা বহনে ডাম্প ট্রাক ব্যবহার করা হচ্ছে।

ডাম্প ট্রাকের চালক মো. নান্নু বলেন, ‘বিনোদপুর থেকে বালু ভরে আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে মানিকগঞ্জের অরঙ্গবাদ যাচ্ছি। এই সড়কে ডাম্প ট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে আমার জানা নেই। মালিক আমাদের যে সড়কে গাড়ি চালাতে বলবেন আমরা সেই রাস্তায় চালাব।’

ওভারলোড করে বালু পরিবহন করায় রাস্তার ওপরে বালু পড়ে। রাস্তার পাশের বাড়িঘরে চলে যায় সেই বালু। প্রতিবাদ করেও বন্ধ করা যাচ্ছে না ডাম্প ট্রাকের চলাচল। এ বিষয়ে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘মাঝেমধ্যেই অভিযান চালিয়ে ডাম্প ট্রাক গুলোকে আটক করা হয়। পরে সিংগাইরের আঞ্চলিক সড়কগুলোতে ১০ চাকার ডাম্প ট্রাক না চালানোর শর্ত দিয়ে মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন, সে ক্ষেত্রে সিংগাইর পুলিশ সহায়তা করবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিপন দেবনাথ বলেন, ‘সিংগাইর আঞ্চলিক মহাসড়ক ও গ্রামীণ সড়কগুলোতে ১০ চাকার ডাম্প ট্রাক চলাচলের বিষয়টি শুনেছি। যত দ্রুত সম্ভব এসব যানের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।’